অনেক জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনার পর দেশটির একজন প্রধান বিচারপতিকে নির্বাচনের আগেকার অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছে পাকিস্তান। আর দু’ দিন বাদে ৩১ মে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসীর পদত্যাগের পর সাবেক বিচারপতি নাসিরুল মুল্ক সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
আগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হলে দেশটি দ্বিতীয়বারের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার বদলের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।
এই ঘোষণা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী খাকান আব্বাসী বলেন, “আজকের দিনটি পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই নামটি বাছাই করা হয়েছে। এবং আমরা এমন একজনকে বেছে নিয়েছি যার অতীত অত্যন্ত পরিষ্কার।”
বিরোধীদলীয় নেতা খুরশীদ শাহ বলেন, “মুল্ক প্রায় এক দশকের মতো সময় বিচার বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং বিশেষ করে ২০১৪-২০১৫ সালের রাজনৈতিক ডামাডোলে তিনি পেছন থেকে সক্রিয় ছিলেন।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির অপসারণের ঘটনায় নাসিরুল মুল্ক সরকারকে সহায়তা করেছিলেন বলে কথিত রয়েছে।প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের জন্য সুইস ব্যাংকের অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার আবেদন না করে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হন গিলানি।
পাকিস্তানে সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই বিচারকের নাম তেমন আলোচনায় আসেনি। বেশ কিছুদিন যাবৎ পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোতে সম্ভাব্য অনেকের নাম শোনা গেলেও সাবেক এই বিচারপতির নাম কেউ বলেনি।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে নাটকীয় উত্থান পতনের ঘটনা যেন রওয়া সওয়া হয়ে গেছে। সর্বশেষ গত বছরের জুলাইতে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীত্ব তো হারালেনই সুপ্রিম কোর্ট তাকে আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করেছে।
নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের ১৫তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এবং যাদের প্রত্যেকেই তার মেয়াদকাল পূর্ণ করার আগেই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
২০১৩ সালের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) বিপুল ভোটে জয়ের মধ্য দিয়ে সাত দশকের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে।
আসন্ন নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের দল ও পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিএমএল-এন এর বিরুদ্ধে আদালতের বহুবিধ আদেশ-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বেশকিছু নির্বাচনে ভাল ফলাফলের মধ্য দিয়ে দলটি বিপুল জনসমর্থনের প্রমাণ রেখেছে।