জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও কুমিল্লার দুই নাশকতার মামলায় জামিন মঞ্জুর হলেও মুক্তি পাচ্ছেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এতে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, আর কয়টি মামলায় জামিন পেলে ছাড়া পাবেন খালেদা জিয়া? ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো তিন মামলায় জামিন মঞ্জুর হয়েছে।
আজ সোমবার উচ্চ-আদালত খালেদা জিয়াকে নাশকতার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও বাসে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার দুই মামলায় ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে। কিন্তু তারপরও খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কুমিল্লার দুই মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। এখন তিনি তিনটা মামলায় জামিন পাওয়ায় তার কারামুক্তিতে আইনগত কোন বাধা নেই। তিনি আরও বলেন, সরকার যদি অসৎ উদ্দেশ্যে অন্য কোন মামলায় গ্রেফতার না দেখায়, তবে তার কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিনের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ফলে মুক্তি পাওয়া অনিশ্চিত। কবে মুক্তি পাবেন তাও এখন বলা যাচ্ছেনা। এমনকি অনেকে মনে করেন, আগামী নির্বাচনের আগে খালেদার কারামুক্তি আইনি জালে আটকে থাকবে। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে খালেদার মুক্তির বিষয়টি শুধু আইন-আদালত বা বিচার প্রক্রিয়ার অন্তর্গত না হয়ে, হয়ে উঠেছে পুরোপুরি রাজনৈতিক বিষয়।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট মামলা রয়েছে ৩৭টি এর মধ্যে ২১ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি। জানুয়ারিতে এক প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে বকশীবজার বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার ১৪টি মামলা স্থানান্তর করা হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এই বিশেষ আদালতেই খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু ১৬মে এ মামলায় তার জামিনের আদেশ হয়। কিন্তু তখনো কুমিল্লার দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হওয়ায় তিনি মুক্তি পান নি।
অন্যদিকে ঢাকার মানহানি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় জামিনের জন্য আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এবং কুমিল্লার বাকি আরেকটি মামলার জামিনের জন্যও আজ আবেদন করা হয়েছে। ‘মামলা উত্থাপিত হয়নি’ এই মর্মে খারিজ করা হয়েছে নড়াইলের মানহানির মামলাটি। এখন নিম্ন আদালতের আদেশ নিয়ে ফের এই মামলাটিতে উচ্চ-আদালতে আনতে হবে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা অধিকাংশ মামলাই হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুড়িয়া দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, অবৈধ সম্পদসংক্রান্ত মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, মানহানির মামলা, বিস্ফোরক, হত্যা ও নাশকতার মামলা অন্যতম।