সময় এসেছে বিবিসিকে ভাঙ্গার!
রোনালদো নিজের জন্যই খেলে!
সারাবছর হাসপাতালে থাকা বেলকে দরকারটা কী?
প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত বিশ্বের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ ‘বেল-বেনজেমা-ক্রিশ্চিয়ানো’ ত্রয়ী। মাঝেমধ্যে ভক্তরা ভুলে যায় ডাগআউটে জিদান নামের একজনের অস্তিত্বের কথা। মাঝেমধ্যে ভক্তরা এমনকি ভয়ংকর বিবিসির রুদ্রমূর্তি চেহারাও ভুলে যায়। ওস্তাদের মাইর শেষ রাতে, ওরা লিভারপুলের বাড়া ভাতে ছাঁই দিয়ে প্রমাণ দিল প্রবাদের। বেল, বেন্জেমা ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, কাজটা যেন ভাগ করে নিলেন তিন সই! পুরো টুর্নামেন্টে ফ্লপ বেন্জেমা, ৬ ম্যাচ খেলে ৩ গোল মোটে। ততক্ষণে রোনালদোর গোলসংখ্যা ১৫! সেমির দুই লেগেই গোলহীন পর্তুগিজ যুবরাজ, ফাইনালে পুরো বোতলবন্দী। শেষ চারে আর ফাইনালে বেঞ্জুর গোল ৮ ম্যাচে ৫টি। রোনালদোর গোল ছাড়াও মাদ্রিদ টিকে গেল, মুঠোবন্দী করল টানা তিনে তিন। গ্যারেথ বেল গত দুই সিজন ধরে হাসপাতালের বেডেই কাটিয়েছেন, ওখানেই বেঁধেছেন ঘর। মাঝেমধ্যে মাঠে নামেন। একটু আধটু ঝলক দিয়ে আবার উধাও।
আজ ইউক্রেনের কিয়েভ অ্যারেনার ফাইনালে উধাও হননি, করেছেন! লিভারপুলের স্বপ্ন! ধূলিস্যাৎ, ৬১ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমে কালক্ষেপণ করেননি ধাতস্ত হতে। ৬৪ মিনিটে মার্সেলোর ক্রসে অনিন্দ্যসুন্দর বাইসাইকেল কিকে লিড এনে দিয়েছেন লস মেরেঙ্গুয়েজদের। ২০০২ সালে গ্যালাক্টিকো যুগের শেষ ফাইনালে জিদানের ভলির পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে নিঃসন্দেহে সেরা গোল ওয়েলস উইজার্ডের। ৮৩ মিনিটে লিভারপুল গোলরক্ষক ক্যারিয়োসের হাস্যকর ভুলের চেয়ে কোন অংশে কৃতিত্ব কম নয় বেলের করা দূরপাল্লার টার্নিং শটের। চোখের জলে ম্যাচের প্রথমার্ধে মাঠ ছেড়েছেন মোহাম্মদ সালাহ, ৯০ মিনিটজুড়ে সুপার ফ্লপ রোনালদো। শেষ আধঘন্টায় কিয়েভের অবশিষ্ট আলোটুকুও নিজের দিকে টেনেছেন ম্যাচসেরা বেল।
হারাধনের বাকি থাকে একটি ছেলে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। অলরেড বস ক্লপের দুরন্ত ট্যাকটিক্স আর লিভারপুল ডিফেন্সের চমৎকার মার্কিংয়ে সিআরসেভেন নিষ্প্রভ। ফাইনালের আগেই কাজ সেরেছেন। নকআউটে একের পর এক রেকর্ডে ভয় কাটিয়ে নির্ভার দলটাকে ফাইনাল পর্যন্ত আনতে তার অবদান মাত্র ১৫ গোল, যাতে ছিল টানা দশ ম্যাচে লক্ষ্যভেদ! কিয়েভে একেবারেই নিস্তেজ ছিলেন তা নয়। প্রথমার্ধে অল্পের জন্য গোল পাননি। বল চলে যায় বারের সামান্য উপর দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধেও বেশকিছু ফুল চান্সই পেয়েছিলেন, রাতটি যে তার ছিল না। নইলে ৯৩ মিনিটে নিশ্চিত হতে যাওয়া গোল থামবে কেন মাঠে ঢুকে যাওয়া অনাহূত ভক্তের বাগড়ায়!
নানা মুনি’র নানা মত। বেলাশেষে সবাই এক জায়গায় এসে একমত। ‘বিবিসি’ মানে ‘বিবিসি’। বেস্ট নেভার রেস্ট!