সালমানের কিছু বিতর্কিত অধ্যায়

সালমানের কিছু বিতর্কিত অধ্যায়

বলিউডের বিরাট একটি অংশজুড়ে আছেন তিন খান। তারা হলেন শাহরুখ খান, সালমান খান ও আমির খান। তাদের ছবি মানেই বক্স অফিসে রেকর্ড আর বিশাল অঙ্কের মুনাফা। এছাড়া রয়েছে আলোচনা-সমালোচনা বা তর্ক-বিতর্ক। অন্যদিক দিয়ে শাহরুখ ও আমিরের থেকে খানিক পিছিয়ে থাকলেও বিতর্কের তালিকায় সব সময়ই এগিয়ে থাকেন সালমান খান। তাকে নিয়ে বিতর্কের শুরু ১৯৯৮ সালে জোধপুর আদালতে মেয়াদ উত্তীর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধে। এরপর থেকেই বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ ৫ এপ্রিল তাকে মুম্বাই উচ্চ আদালত পাঁচ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেন। সালমান খানের জীবনের কিছু বিতর্কিত অধ্যায় তুলে ধরা হলো–

মামলা ও জেল

১৯৯৮ সালে সালমানের নামে ৪টি মামলা করা হয় ব্ল্যাকবাক ও চিনকারা হরিণ শিকারের অপরাধে। ‘হাম সাথ সাথ হে’ সিনেমার শুটিং চলাকালে বিরতি নিয়ে সাইফ আলি খান ও সালমান খান জোধপুরের কানকানি গ্রামে যান শিকারে। তখন সালমান খান বিলুপ্তপ্রায় ব্ল্যাকবাক ও চিনকারা হরিণ শিকার করেন। এ জন্য ২৬ ও ২৮ সেপ্টেম্বরে দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে তিনি দুই দফা কারাগারেও ছিলেন ওই অপরাধে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিলে তাকে আবারু কারাগারে নেয়া হয় ২০ বছর আগের ওই অপরাধে। অবশ্য দু’দিনের মাথায় জামিন নিয়ে বের হয়ে আসেন তিনি।

ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে প্রেম

ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে সালমানের অদম্য প্রেমের গল্প বলিউডে চাউর ছিল অনেক দিন। সালমান খান ২০০১ সালের নভেম্বরের এক রাত ৩টা পর্যন্ত ঐশ্বরিয়ার দরজায় নক করতে থাকে যতক্ষণ না ঐশ্বরিয়া দরজা খোলেন।

গাড়িচাপায় একজন নিহত

২০০২ সাল। তিনি তখনো হরিণ শিকারের মামলা থেকে অব্যাহতি পাননি। এ অবস্থাতেই তার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে একজন নিহত হন। তার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতের একটি বেকারিতে ঢুকে পড়ে। এতে একজন নিহত ছাড়াও ৪ জন গুরুতর আহত হন। ২০১৫ সালে নভেম্বরে মুম্বাইয়ের নিম্ন আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাগারে পাঠান। কিন্তু পরের মাসেই মুম্বাইয়ের উচ্চ আদালত তাকে বেকসুর খালাস করে দেন।

বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্ব

এবারও কারণ ঐশ্বরিয়া রায়; ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ ওবেরয় অভিযোগ করেন সালমান খান হুমকি দিয়েছেন। তখন ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে বিবেকের প্রেম চলছিল। এ খবর চাউর হলে বিবেক ওবেরয়কে বার্তা পাঠিয়ে হুমকি দেন সালমান খান।

শাহরুখ খানের কটূক্তি

২০০৮ সালে ক্যাটরিনা কাইফের জন্মদিনে সালমানকে উদ্দেশ করে শাহরুখ খান কটূক্তি করেন। এতে সালমান ক্ষুব্ধ হন। প্রায় পাঁচ বছর তারা কথা বলেননি, এমনকি দেখা হলেও না দেখার ভান করেছেন। ২০১৩ সালে সালমানের বাবা সিদ্দিকির ইফতার মাহফিলে দু’জনের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কথা হয়। তবে তাদের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয় ২০১৪ সালে সালমানের বোন অর্পিতার বিয়েতে।

২৬/১১ নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য

২৬/১১-এ মুম্বাই হামলা ভারতের ইতিহাসের কালো অধ্যায়। হোটেল তাজে সন্ত্রাসী হামলার পর সালমান খান পাকিস্তানি একটি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কেউ এত মাতামাতি করেনি। কারণ এই হামলা পাঁচতারকা হোটেলে হয়েছে। এই হামলা এলিটদের টার্গেট করে করা হয়েছে’। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো তার ওই বক্তব্য ভালো ভাবে না নেয়ায় তিনি ক্ষমা চান।

ইয়াকুব মেননের সমর্থনে টুইট

১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে বোমা হামলা করা হয়। এ জন্য অপরাধী হিসেবে ইয়াকুব মেননকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় ২০১৫ সালে। এরপর সালমান খান এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘ইয়াকুব মেনন নয়, তার ভাই টাইগার মেননের ফাঁসি হওয়া উচিত’। ওই মন্তব্যে বিক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ভারতীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহল। ফলে ওই মন্তব্যের জন্যও ক্ষমা চান এবং টুইটটি মুছে ফেলেন তিনি।

শুটিংয়ে নিজেকে ধর্ষিতা মনে করা

সালমান খান ঠোঁটকাটা স্বভাবের। এ জন্য প্রায়ই বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। সবচেয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি তিনি করেন ২০১৬ সালে সুলতান সিনেমার প্রচারকালে। কঠিন শুটিংয়ের ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘প্রতিবার রিং ছেড়ে বের হওয়ার পর নিজেকে ধর্ষিতা নারীর মতো মনে হয়’। তার ওই মন্তব্য সবার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে নারীবাদীরা ক্ষেপে যান।

 

টাইমস অফ ইন্ডিয়া অবলম্বনে