বহুদিন ধরে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ পৃথিবীব্যাপী গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রনেন বার্গম্যান তার ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। মালয়েশিয়ায় ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী ফাদি আল বাৎস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বার্গম্যানের গবেষণার রেফারেন্স টেনে এই লেখাটি প্রকাশ করেছে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা। লিখেছেন সংবাদকর্মী আলি ইউনুস। লেখাটি জবানের পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন মোঃ আরিফুল ইসলাম।
পয়ত্রিশ বছর বয়েসী ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী ফাদি আল বাৎসকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে হত্যার ঘটনা ইসরায়েলের গোপন হত্যাকাণ্ডের কর্মসূচিকে আরেকবার আলোচনায় নিয়ে এসেছে। ইসরায়েল মূলত সেসব ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করে যাদেরকে তাদের কাজে বাঁধা মনে হয় এবং যারা বিভিন্নভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের জন্য অবদান রাখতে সচেষ্ট থাকে।
ফাদি আল বাৎস মূলত একজন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং তিনি গাজায় তার শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে মালয়েশিয়ায় একই বিষয়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রী নেওয়ার জন্য আসে। তিনি পাওয়ার সিস্টেম এবং এনার্জি সেভিং-এ বিশেষজ্ঞ এবং একই বিষয়ের উপর একাধিক বৈজ্ঞানিক পেপার প্রকাশ করেছিলেন।
হামাস এর তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এবং তার এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েল এর গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’কে দায়ী করেছে হামাস। তাকে একজন অনুগত কর্মী হিসেবে আখ্যা দিয়ে হামাস জানায় ফাদি ফিলিস্তিনি তরুণ স্কলার্সদের একজন, যিনি পাওয়ার সেক্টরের উপর আন্তর্জাতিক নানা ফোরামে অংশ নিয়ে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।
আল জাজিরাকে তার বাবা জানায়- তার ছেলের হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি মোসাদকেই সন্দেহ করছেন, এবং মালয়েশিয়ান কতৃপক্ষের নিকট দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এর জন্য আবেদন করেছেন। “Rise and kill first” বই এর লেখক, অনুসন্ধানী সাংবাদিক রনেন বার্গম্যান, যিনি আবার ইসরায়েল এর গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক বিশেষজ্ঞ। তার ভাষ্যমতে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে মোসাদের কাজের ধরনের সব উপাদান বিদ্যমান আছে। মোসাদের দিকে সরাসরি আঙুল প্রদর্শণ করে রনেন বার্গম্যান আল জাজিরা কে জানায় “দেখুন ব্যাপারটা হলো হত্যাকারী টার্গেটকে মারার জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছে, যেটা এর আগেও মোসাদ ইসরায়েলের বাইরে তাদের সফল অপারেশনগুলোতে অনুসরণ করেছে। যেটা থেকে মোসাদের সংশ্লিষ্টতা এখানে বেশ স্পষ্ট হয়। ফোনে আল জাজিরাকে এ তথ্য জানায় বার্গম্যান
লক্ষ্য সনাক্তকরণ
কাকে হত্যা করা হবে? এই টার্গেট নির্বাচন একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় মোসাদ, ইসরায়েলের বাইরের এবং ভেতরের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, তাদের গুপ্তচর এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও যুক্ত থাকে। টার্গেট নির্বাচন কখনো কখনো ইসরায়েলের আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা, মিলিটারি গোয়েন্দা সংস্থার মধ্য থেকেও হতে পারে। মোসাদ একাই সবকিছু করেনা।
উদাহরনস্বরূপ বলা যেতে পারে, ফাদিকে টার্গেট হিসেবে নির্বাচন করার নির্দেশনা ইসরায়েলের মিলিটারি ইনটেলিজেন্স-র শাখা প্রশাখা অথবা হামাসের উপর নজরদারি করা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এসেছে। অথবা আল বাৎস’কে সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে ইসরায়েল এর বাইরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের যে গুপ্তচর নেটওয়ার্ক এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জারি রয়েছে তাদের ভূমিকা থাকতে পারে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র আল জাজিরা’কে জানায় হামাসের সাথে গাজা, ইস্তাম্বুল, লেবানন এর মাঝে যে সম্পর্ক তার উপর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা সর্বদা কঠোর নজরদারি জারি রাখে। হতে পারে আল বাৎস’র সাথে এই চ্যানেলে কোন বিশেষ যোগাযোগের কারনে তিনি মোসাদ’র টার্গেট এ পরিণত হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক বন্ধু জানিয়েছে হামাসের সাথে তার সম্পর্ক সে কখনো গোপন করেনি। আরেকজন বন্ধু জানায় ফিলিস্তিনি কমিউনিটির কাছে হামাসের সাথে তার হৃদ্যতার জন্য সে বেশ পরিচিত ছিলো।
গুপ্তহত্যা প্রক্রিয়া
একবার টার্গেট নির্বাচিত হওয়ার পর মোসাদ তাদের গোয়েন্দা উইংগুলো এক্টিভেট করে। কিভাবে তাকে হত্যা করা হবে, তার হত্যার ফলে কি কি ফায়দা হতে পারে এবং কিভাবে মসৃণভাবে এই কাজ সম্পন্ন করা যাবে এইসব হিসেব-নিকেশ করে এই ইউনিট।
এই ইউনিট টার্গেট সম্পর্কে ফাইল তৈরি করে এবং পরে সেটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস কমিটির প্রধানদের নিকট পাঠানো হয়, যার নাম থেকে বুঝা যায় এই কমিটি ইসরায়েলের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের দ্বারা গঠিত। এই কমিটির নাম হলো VARASH অথবা VAADAN RASHEI HA SHERUTIM. এটি মূলত ভিন্ন ভিন্ন শব্দের আদ্যক্ষর দ্বারা গঠিত একটি শব্দ।
VARASH শুধুমাত্র অপারেশনটি নিয়ে আলোচনা করে এবং তাদের মতামত প্রদান করে। অপারেশন অ্যাপ্রুভ করার এক্তিয়ার তাদের থাকে না। শুধুমাত্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এইসব অপারেশন অনুমোদন করার ক্ষমতা রাখে।
বার্গম্যান জানান, সাধারণত রাজনৈতিক কারনে প্রধানমন্ত্রী একা এইটা অনুমোদন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেনা, এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো একজন বা দুইজন মন্ত্রীকে এর সাথে যুক্ত করেন। এবং অধিকাংশ সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে যুক্ত করতে দেখা গেছে । একবার প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে গেলে সেটি পুনরায় মোসাদ’র নিকট ফেরত আসে। এবং তারা পরবর্তী কার্য সম্পাদন করে। টার্গেট-র চালচলনের উপর নির্ভর করে এইসব কাজে কখনো সপ্তাহ, মাস বা বছর ও লেগে যায়।
Caesarea ইউনিট
এই ইউনিট মোসাদ এর সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করে। এরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যসহ আরবদেশগুলো এবং পুরো পৃথিবী জুড়ে গুপ্তরবৃত্তির নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকে।
১৯৭০ এর পূর্বভাগে ইসরায়েলের বিখ্যাত গুপ্তচর মাইক হারিরি এই ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেন। এই ইউনিট পুরো মধ্যপ্রাচ্য এবং আরবদেশগুলো জুড়ে তাদের বেশ বড় এবং শক্তিশালী গুপ্তচর নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে এবং টার্গেট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা বর্তমান এবং ভবিষ্যত সব ধরনের টার্গেট ও নির্বাচন করে। caesarea প্রতিষ্ঠার পর হারিরি তৈরি করেন সবচেয়ে ভয়ংকর ইউনিট, যেটি হিব্রু ভাষায় ‘কিংডন’ নামে পরিচিত। যার অর্থ বেয়নেট। কিংডন মূলত পেশাদার হত্যাকারীদের দ্বারা ঘটিত হয় যারা অন্তর্ঘাত এবং গুপ্তহত্যা এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলা যায়।
কিংডন’র সদস্য সংগ্রহ করা হয় ইসরায়েল আর্মির চৌকস অফিসারদের মধ্য থেকে। ফাদি হত্যার সাথেও এই কিংডন’র সদস্যরা জড়িত, অজ্ঞাত সূত্র হতে এমন খবর পাওয়া গেছে । মোসাদ যে কেবল ফিলিস্তিনি নেতা এবং কর্মীদের টার্গেট করছে এমন না, তাদের এই গুপ্তহত্যার নিশানায় সিরিয়া, লেবানন, ইরান, ইউরোপিয়ানরাও আছে।
লক্ষ্যবস্তু হত্যার ক্রিয়াকলাপ
আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এর স্পেশাল এক্টিভিটিস সেন্টার (SAC) ২০১৬ সালের নাম পরিবর্তন করার পূর্বে যেটিকে মূলত স্পেশাল এক্টিভিটিস ডিভিশন বলা হতো, সেটি এবং caesarea ইউনিট প্রায় সমতূল্য। সিআইএ তার শীর্ষ আধাসামরিক মিশন পরিচালনা করে তার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (SOG) দ্বারা। যাদের কাজের মধ্যে একটি হলো নির্বাচিত ব্যক্তিদের বা টার্গেটকে হত্যা করা। এসওজি সিক্রেটিভ স্পেশাল এক্টিভিটিস সেন্টার এর একটি উপাদান, যার সাথে মোসাদের কিংডন ইউনিট এর বেশ মিল লক্ষ্য করা যায়।
বার্গম্যান তার ‘রাইস এন্ড কিল ফাস্র্ট’ বই এ লিখেন:- ২০০০ সালের দ্বিতীয় ইনতিফাদার আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েল প্রায় ৫০০শতাধিক গুপ্তহত্যার অপারেশন পরিচালনা করে। যেখানে টার্গেট এবং তার আশপাশের অবস্থানরত মানুষজন মিলিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা ছিলো এক হাজারের উপরে। দ্বিতীয় ইনতিফাদার সময় ইসরায়েল আরো এক হাজার গুপ্তহত্যার অপারেশন চালায় যার মধ্যে ১৬৮টি সফল হয়। তখন থেকে ইসরায়েল হামাসের জনগন, গাজা অঞ্চলের সামরিক কর্মকর্তাসহ দেশে বিদেশে তাদের কর্মীদের টার্গেট করে আরো প্রায় আটশ’ গুপ্তহত্যার মিশন পরিচালনা করেছে।
আরব- মোসাদ সহযোগীতা
মোসাদ আরবের বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে আনুষ্ঠানিক, সাংগঠনিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় রাখে। এর মধ্যে জর্ডান আর মরোক্কোর গুপ্তচর সংস্থা উল্লেখযোগ্য। অতি সম্প্রতি অত্র অঞ্চলে ক্ষমতার পালাবদল এবং সৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সম্ভাবনাময় হুমকি মোকাবেলায় মোসাদ এই অঞ্চলের দেশগুলো যেমন গাল্ফ স্টেটসহ মিশর এর গোয়েন্দা সংস্থার সাথে তার যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্তচরবৃত্তি অব্যাহত রাখার জন্য মোসাদ জর্ডানের রাজধানী আম্মানে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিচালনা করে আসছে।
১৯৯৭ সালে মোসাদ একটি ভয়ংকর বিষ কানের মধ্য দিয়ে স্প্রে করে। হামাস নেতা খালেদ মিশাল কে হত্যার পরিকল্পনা করে।মিশাল সেই সময় আম্মানে অবস্থান করছিলো, সেই সময় জর্ডানের রাজা ছিলেন প্রয়াত কিং হুসেইন। তিনি ইসরায়েলকে এই বলে হুশিয়ারি দেন যে যদি এই বিষাক্ত স্প্রের প্রতিষেধক তার কাছে হস্তান্তর করা না হয় তাহলে তিনি মোসাদের সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। তার এই পদক্ষেপের কারনে খালেদ মিশাল প্রাণে বেঁচে যান। ‘রাইস এন্ড কিল ফার্স্ট’ এ বার্গম্যান আরো উল্লেখ করেন, সেই সময়ের জর্ডান গোয়েন্দা প্রধান সামিহ বাতিকিহ মোসাদের এর কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হন, কারন এই গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা একসাথে করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু মোসাদ তাকে না জানিয়ে পরিকল্পনার ছক কষে ফেলে।
বার্গম্যান এর গবেষণা অনুসারে, জর্ডান এর পর আরেকটা আরবদেশ মরক্কো সেই ১৯৬০ সাল থেকে মোসাদের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে। এই সুবাদে ইসরায়েল মরক্কোকে উন্নত প্রযুক্তির গোয়েন্দা টেকনিক এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। বিনিময়ে প্রয়াত কিং হাসান মরোক্কোন জিউসদের ইসরায়েলে মাইগ্রেট করার অনুমতি দিয়েছে এবং ইসরায়েল কে মরক্কোর রাজধানী রাবাতে মোসাদের স্থায়ী কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। যেটার সাহায্যে তারা সমগ্র আরবের উপর গুপ্তচরবৃত্তি জারি রাখতে পারে। ১৯৬৫ সালে রাবাতে অনুষ্ঠিত আরব লীগ এর সম্মেলনে তাদের স্টেট প্রধান এবং মিলিটারি কমান্ডারদের ব্যক্তিগত রুম এবং চেম্বারে গুপ্তরবৃত্তির অনুমতি দিয়ে মরক্কো এই সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। একটি যৌথ আরব সামরিক কমান্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেই সম্মেলনটি আয়োজন করা হইয়েছিলো।
সিআইএ এবং মোসাদের পদ্ধতি
গুপ্তহত্যার টার্গেট নির্বাচন করার ক্ষেত্রে মোসাদ অসদৃশ এক উপায় অবলম্বন করে।কিন্তু সিআইএ এই ক্ষেত্রে বহুস্তর বিশিষ্ট শ্রমসাধ্য প্রক্রিয়া অবলম্বন করে। যেটা মূলত সিআইএ-র অফিস অফ জেনারেল কাউন্সেল, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস, এবং হোয়াইট হাউস লিগাল কাউন্সেল-র সাথে সংযুক্ত। সিআইএ কতৃক টার্গেট কিলিং অপারেশনটি সর্বোপরি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকে, যেটি প্রায়শই সিআইএ সাধারণ কাউন্সিল অফিস এবং বিচার বিভাগ বৈধ নথি হিসেবে পেশ করে থাকে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদনই মূলত সিআইএ-র টার্গেট কিলিং অপারেশন কিভাবে সম্পন্ন হবে সে বৈধতা নিশ্চিত করে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদনের পূর্বে মূলত এই রিপোর্টগুলো অনেকগুলো রিভিউ প্রসেস-র মধ্য দিয়ে যায়। যেখানে মেইনলি সিআইএ হোয়াইট হাউস এবং জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট-র আইনজীবীগণ এগুলো যাচাই বাছাই করে দেখে। রেকর্ড বলে, ইউএস-র সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এরকম ৩৫৩ টি টার্গেট কিলিং অপারেশনের অনুমোদন দেয়, যেগুলো ড্রোন স্ট্রাইক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। তার পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এইরূপ প্রায় ৪৮ টি টার্গেট কিলিং অপারেশন এর অনুমোদন দিয়েছিল।
বৈধ প্রক্রিয়া (দ্যা লিগাল প্রসেস)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইএ-র একজন সাবেক কর্মকর্তা আল জাজিরা কে জানায় “কাকে হত্যা করা হবে এই সিদ্ধান্ত সিআইএ নেয় না”। তিনি আরো জানান, সিআইএ-র নজরে খারাপ এমন কাউকে চাইলেও সিআইএ হত্যা করতে পারেনা। লিগ্যাল প্রসেস-র কারণে এই কাজটি তাদের পক্ষে করা কঠিন। সিআইএ এর অধিকাংশ টার্গেট কিলিং অপারেশন মূলত রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে ড্রোন স্ট্রাইকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
সাবেক সিআইএ অপারেশন অফিসার রবার্ট বায়ের আল জাজিরা কে জানায় “কোন টার্গেট কিলিং অপারেশনের নথিতে হোয়াইট হাউসের স্বাক্ষর অনস্বীকার্য যদি সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে হয় তাহলে তো তাদের স্বাক্ষর ছাড়া উপায় নেই”।
“কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন ইরাক কিংবা আফগানিস্তানে এই ধরনের টার্গেট কিলিং অপারেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে ফিল্ড অফিসারের নিজস্ব এক্তিয়ার বেশি থাকে।” কিন্তু মোসাদ-র গুপ্তহত্যার অপারেশনগুলোতে সিআইএ-র মতো এতো বেশি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয় না। এইসব ক্ষেত্রে তারা বেশ উদার প্রকৃতির।
“এইগুলো তাদের জাতীয় পলিসির অন্তর্গত” ইসরায়েলের গুপ্তহত্যার প্রক্রিয়াকে ইঙ্গিত করে রবার্ট বায়ের বলেন।