বিশ্বকাপ আসরে কনকাকাফ অঞ্চলের তিনটি দল

বিশ্বকাপ আসরে কনকাকাফ অঞ্চলের তিনটি দল

বিশ্বকাপের একবিংশতম আসর বসছে সুদূর রাশিয়ায়। বাংলাদেশে কি এর উত্তেজনা কম? মোটেই না! নিজেরা বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও সাপোর্ট দিতে বাঁধা কিসের। ব্রাজিল আর্জেন্টিনার চিরায়ত তর্কে হালফিলে ভাগ বসিয়েছে পর্তুগাল, জার্মানি, স্পেন। উত্তর আমেরিকায়ও বিশ্বকাপের উত্তেজনার কমতি নেই। কনকাকাফের দলও খেলবে। সাফল্য কিংবা সম্ভাবনায় তারা পিছিয়ে থাকায় আলোচনা হয় না তেমন। বিশ্বকাপ ফুটবলের এবারের আসরে অংশ নেওয়া ৩২ দল আসছে ভিন্ন পাঁচটি অঞ্চল থেকে। সেসব অঞ্চল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে আজ থাকছে উত্তর আমেরিকার দলগুলো।

উত্তর আমেরিকার কোয়ালিফাইড দল সমূহ…
১. মেক্সিকো
২. কোস্টারিকা
৩. পানামা
মেক্সিকো
ডাকনাম : এল ট্রিকোলার্স
হেডকোচ : হুয়ান কার্লোস ওসোরিও (কলম্বিয়া)
অধিনায়ক : আন্দ্রেস গার্ডোডা
ফিফা র‍্যাংকিং : ১৫
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ১৬ বার।
সর্বোচ্চ সাফল্য : কোয়ার্টার ফাইনাল।

উল্লসিত মেক্সিকোর সমর্থক

এক সময় আমেরিকাকে সেন্ট্রাল আমেরিকার একমাত্র পরাশক্তি দল হিসেবে বিবেচনা করা হলেও ১৯৭০ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে মেক্সিকোর উত্থান হয়। দলগতভাবে বিশ্বকাপে অর্জনের খাতা খালি থাকলেও বিশ্বকাপের কুঁড়ি আসরের ষোলটিতেই তারা ছিল চেনা নাম। প্রতি আসরেই ফুটবল ভক্তদের সুন্দর খেলা উপহার দিয়ে এসেছে ‘৭০ এর পর ১৯৮৬ বিশ্বকাপের শেষ আটে যাওয়া এল ট্রিকোলার্স। এবারের বিশ্বকাপে বেশ দাপটের সাথেই কোয়ালিফাই করেছে কোচ হুয়ান কার্লোসের শিষ্যরা। দল হিসেবে মেক্সিকোকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তাদের এমন কিছু প্লেয়ার আছে যারা মুহুর্তেই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। গোলকিপার গিলার্মো ওচোয়া। গত বিশ্বকাপে অনেকেই তার ঝলক দেখে মুগ্ধ হয়েছে। ব্রাজিল-মেক্সিকোর ম্যাচে একাই ব্রাজিলের ভয়ঙ্কর আক্রমনভাগকে রুখে দিয়েছিল। এবারো সেই পারফর্মেন্স ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপ ভালো কিছু পেতে চলেছে মেক্সিকো। ডিফেন্সে হেক্টর মরেনো, মিগেল লেউন, ডিয়াগো রয়েস; মিডফিল্ডে দলপতি আন্দ্রেস গার্ডোডো, গিওভান্নি দস সান্তোস, হেক্টর হেরেরাদের বেশ নামডাক আছে। অ্যাটাকিং-র দায়িত্ব রয়েছে হাভিয়ের হার্নান্দেজ, কার্লোস ভেলা, রাউল জিমেনেজ, ম্যানিল কোরোনার মত ফুটবলারদের পায়ে। এরা ক্লাবের হয়ে যথেষ্ট ছন্দে আছেন। এদের উপর তাই বিশ্বাস রাখতেই পারেন কোচ। সেন্ট্রাল আমেরিকার প্রথম দল হিসেবে মেক্সিকো এবারের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছে।
রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানি, সুইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে ‘এফ’ গ্রুপে লড়বে মেক্সিকো।

কোস্টারিকা
ডাকনাম : লস টিকোস
হেডকোচ : অস্কার রামিরেজ (কোস্টারিকা)
অধিনায়ক : ব্রায়ান রুয়েজ
ফিফা র‍্যাংকিং : ২৫
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ৫ বার।
সর্বোচ্চ সাফল্য : কোয়ার্টার ফাইনাল।

কোস্টারিকা ফুটবল দল

১৯৯০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায় কোস্টারিকা। তবে ফুটবল ভক্তদের চোখে আটকায় ২০১৪ বিশ্বকাপে। গেল আসরে গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ড, ইতালি, উরুগুয়ের মত শক্তিশালী দলের সাথে একই গ্রুপে খেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে। সেখানেও পেনাল্টি শ্যুটআউটে গ্রিসকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে সবাইকে চমকে দেয়। অবশ্য এরপর আর এগোতে পারেনি লস টিকোসরা। নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে থামে স্বপ্নযাত্রা। কোস্টারিকা দলে তেমন তারকা ফুটবলার না থাকলেও গোলকিপার কেইলর নাভাস, ডিফেন্ডার কার্লোস গঞ্জালোস, ক্রিস্টিয়ান গ্যাম্বো, মিডফিল্ড ও অ্যাটাকিংয়ে সেলসো বিরজেস, ব্রায়ান রুয়েজ, জোয়েল ক্যাম্পবেলদের কাছ থেকে ভাল কিছুর আশা রাখতেই পারে কোস্টারিকাবাসী। সেন্ট্রাল আমেরিকার দ্বিতীয় দল হিসেবে রাশিয়ার বিমানে ওঠা কোস্টারিকা পড়েছে ‘ই’ গ্রুপে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড এবং সার্বিয়া।

পানামা
ডাকনাম : মারেয়া রোজা
হেডকোচ : হার্নান্দারো গোমেজ (কলম্বিয়া)
অধিনায়ক :রোমান টরেস
ফিফা র‍্যাংকিং :৫৫
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : এবারই প্রথম

প্রথমবার বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পর পানামা ফুটবলারদের বাঁধভাঙা উল্লাস

বিশ্বকাপের একদম প্রথম আসর তাই কেমন করবে সেটা বলার এখনই সময় নয়। তবে তারা যে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ আসরকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করবে তা বলা যায় চোখ বুজে। পানামা বস হার্নান্দারো গোমেজ তার দলের জেমে পেনিডো, রোমান টরেস, গ্যাব্রিয়েল গোমেজ, নআর্মাডো কুপার, লুইস তেজাদা, গ্যাব্রিয়েল টরেসদের নিয়ে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার আশা রাখতেই পারেন। যদিও ‘জি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, তিউনিসিয়াকে টেক্কা দেওয়াটা কঠিন। বিশ্বকাপ বলেই হিসাবের বাইরে ধরা যায় না কাউকে।