আর মাত্র ২৪ দিন। তারপরেই পর্দা নামবে ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের। শুধু ফুটবলেরই না বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। বিশ্বজুড়ে এত ভক্ত আর কোন খেলায়ই নাই। তাইতো ফুটবল পাগল মানুষগুলো খেলার ময়দানে হোক আর ঘরে বসে, সব সময় প্রিয় দলকে সমর্থন যোগানোর যাথাসাধ্য চেষ্টা করে চলে। তাই সব সময়ই বিশ্বকাপ আসলে আলাদা উন্মাদনা কাজ করে ভক্তদের মধ্যে। আসুন তাহলে আজ আমরা এক ঝলকে দেখে নেই, সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শক সমাগমের ঘটনাগুলো–
১৯৫০ ব্রাজিল বিশ্বকাপ
১৯৫০ ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে স্মরণ কালের সবচেয়ে বেশি দর্শক সমাগম হয়েছিল। রিও ডে জেনেরিওর মারাকানা স্টেডিয়ামে সেই আসরের বিজয়ী দল নির্ধারনী ম্যাচে দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৭২ জন। শুধুমাত্র একটি খেলা দেখার জন্য এতো মানুষের উপস্থিতি একবারই হয়েছিল যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল ব্রাজিল সমর্থক। কিন্তু সব সমর্থকের দম্ভ গুঁড়িয়ে দিয়ে উরুগুয়ে ২-১ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল সেদিন।
১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিল মেক্সিকো শহরের এস্তাদিও এজটেক-এ। অবাক করা ঘটনা হল, এই বিশাল সংখ্যক দর্শক সমাগম শুধু একবারই নয়, দুই দুই বার হয়েছিল এই আসরে, এই একই স্টেডিয়ামে। গ্রুপ পর্বের মেক্সিকো বনাম প্যারাগুয়ে ম্যাচে এবং সেই আসরের ফাইনালে আর্জেন্টিনা বনাম পশ্চিম জার্মানি ম্যাচে। এই বিপুল সংখ্যক দর্শক সমাগম বৃথা যায়নি; কারণ ফুটবলের বরপুত্র ম্যারাডোনার জাদুতে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের সাক্ষী হন তারা।
১৯৭০ মেক্সিকো বিশ্বকাপ
মেক্সিকো শহরের এস্তাদিও এজটেকেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮ হাজার ১৯২ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিল। মেক্সিকো বনাম বেলজিয়ামের মধ্যকার গ্রুপ পর্বের খেলায় মেক্সিকো ১-০ গোলে বিজয়ী হয়।
১৯৬৬ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ
ব্রিটিশরা একবারই বিশ্বকাপ আয়োজন করে এবং একবারই শিরোপা জয় করে। এই বিশ্বকাপের ফাইনালে লন্ডনস্থ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড বনাম পশ্চিম জার্মানির মধ্যকার ম্যাচে ৯৮ হাজার ২৭০ জন দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন।
১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপ
স্পেনের অপরূপ সুন্দরের শহর বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা বনাম বেলজিয়ামের উদ্বোধনী ম্যাচে ৯৫ হাজার ৫০০ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিল।
১৯৯৪ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ
ক্যালিফোর্নিয়ার রোজ বোল স্টেডিয়ামে ব্রাজিল এবং ইতালির মধ্যকার ফাইনালে ব্রাজিলের শিরোপা জয়ের সাক্ষী হতে ৯৪ হাজার ১৯৪ জন দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিল।
১৯৩০ উরুগুয়ে বিশ্বকাপ
উরুগুয়ে বনাম যুগোস্লাভিয়ায় মধ্যকার সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় মন্তেভিদেও শহরের স্তাদিও সেন্তেনারিও স্টেডিয়ামে। ৯৩ হাজার দর্শকের সামনে যুগোস্লোভিয়াকে ৬-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে পদার্পণ করে উরুগুয়ে।
২০১০ সাউথ আফ্রিকা বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপের এই আসরের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে। ফাইনালে শেষ মুহুর্তের নাটকীয় গোলে স্পেন ১-০ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিল এবং মাঠে বসে ৮৪ হাজার দর্শক স্পেনের বিজয়োল্লাস উপভোগ করেন।
১৯৭৪ পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ
গ্রুপ পর্বের চিলি বনাম পশ্চিম জার্মানির মধ্যকার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল পশ্চিম বার্লিনের অলিম্পিয়াস্তিডিয়ন স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচে মাঠে বসে জার্মানির জয় উপভোগ করেছিল ৮৩ হাজার ১৬৮ জন দর্শক।
১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপ
কদিন আগেই মিশেল প্লাতিনি বোমা ফাটালেন ফ্রান্স বিশ্বকাপের সাজানো গ্রুপ পর্ব নিয়ে। পরিকল্পনা মাফিক বিশ্বকাপের এই আসরে ঠিকই ব্রাজিল এবং ফ্রান্স ফাইনাল খেলে। ব্রাজিল বনাম ফ্রান্সের মধ্যকার ফাইনালে দর্শক উপস্থিত হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার। ফ্রান্সের একমাত্র শিরোপা জয়ের সাক্ষী হতে সেই খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেইন্ট ড্যানিসের স্টেড ডে ফ্রান্স স্টেডিয়ামে।