অনেকেই মনে করেন রোজা রেখে রক্তদান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু না এটা ভুল ধারণা।
একজন রক্তদাতার পক্ষে রোজা রেখে রক্তদান করা অনেক কষ্টের… কারণও স্পষ্ট, তবে তার থেকেও বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় ‘রক্তদান করলে নাকি রোজা ভেঙ্গে যাবে’ -এমন কথা আমাদের মধ্যে প্রচলিত আছে। রেজাদারের শরীর থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়া আর রোগিকে বাঁচাতে রক্তদান করা এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। তবে, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রক্তদানে কোন বাধা নেই।
যেখানে একজন মানুষের জীবন বাঁচানোর সাথে সম্পর্কিত রয়েছে রক্তদান, সেখানে ধর্মীয় কোন বাধা থাকারও কথা না। অনেকেই মনে করেন রোজা রেখে রক্তদান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়! আসলে এতে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। রোজার সময় রক্তদান সম্পর্কে বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ঈমাম সাহেব ‘হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী’ বলেছেন, “পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে ‘যে ব্যাক্তি একজন মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানব জাতির জীবন রক্ষা করল।” (সূরা মায়েদাঃ ৩২), তাহলে এই আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আপনি যদি আপনার রক্তদানের মাধ্যমে কোন মানুষের জীবন রক্ষায় সহায়তা করেন, তাহলে যেন পুরো মানব সমাজকে রক্ষা করলেন।
আল্লাহ্ পাক আমাদের রক্তদানের মাধ্যমে মানুষের খেদমত করার তৌফিক দান করুন। বিশেষ করে রোজাদার ব্যক্তির মনের মধ্যে এই সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে রক্তদান করলেই রোজা ভেঙে যাবে।
আপনি রোজা অবস্থায় রক্ত দিলে রোজা ভাঙবে না, বরং রোজার সওয়াবও পাবেন; এবং রক্তদানের ত্যাগের মাধ্যমে যে একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করলেন এর সওয়াবও পাবেন।
শুধুমাত্র আপনাকে ডাক্তার যদি বলে আপনি অসুস্থ, রক্ত দেয়া যাবে না, সেই অবস্থা ছাড়া রোজা রেখেও রক্তদান করা যাবে।
উপরোক্ত আলোচনাতেও কথাতেও যদি আপনি কনভিন্সড না হয়ে থাকেন, তাহলে ‘রোজায় রক্তদান’ বিষয়ে আরো অনেক আলোচনা পাবেন। অনকে আলেম এই বিষয়ে কথা বলেছেন। চাইলে নিজেই অনেক রেফারেন্স দেখে যাচাই করে নিতে পারেন।
তবে, রোগী বা ডাক্তারকে একবার জিজ্ঞেস করে নেয়া যেতে পারে যে, সন্ধ্যায় ইফতারের পর রক্তদান করলে হবে কি না, যদি খুব বেশি জরুরি না হয়, তাহলে ইফতারের পরে রক্তদান করা যায়। বা ইফতারের পরে রক্ত দিয়ে রক্ত সংরক্ষণ করে প্রয়োজনমত রোগীকে দেয়া যায়। আল্লাহ আমাদের রোজাকে কবুল করুন। আমীন।