কোটা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি তুলে নিয়েছে। তবে সারাদেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারী নেতারা এ ঘোষণা দেন।
এ ঘোষণার পর শাহবাগ থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা। তারা প্রায় সাত ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন।
সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৩৩ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন হয়রানি ও হামলার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। তবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে তিনি তাঁর ঘোষণা বাস্তবায়ন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা রেখে আজকের মতো কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে। আমরা কোটার সংস্কার চেয়েছিলাম। আমাদের পাঁচটি দাবি ছিল’।
প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের বিরোধী না, উন্নয়নের সহযোগী। প্রধানমন্ত্রীর ওপর বিষয়টি আমরা ছেড়ে দিলাম। আশা করি, তাঁর ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে’।
সংগঠনটির এই যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে । তবে রাজপথে কর্মসূচি হবে না। আমাদের কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত, তবে প্রত্যাহার না। দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আমরা আবার রাস্তায় নামব’।
এ সময় সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘এখন আমরা সবাই চলে যাব। রাজপথে কেউ আর থাকব না’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী, কোটা বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে এর আগে বেলা একটার দিকে ঢাকার শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এতে শাহবাগ এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ যায়।
গত ৮ এপ্রিল থেকে টানা পাঁচদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। ১২ এপ্রিল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে সব চাকরিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সোমবার পর্যন্ত এখনো এ বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে শিগিগিরই সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। ১৪ মে সোমবার মন্ত্রীসভা শেষে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।