আমেরিকাই লিয়াকত আলী খানের হত্যাকারী!

আমেরিকাই লিয়াকত আলী খানের হত্যাকারী!

আজ থেকে ৬৭ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর লিয়াকত আলী খানকে হত্যা করেছিল। মার্কিন স্বরাষ্ট্র বিভাগের নথির উদ্ধৃতি দিয়ে ‘পাকিস্তান টুডে’ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে গত ১৭ এপ্রিল ২০১৫। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ইরানের সাথে তেল-চুক্তির নিরাপত্তার জন্য লিয়াকত আলীর অফিস ব্যবহারের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এ খুন হতে হয়।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে খান বলেছিলেন যে তিনি তেহরানের কর্মকর্তাদের সাথে থাকা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না এবং ইরানের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।

এছাড়াও লিয়াকত আলী খান ওয়াশিংটনকে পাকিস্তানে থাকা ঘাঁটি খালি করতে বলেন যা যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান হুমকি হিসেবে নেন এবং তার শোচনীয় পরিণতি দেন।

নথি অনুযায়ী, এই ঘটনার পর, সিআইএ খানের জন্য গুপ্তঘাতক খুঁজতে শুরু করে কিন্তু তারা পাকিস্তানে উপযুক্ত শ্যুটার খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। এবং আফগানিস্তানের সাথে যোগাযোগ করে। ‘পাস্তুনিস্তান’র স্বাধীনতার বিনিময়ে তারা কাজটি করার প্রস্তাব দেয়। উল্লেখ্য, সে সময়টিতে আফগানিস্তানই সরাসরি পাকিস্তানকে মেনে নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে।

আফগানিস্তানের ‘রাজা মোহাম্মদ জহির শাহ’ সরকার সৈয়দ আকবর নামক একজনকে খুঁজে পায়। যাকে হত্যাকাণ্ডের কাজটি দেয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেয়। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডির কোম্পানিবাগ এলাকায় ভাষণ শুরুর মূহুর্তে আকবর লিয়াকত আলী খানকে দু’টি গুলি করে। তার বুকে গুলি লাগে এবং দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয় ও রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা হয়।  কিন্তু ৫৬ বছর বয়সী লিয়াকত আলী খান ওই আঘাতেই মৃত্যুবরণ করেন। । আততায়ীকে সাথে সাথেই গুলি করে হত্যা করা হয়।

আধুনিক পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন লিয়াকত আলী খানকে হত্যা করতে যে বুলেট ব্যবহার করা হয়েছিলো তা উচ্চপদস্থ মার্কিন সেনারা ব্যবহার করতো এবং সাধারণত বাজারে পাওয়া যেত না বলে জানায় পত্রিকাটি।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে কিছু ব্যক্তি গভর্নর জেনারেল গুলাম মোহাম্মদকে দায়ি করেছিলো আবার কেউ কেউ মোস্তাক আহম্মেদ গোরমানিকে দায়ি করেছিলো। কিন্তু এত বছর পর এসে সে রহস্য উন্মোচন হলো। আমেরিকার অপকর্মের তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি অধ্যায়।