বাংলাদেশ এ সপ্তাহে মহাকাশে স্যাটেলাইট উড়িয়েছে এমন ৫৭টি দেশের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে। প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু-১ প্রেরণের খবরে সবার মধ্যেই এ নিয়ে বিস্তর কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। স্যাটেলাইট নিয়ে আজ জেনে নিন তেমনই গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি বিষয়–
♦ মহাকাশে নাসার দুইটি বিশেষ স্যাটেলাইট আছে, যারা অপর স্যাটলোইটগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণসহ
কতৃপক্ষকে কক্ষপথের বিভিন্ন জটিলতার খবরাখবর দেয়। স্যাটেলাইট দুটির নাম টম ও জেরি।
♦ বিজ্ঞানীরা বলেন, স্যাটেলাইট আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার একটি কারণ উল্কাপিণ্ড। তবে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার স্যাটেলাইটের ১টি উল্কাপিন্ডের কারণে ধ্বংস হয়েছে।
♦ ২০০৭ সালে চীন একটি মিসাইল পরীক্ষা করতে যেয়ে নিজেদের স্যাটেলাইটকেই আঘাত করে। পরে সেটি ২ হাজার ৮৭টি টুকরা হয়ে এখনো কক্ষপথে ঘুরপাক খাচ্ছে। এবং এখন পর্যন্ত সেসব ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
♦ স্যাটেলাইট প্রেরণের শুরুটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হলেও তার প্রথম স্যাটেলাইট ব্যর্থ হয়। পরে সোভিয়েত ১৯৫৭ সালে প্রথম স্যাটেলাইট প্রেরণ করে।
♦ ১৯৭৭ সালে সিআইএ এজেন্ট উইলিয়াম ক্যাম্পাইলস কেএইচ-১১ নামে একটি গোপন স্যাটেলাইটের ম্যানুয়াল রাশিয়ার এজেন্টদের কাছে ৩ হাজার ডলারে বিক্রি করে দেয়। মূলত পরিকল্পনা ছিল, বিক্রির মাধ্যমে রাশিয়ায় ডাবল এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে তার ৪০ বছরের জেল হয়।
♦ ১৯৭৯ সালে স্কাইল্যাব নামে একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পতিত হয়। এরুপ বিপজ্জনক ঘটনা ঘটানোর দায়ে আমেরিকার কাছে জরিমানা দাবি করে অস্ট্রেলিয়া। যদিও সে জরিমানা আজও পরিশোধ করা হয়নি।
♦ টেক্সাসের একটি এলাকার নাম আছে ‘ডিস’, কেননা সেখানে স্যাটেলাইটের কারণে ১০ বছর কোন ডিস বিল দিতে হয়নি।
♦ ১৯৮১ সালে ভারত তার প্রথম স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করে। এই স্যাটেলাইটটি আনা হয়েছিল গরুর গাড়িতে, এবং তার রকেট-সামগ্রী আনা হয়েছিল সাইকেলে করে।
♦ ১৯৯৮ সালে একটি স্যাটেলাইটে মারাত্মক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সারাবিশ্বের প্রায় ৮০ ভাগ পেজার (স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগকারী ডিভাইস) কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
♦ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গৃহীত ইন্টারনেটের দাম তুলনামূলক বাড়তি হয়। মূলত এর পেছনের কারণ যন্ত্রাদির দাম অতিরিক্ত। এছাড়া আপনাকে কিনতে হবে স্যাটেলাইট মডেম এবং ডিস। তার জন্যে আপনাকে ইন্সটলেশান ফি ছাড়াও গুণতে হবে মাসিক খরচ।
♦ স্পুটনিক-১ মূলত প্রথম স্যাটেলাইট যা ১৯৫৭ সালে ৪ অক্টোবর প্রেরিত হয়। যার ওজন প্রায় ১৮০ পাউন্ড এবং গতি প্রায় ১৮ হাজার মাইল প্রতি ঘন্টায়।
♦ স্পুটনিক প্রতি ৯৮ মিনিটে (প্রতি দেড় ঘন্টায়) সারা দুনিয়া ভ্রমণ করে। তার মধ্যে ৭বার ভ্রমণ করে তার চিরশত্রু মার্কিন মুল্লুক।
♦ তারপরেই মাত্র তিন মাস পরেই আমেরিকা এক্সপ্লোরার-১ নামে প্রথম স্যাটেলাইট প্রেরণ করে। তার প্রেক্ষিতেই পরের বছর কংগ্রেস কতৃক নাসা প্রতিষ্ঠায় বিল পাশ করা হয়। এক্সপ্লোরার-১ তখন মার্কিন আর্মি কতৃক পরিচালিত হচ্ছিল।
♦ এই মুহুর্তে কক্ষপথে ভ্রমণ করা সবচেয়ে বড় কৃত্রিম স্যাটেলাইটের নাম আইএসএস (ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন)।
♦ সর্বশেষ ২০০৯ সালে মার্কিন এবং রাশিয়ার দুইটি যোগাযোগ রক্ষাকারী স্যাটেলাইট সংঘর্ষে পড়ে। দুটি দেশের স্নায়ুযুদ্ধের আবেশ যেন তাদের স্যাটেলাইটও এড়াতে পারেনি।