সংসদের বাইরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায়কে ‘রাজনৈতিক’ বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ সিনিয়র আইনজীবি লর্ড কার্লাইল। মামলায় যথাযথ প্রমানের অভাব রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
খালেদা জিয়ার আইন বিষয়ক পরামর্শদাতাদের দলে থাকা লর্ড এলেক্স কার্লাইল কিউসি বলেন, ‘তিনি এমন কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখেননি এই মামলায়, যার ভিত্তিতে এমন রায় হতে পারে, অথচ সেই মামলা পরবর্তীতে রিভিউ পর্যন্তও গড়িয়েছে’।
প্রতিবেদক ডেভিড বার্গম্যানকে তিনি বলেন, ‘মামলায় এমন কিছুই দেখিনি যার ভিত্তিতে খালেদা জিয়া কোন প্রতারণা করেছেন বলে দাবি করা যায়’।
এছাড়া তিনি আরো বলেন, ‘এ বছরের শেষে বাংলাদেশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও গ্রেফতার করার পেছনে ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নানা ব্যাখ্যাতীত কারণের বাইরেও ধারনা করা যায়, সরকার চায় না তিনি এই নির্বাচনে ঠিকঠাক প্রচারণা চালাতে পারেন’।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ এর অর্থ প্রতারণার মামলায় এ বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি এই রায় দেয়া হয়।
উক্ত মামলায় আদালত খালেদাপুত্র তারেক রহমানসহ আরো চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই রায়ের প্রেক্ষিতে বিএনপির মনে করে, ডিসেম্বরে হতে যাওয়া এই নির্বাচন সুষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ হওয়ার জন্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি জরুরি।
অবশ্য লর্ড কার্লাইলের অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলব না, এটি মহামান্য আদালতেরই রায়’।
আনিসুল হক নানা সময়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে কার্লাইলের ওকালতিকে নানা সময়েই সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বিরোধীদল এমন একজনকে আইনি পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করেছেন যিনি নানা সময়ে আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, এমনকি তিনি জামায়াতের নেতাদের পক্ষেও কাজ করেছেন।
জামায়াতের নেতাদের পক্ষে কাজ করা বিষয়ে জানতে চাইলে লর্ড কার্লাইল বলেন, ‘এসব নিতান্তই কুৎসা’।
অন্যদিকে আলজাজিরার উক্ত সাংবাদিকের ব্যক্তিগত ব্লগ থেকে জানা যায়, খালেদা জিয়ার আগামী ৮ মে’র শুনানিতে লর্ড কার্লাইলের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তবে কার্লাইলের আগমন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশন নানাভাবে কালক্ষেপণ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন। কোন প্রকার ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না এই সিনিয়র আইনজীবী।
কার্লাইল দাবি করেন, বাংলাদেশের যেকোন নাগরিক দুনিয়ার যেকোন আইনজীবির পরামর্শ গ্রহণের অধিকার রাখেন।
অথচ এক এগারোর সরকারের সময় আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার বিখ্যাত আইনজীবি প্রফেসর পায়াম আখাভানের পরামর্শ চাইলে তাকে সেসময়ের সরকার বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়। উক্ত আইনজীবি শেখ হাসিনার পক্ষে শুনানি শেষে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন।
এর আগেও যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের অভিযুক্ত নেতৃবৃন্দের পক্ষে আইনি পরামর্শ দিতে এসে বিমানবন্দর থেকেই ফিরে গিয়েছিলেন টবি ক্যাডমান।