রিয়াল মাদ্রিদ ২ – ১ লেগানেস
বেল (৮”) ব্রাসানাক (৬৬”)
মায়োরেল (৪৫”)
আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি ফাইনালে বায়ার্নের বিপক্ষের ম্যাচটির কথা মাথায় রেখেই আজ মূল একাদশের প্রায় ৮ জন প্লেয়ারকে বিশ্রামে রেখেছিলেন রিয়াল বস জিদান। বেঞ্চ প্লেয়াররা প্রথমার্ধে ভালো খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে একটু অগোছালোই খেলেছে। তবুও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এ সিজনে এই প্রথম টানা ৮ লিগ ম্যাচে অপরাজিত থাকল গতবারের লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
★ রিয়াল মাদ্রিদ তাদের মূল একাদশের ৮ জন প্লেয়ার বাদেই লেগানেসের বিপক্ষে একাদশ সাজিয়েছে।
★ রিয়াল মাদ্রিদ তাদের সর্বশেষ ১২টি লিগ ডার্বি ম্যাচে অপরাজিত।
★ এ বছরের জানুয়ারিতে কোপা দেল রের ম্যাচে বার্নাব্যুতে লেগানেসের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। যেন জানুয়ারির সেই স্কোর ফিরিয়ে দিল রিয়াল।
লাইন আপ
রিয়াল মাদ্রিদ (৪-৪-২)
ক্যাসিয়া, হাকিমী, ভালেহো, ক্যাসেমিরো, হারনান্দেজ, বেল, লরেন্তে, কোভাসিচ, সিবেলোস, মায়োরেল এবং বেন্জেমা।
সাব: বেন্জেমা-এ্যাসেন্সিও, কোভাসিচ-ক্রুস।
লেগানেস (৪-২-৩-১)
ইভান, জালদোয়া, বুস্তিনজা, সিয়োভাস, রিকো, ব্রাসানাক, পেরেজ, নাবিল, গ্যাব্রিয়েল, নুরদিন এবং গেররেরো।
সাব: গেররেরো-ক্লাদিও, নুরদিন-ইরাসো, ব্রাসানাক- নারান্জো।
প্রথমার্ধ
মূল একাদশের মাত্র ৩ জন প্লেয়ারকে নিয়ে বেন্জেমার নেতৃত্বে লেগানেসের বিপক্ষে মাঠে নামে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের একদম শুরু থেকেই বার্নাব্যুতে অতিথিদের চাপে রেখেছিল স্বাগতিকরা। তাদের প্রথম সফলতার জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায় করিম বেন্জেমার নেয়া শ্যুট প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে গেলেও বল চলে যায় সতীর্থ ফুটবলার গ্যারেথ বেলের পায়ে আর সে সুযোগ হাত ছাড়া করেননি তিনি। সেই শ্যুটকে গোলে রূপান্তর করে হান্ড্রেড মিলিয়ন ম্যান। ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই বেলের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের একদম শুরু থেকে ভুল পাস ও এলোমেলো খেলতে থাকা লেগানেস ২০ মিনিট পর ছন্দে ফিরে আসে। ম্যাচের ২৬ মিনিটে গেররেরোর নেওয়া দূর্দান্ত হেড একটুর জন্য লক্ষ্য ভ্রষ্ট হওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ২৮ মিনিটে আবারও সহজ সুযোগ পেয়ে যায় গেররেরো। নাবিলের বাড়ানো ক্রসে পা লাগাতে পারলেই গোল, এমন সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি লেগানেসের এই স্ট্রাইকার। তবে এই আক্রমণ থেকে পাল্টা আক্রমণে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। এবার মাদ্রিদের মোয়ারেলের ভাগ্য বেশ খারাপই বলতে হয়। তার নেয়া শ্যুট প্রায় গোল লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করে স্বাগতিকদের একটি নির্ঘাত গোল থেকে বঞ্চিত করেন লেগানেসের ডিফেন্ডার বুস্তিনজা। ৩৬ মিনিটে নুরদিনের নেয়া শ্যুট বারে লেগে ফিরে আসলে হতাশ হন লেগানেস সমর্থকরা। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে মাদ্রিদের ট্যালেন্টেড মিড ফিল্ডার সিবেলোস বিপদজনক জায়গায় বল পেলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শ্যুট করেন। তার ২ মিনিট পরে অতিরিক্ত সময়ে ফ্রি কিক থেকে একদম আনমার্কড জায়গায় বল পেয়ে যায় মায়োরেল। আর সেই সুযোগকে কাজেও লাগান তিনি। ফলাফল প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।
দ্বিতীয়ার্ধ
প্রথামর্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে নামলেও দ্বিতীয়ার্ধে যেনো রিয়াল মাদ্রিদের খেলায় সেই ধার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ভুল পাস, বাজে শ্যুট খেলছিল জিদানের শিষ্যরা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে এসে দলের দুুটি পরিবর্তন আনেন জিদান।কোভাসিচের পরিবর্তে ক্রুসকে নামান এবং বেন্জেমার পরিবর্তে এ্যাসেন্সিওকে নামান। অন্যদিকে লেগানেস গেররেরোর পরিবর্তে ক্লাদিওকে নামান।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদের বাজে ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে ডি বক্সের মাঝে ফাঁকা জায়গায় থাকা ব্রাসানাককে বল দেয় নুরদিন আর সে বলকে গোলে রুপান্তর করতে কোনো ভুল করেনি লেগানেসের মিডফিল্ডার। এরপরও বেশ কিছু ভালো সুযোগ পায় রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের ফুটবলাররা তবে তার একটিকেও গোলে রূপ দিতে পারেনি তারা। উল্টো ৭৭ মিনিটে ক্লাদিওর দূরপাল্লা শ্যুটে গোল হজম করতে বসেছিল স্বাগতিকরা। ম্যাচের শেষ মিনিটে মাদ্রিদের মাঠে থাকা নুরদিন শ্যুট নেয়ার আগে মুহুর্তে শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলে রেফারির উপর চড়াও হন অতিথি দলের অধিনায়ক গ্যাব্রিয়েল। তার এই চড়াও হওয়ায় রেফারি তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান।
শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। গত জানুয়ারিতে লেগানেসের সাথে বার্নাব্যুতেই ২-১ গোলে হেরে কোপা দেল রে থেকে বাদ পড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ : গ্যারেথ বেল (রিয়াল মাদ্রিদ)
ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলের অবস্থান : আজকের ম্যাচের পর ৩৪ ম্যাচ শেষে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ৩ এ অবস্থান করছে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে এক ম্যাচ বেশি খেলে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১৬ নাম্বারে অবস্থান করছে লেগানেস।