দিল্লির লাল কেল্লা ইজারা দিচ্ছে ভারত সরকার

দিল্লির লাল কেল্লা ইজারা দিচ্ছে ভারত সরকার

ভারতের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোকে বেসরকারি ব্যবস্থপনায় তুলে দেয়া শুরু করেছে মোদি সরকার। এবার ঐতিহাসিক ‘লাল কেল্লা’র কপালে জুটলো বেসরকারি খবরদারি।

লালকেল্লা থেকেই স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন করে ভারত সরকার। এবারই শেষবারের মতো সরকারিভাবে পতাকা উত্তোলনের সম্মান পাবে ‘লাল কেল্লা’। তারপরই তুলে দেয়া হবে ডালমিয়া গ্রুপের হাতে। রক্ষণাবেক্ষণ, টিকিটের হার নির্ধারণ, পরিষেবা প্রদান, সৌন্দর্য বর্ধন, সংস্কার, থ্রি ডি ম্যাপিং, পর্যটনবান্ধব প্লান নির্মাণ ইত্যাদির দায়িত্ব ২৫ কোটি রুপির বিনিময়ে কিনে নিয়েছে কর্পোরেট এই প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে গতকাল ভারতের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ডালমিয়া গ্রুপের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করেন।

ভারতীয় পত্রিকাগুলোর বরাতে জানা যায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি লালকেল্লার আধুনিকায়নে কাজ করবে। পরিষেবা প্রদান ছাড়াও এটি ১ হাজার স্কয়ার ফুটের একটি ভিজিটর সেন্টার গঠন করবে। এবং পর্যটকদের টিকিটের মূল্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে নির্ধারণ করবে।

তবে লালকেল্লার রক্ষণাবেক্ষণ তথা পরিষেবা প্রদান ও দেখশোনার দায়িত্ব বেসরকারি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছেন। মমতা এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘লাল কেল্লাতেই প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট জাতীয় পতাকা তোলা হয়। আর সেই দায়িত্ব নিতেই সরকার অপারগ! আজ আমাদের ইতিহাসের এক কালো দিন’।

পাশাপাশি, সিপিআই ও কংগ্রেস সরকারের এ ঘটনার প্রতিবাদে টুইট করেছে। কংগ্রেস লিখেছে, ‘লাল কেল্লার পর মোদি সরকার এবার কোন কোন ঐতিহাসিক স্থাপনার পরিচালনা বেসরকারি হাতে তুলে দেবে?’

ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও মোগল সাম্রাজ্য বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ডারলিম্পল। তিনি বলেন, ‘কর্পোরেট কোম্পানির মধ্যে নিলামের তুলনায় লাল কেল্লার মতো একটি ঐতিহাসিক কেল্লাকে সংস্কার ও সামগ্রিক পরিচালনার অবশ্যই অন্য কোন ভালো উপায় আছে’।

উল্লেখ, সপ্তদশ শতকে মোঘল সম্রাট শাহজাহান লাল কেল্লা নির্মাণ করেন।