আন্ত-কোরীয় যুদ্ধের ৬৫ বছর পর প্রথম কোন উত্তর কোরীয় নেতা দক্ষিণ কোরিয়ায় পা রাখলেন। আজ শুক্রবার উত্তর কোরীয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এই ঐতিহাসিক ঘটনার ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ২০০০ ও ২০০৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টরা পিংইয়ংয়ে শীর্ষ বৈঠক করলেও উত্তর কোরিয়ার কোন নেতা দক্ষিণ কোরিয়ায় আসেন নি। এবারই প্রথম কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি শীর্ষ বৈঠকে এসেছেন।
সীমান্তবর্তী পানমুনজমের ‘পিস হাউস’-এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের মাধ্যমে আন্ত-কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ও কোরীয় উপদ্বীপ সম্পূর্ণ পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণের ঘোষণা দেয়া হয়। সেই সাথে আন্ত-কোরীয় সম্পর্কেরও নতুন দিক উন্মোচিত হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন মুন জায়ে-উন বৈঠক শেষে বলেন, ‘আমরা যৌথভাবে সম্মত হয়েছি কোরীয় উপদ্বীপকে পারমানবিক অস্ত্র কারখানা মুক্ত করতে– সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে। এটাই উপদ্বীপকে পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণের শুরু’।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা নতুন পৃথিবীর জন্য একটি বাঁক, যেখানে আকাশ, সমুদ্র ও স্থলে আমাদের সব ধরণের শত্রুতার শেষ। আমি এবং মি. কিম একসাথে কাজ করব। আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি, আমরা হটলাইনের মাধ্যমে প্রায়ই কথা বলব এবং কখনো আর পেছনে ফিরে দেখব না’।
অন্যদিকে কিম জং উন বলেন, ‘আমাদের একে অপরের সাথে লড়াইয়ের কোন কারণ নেই— আমরা এক জাতি। এখন থেকে কোরিয়া একসাথে কাজ করবে এবং নিশ্চিত করবে যাতে ইতিহাসের পূণরাবৃত্তি না হয় যা পূর্ববর্তী আন্ত-কোরীয় চুক্তির ক্ষেত্রে হয়েছিল’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চলার পথে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, অসুবিধা কিংবা হতাশা আসতে পারে। কিন্তু ব্যথা ছাড়া জয় অর্জন সম্ভব না’।
মে মাসের দিকে কিম-মুন দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে সামরিক উত্তেজনা হ্রাসের ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।
কোরিয়ান এই শীর্ষ বৈঠকটি কিম-ট্রাম্প বৈঠকের ইঙ্গিতবহ হিসেবে কাজ করছে, যা মে মাসের শেষে বা জুন মাসের শুরুতে হওয়ার কথা রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন সর্বাধিক চেষ্টা করছে কিমকে আলোচনার টেবিলে বসানোর। এদিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্টও দৃষ্টি রেখেছিলেন আজকের বৈঠকের দিকে। টুইটারে এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘কোরিয়ান যুদ্ধ শেষ। কোরিয়ায় এখন যা হচ্ছে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মহান জনতার গর্ব করা উচিত।” পরবর্তীতে কিম-ট্রাম্প বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে।