ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র অনুমতি চাইলো গুজরাটের ৫ হাজারের অধিক কৃষক। গুজরাট সরকার ও গুজরাট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (জিপিসিএল) গুজরাটের ভাবনগর জেলায় ৫ হাজারেরও অধিক কৃষকের জমি অধিগ্রহণ করেছে। প্রায় দুই দশক আগে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও, এখনো কোন প্রকল্প শুরু হয়নি।
আন্দোলন দমাতে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গুজরাটের ভাবনগর জেলার প্রায় ১২টি গ্রামে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারি আছে। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরুপ ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র আবেদন করেছেন বঞ্চিত কৃষকরা।
জমি অধিগ্রহণে উত্তাল এই জেলার ১২টি গ্রামের অন্যতম, বাদী। ভাবনগর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কয়লা খনি, শ্রমিকদের বসবাসের জায়গা এবং বর্জ্য ফেলার স্থানের জন্য এই গ্রামের ১ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করে জিপিসিএল। এই অধিগৃহীত জমির জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সালের মধ্যে আলোচনার পরে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়।
ঠিক করা হয় হয়, প্রতি হেক্টর সেচযোগ্য জমির জন্য ৭২ হাজার টাকা এবং সেচহীন জমির জন্য ৪৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
জমি অধিগ্রহণের সময় শর্ত ছিল ২ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করা হবে। কিন্তু অনেক বছর হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয়নি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর প্রতিবাদে গুজরাট হাই কোর্টে আন্দোলনরত কৃষকরা জনস্বার্থবাহী মামলা করে।
জমি নেওয়ার প্রতিবাদে ১২টি গ্রামের মোট ৫ হাজার ২৫৯ জন কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে চিঠির মাধ্যমে এই ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র আবেদন করেছে। মঙ্গলবার ভাবনগরে কৃষকদের অধিকারের পক্ষে আন্দোলনরত সংগঠন গুজরাট খেদূত সমাজ এর সদস্য কৃষক নরেন্দ্র সিং গোহিল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, কৃষকদের সই করা ওই চিঠি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে।
ভাবনগরের জেলাশাসক হর্ষদ পাটেল বলেন, জেলার রেজিস্ট্রি শাখায় কৃষকরা ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন করে চিঠি জমা দিয়েছেন।
গোহিল বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে অধিগ্রহণ করা জমি এভাবে জোর করে আটকে রাখা বেআইনি। আন্দোলনরত কৃষকদের অভিযোগ, ‘জমি অধিগ্রহণ আইন, ২০১৩ অনুসারে পাঁচ বছর আগে অধিগৃহীত জমি কোনও সংস্থা নিতে পারে না। সেই জমি নিতে সংস্থাটিকে নতুন করে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে’।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘গুজরাট সরকার এবং জিপিসিএল জোর করে কৃষকদের জমি এভাবে কেড়ে নিতে চাইছে। এমন অবস্থায় কৃষকরা কী করতে পারেন। চাষযোগ্য জমি কেড়ে নেওয়া আর আমাদের হত্যা করা সমান’।