বেঁচে থাকুক আল পাচিনো, বেঁচে থাকুক গডফাদার

বেঁচে থাকুক আল পাচিনো, বেঁচে থাকুক গডফাদার

“I always tell the truth, even when I lie..” শ্লেষাক্ত কন্ঠ, ঘোলা চোখ, নির্লিপ্ত চেহারা, আর চিৎকার; সিনেমাপাগলদের জন্য সবচেয়ে বড় ট্রিট। সিনেমা ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের অন্যতম অভিনেতা তিনি। ইতালিয়ান-আমেরিকান বংশোদ্ভূত এই অভিনেতার পুরো নাম আলফ্রেডো জেমস আল পাচিনো। শৈশব থেকেই ঝোঁক ছিল অভিনয়ের প্রতি তাই ছোট থেকেই শুরু করে দেন অভিনয়ের পথচলা। অভিনেতা হিসেবে তিনি বহু বৈচিত্রতার অধিকারী। সারপিকোতে আদর্শ পুলিশ, স্কারফেস-এ ড্রাগলর্ড, সেন্ট অফ আ ওমেনের আর্মির অবসরপ্রাপ্ত বদমেজাজি অন্ধ কর্নেল, আর গডফাদারে তার কিংবদন্তিতুল্য চরিত্র মাইকেল কোর্লিওন। এছাড়াও আরো অসংখ্য সিনেমাতে অংশগ্রহণ করেছেন হলিউডের এই গডফাদার। অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন আট আটটা বার, সেরা অভিনেতা হিসেবে জিতেছেনও একবার। আজকের দিনে পৃথিবীতে আসেন এই লিজেন্ড।

পড়ালেখা বাদ দিয়ে অভিনয়

আলফ্রেডো জেমস পাচিনোর জন্ম হয় ১৯৪০ সালের ২৫শে এপ্রিল। ইতালীয় অভিবাসী দম্পতি সালভাতর পাচিনো ও রোজের ঘরে জন্ম তার। দুই বছর বয়সেই মা-বাবার বিচ্ছেদ দেখেন আলফ্রেডো ‘আল’ পাচিনো। সিসিলিতে থাকাকালীন বাবা-মা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাবা চলে আসেন ক্যালিফোর্নিয়াতে আর মায়ের সাথে তিনি চলে যান ব্রঞ্জে। ছোট থেকেই মানুষের সাথে সখ্যতা ছিল কম। মহল্লায় দুর্নাম ছিল বখাটে, দুষ্ট ছেলে হিসেবে। আর আট দশটা বিচ্ছিন্ন পরিবারের সন্তানদের মতই অনেক সময় নানা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। বন্ধুদের আড্ডায় বা মাঠে কোথাও মারামারি হলেই সেখানে শরিক থাকতেন তিনি। যেই সময় বাচ্চারা চকলেটের বায়না ধরত সেই বয়সে তার হাতে ছিল মারিজুয়ানা। তের বছর বয়স থেকেই মারিজুয়ানা সেবন শুরু করলেও সিগারেটের অভ্যাস ছিল দশ বছর থেকেই। স্কুলে মন বসত না কখনোই। সতেরতেই চুকিয়ে ফেলেন স্কুলের পাঠ। তখন থেকেই আগ্রহ হয় অভিনয় করার। পড়ালেখা ছেড়েছুড়ে তাই লাগলেন অভিনয়ের পেছনে। এই সিদ্ধান্ত পছন্দ হল না মায়ের। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি করে বেরিয়ে পড়েন ঘর ছেড়ে। ছোটখাট কিছু কাজ করেই নিজের ভরণপোষন করতেন আর খরচা জোগালেন অভিনয় শেখার। ১৯৫৯ সালে নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষে চলে গেলেন গ্রিনউইচে। সেখানে হার্বার্ট বারগফ স্টুডিওতে থিয়েটারে যোগ দেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই অফ-ব্রডওয়েতে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মঞ্চে সুযোগ পেয়ে যায় পাচিনো। নিউইয়র্কের আন্ডারগ্রাউন্ড মঞ্চে অভিনয় করলেও পেশাদার অভিনয়ের সনদদাতা সংস্থা অ্যাক্টর স্টুডিওতে প্রথমবারের অডিশনে নাকাম হন। এরপর এইচবি স্টুডিওতে যোগদান করেন। আর এখানেই অভিনয় শিক্ষক চার্লস লাটনের সান্নিধ্যে আসেন। পরবর্তী সময়ে চার্লসকেই পাচিনো তার মেন্টর ও বন্ধু হিসেবে পান। এখানে অভিনয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপ আরো সুগম হয় তার। প্রখ্যাত প্রশিক্ষক ‘মেথড একটিং’ এর জনক লি স্ট্রেসবার্গের অধীনে অভিনয় শেখার সুযোগ পেয়ে যায় আল পাচিনো। উল্লেখ্য যে, গডফাদার পার্ট টুতে পাচিনোর সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন লি।

১৯৬৯ সালে ব্রডওয়েতে ‘ডাজ টাইগার ওয়্যার আ নেকটাই?’ অভিনয়ের মাধ্যমে জিতে নেন টনি এওয়ার্ড। এবং ডাক পেয়ে যান তার প্রথম সিনেমা ‘মি, নাটালি’তে কাজ করার। ১৯৬৯ সালের ‘মি, নাটালি’ সিনেমার সুবাদেই প্রথম চলচ্চিত্রে উপস্থিতি। তবে ভূমিকাটি ছিল সামান্য একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের। মূল চরিত্র বলতে ১৯৭১ সালের ‘দ্য প্যানিক ইন নিডল পার্ক’। আর পরের বছর গডফাদার ছবির কথা তো সবার জানা।

পথচলা গডফাদারের

ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার অমর সৃষ্টি মাইকেল কোর্লিয়ন। কি হতো যদি পাচিনো সুযোগ না পেত গডফাদারে কাজ করার? আমরা কি পেতাম আমাদের প্রিয় আল পাচিনোকে? ১৯৭১ সালে পাচিনো হিরোইনের প্রতি আসক্ত যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেন ‘দা প্যানিক ইন নিডল পার্ক’ চলচ্চিত্রে। এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার নজরে পড়েন। তিনি তখন তার আসন্ন সিনেমা গডফাদারের জন্য মনমতো তারকার সন্ধানে ছিলেন। মাইকেল কোর্লিয়ন চরিত্রের জন্যে রবার্ট রেডফর্ড এবং জ্যাক নিকলসনদের মত তারকাদের বিবেচনায় রেখেছিলেন তিনি। কিন্ত কপোলার পছন্দ হয়ে গেল কম পরিচিত আল পাচিনোকেই। কপোলা তাকে ‘গডফাদার’ চলচ্চিত্রের মাইকেল কর্লিয়ন চরিত্রের জন্য নির্বাচিত করেন। এ চরিত্রে সৌম্য, স্থির আল পাচিনোর যে বিকল্প নেই, তা আর কেউ না বুঝলেও বুঝেছিলেন কপোলা। তাইতো প্রোডাকশন হাউজ না চাইলেও এক অর্থে জোর করেই তাকে মাইকেল কোর্লিয়নেরর চরিত্রে নির্বাচিত করেন। বলা যায় এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই আল পাচিনো নিজেকে খ্যাতির শীর্ষে কায়েম করার প্রথম ধাপ পার করেন। মজার ব্যাপার হল, আল পাচিনোর পূর্বপুরুষ সিসিলির যে শহরটিতে থাকতেন, সেটির নামও কোর্লিয়ন। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া এই ধ্রুপদী সিনেমা তাজ্জব করে দেয় পুরো বিশ্বকে। আজও পৃথিবীর সিনেমাপাগলদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে এই মাস্টারপিস। মুক্তির পরের বছর একাডেমি অ্যাওয়ার্ড তথা অস্কারে গডফাদার দেখায় একচ্ছত্র আধিপত্য। ১৯৭২ সালে এ চলচ্চিত্রটি মুক্তির পরপরই সারাবিশ্বে ব্যাপক আলোচিত হয় এবং অস্কারে তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায়। পুরষ্কার না জিতলেও আল পাচিনো পায় সেরা পার্শ্ব অভিনেতার মনোয়ন। এর পরের বছরেই ১৯৭৩ সালে জেনে হ্যাকমেনের সাথে অভিনীত ‘স্কেয়ারক্রো’ চলচ্চিত্রটির জন্য পাচিনো অস্কারে সেরা অভিনেতা হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৭৪ সালে কপোলার গডফাদার সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। আল পাচিনোর পাশাপাশি রবার্ট ডি নিরোকে নিয়ে এবারও ব্যাপক ব্যবসা সাফল্য ও জনপ্রিয়তা পায় গডফাদারের দ্বিতীয় কিস্তি। আল পাচিনো ৩য় বারের মতো অস্কারের সেরা অভিনেতা হিসেবে মনোনীত হন। পাচিনো অস্কার না পেলেও পার্শ্ব অভিনেতার চরিত্রে পেয়ে যায় ডি নিরো। ১৯৭৫ সালে ‘ডগ ডে আফটারনুন’ চলচ্চিত্রের জন্য আল পাচিনো আবারও অস্কারের জন্য মনোনীত হন। এই নিয়ে টানা চতুর্থবার অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েও অধরা অস্কার তার হাতে ধরা দেয় না। ১৯৭৭ সালে ‘ববি ডেয়ারফিল্ড’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব নমিনেশন পেলেও দর্শকপ্রিয়তা কম পায় সিনেমাটি এবং বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ১৯৭৯ তে অভিনয় করেন ‘এন্ড জাস্টিস ফর অল’ সিনেমাতে, যা তাকে এনে দেয় আরো একটা একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের মনোয়ন।

আশির দশকে দুর্ভাগ্য

১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত স্কারফেস তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ব্রায়ান ডি পালমার ‘স্কারফেস’ সিনেমাতে কিউবার উদ্ধাস্তু, পরবর্তীতে ড্রাগলর্ড, টনি মন্টেনার চরিত্রে হাজির হয়েছিলেন তিনি। এই সিনেমার জন্যে তিনি যতটা প্রশংসিত ছিলেন ততটাই তিরষ্কৃত হন ওই সময়ে তার বাকি সিনেমাগুলোর জন্যে। একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ে ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ক্রুজিং, ১৯৮২ সালের ‘অথর! অথর!’ এবং ১৯৮৫ সালের ‘রিভলিউশন’। সবগুলো সিনেমাই ছিল ব্যবসায়িক ও সমালোচক দ্বারা তিরস্কৃত। চলচিত্রের জগতে গেলেও মঞ্চ ভুলে যাননি তিনি। উল্টো সময় পেলেই এভাবে মঞ্চের জগতে চলে আসতেন। তিনি ছিলেন শেক্সপিয়ারের অন্ধ ভক্ত। আর ভালোবাসতেন অপেরা। তাইতো চলচ্চিত্র থেকে চার বছরের বিরতি নিয়ে মঞ্চে ফিরে যান। তিনি ওয়ার্কশপ প্রডাকশনের ক্রিস্টাল ক্লিয়ার, ন্যাশনাল এনথামসহ অন্যান্য নাটকে অভিনয় করেন। জোসেফ পাপ আয়োজিত নিউইয়র্ক শেক্সপিয়ার ফেস্টিভ্যালে জুলিয়াস সিজার চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সময়ে ‘দ্য লোকাল স্টিগমাটিক’ নামের একটি নাটকের চলচ্চিত্রায়ন করেন। প্রধান চরিত্রে অভিনীত ৫০ মিনিটের চলচ্চিত্রটি ২০০৬ সাল পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। মঞ্চে তার সবচেয়ে সফল নাটক ছিল ডেভিড মামেটের আমেরিকান বাফেলো।

আবার প্রত্যাবর্তন

সেরা অভিনেতা হিসেবে পাওয়া অস্কার পুরষ্কার হাতে আল পাচিনো

১৯৮৯ সালে ‘সি অব লাভ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পর্দায় ফিরে আসেন। ১৯৯০ সালে আল পাচিনো অভিনয় করেন গডফাদার সিরিজের ৩য় চলচ্চিত্রে। নব্বইয়ের দশক আল পাচিনোর শক্তিশালী অভিনয় প্রতিভার উল্লেখযোগ্য দশক। এ দশকেই তিনি অভিনয় করেন ‘ফ্রাঙ্কি অ্যান্ড জনি ( ১৯৯১)’, ‘গ্লেনগ্যারি গ্লেন রস (১৯৯২)’, ‘সেন্ট অব অ্যা উইম্যান (১৯৯২)’, ‘কার্লিতোস ওয়ে (১৯৯৩)’, ‘হিট ( ১৯৯৫)’, ‘ডনি ব্রাস্কো (১৯৯৭)’, ‘দা ডেভিলস অ্যাডভোকেট (১৯৯৭)’ এবং ‘অ্যানী গিভেন সানডে (১৯৯৯)’ এর মতো আলোচিত চলচ্চিত্রে। ১৯৯১ সালে ‘ডিক ট্রেসি’তে অভিনয় করে প্রশংসিত হন পাচিনো। এর পর অভিনয় করেন দ্য গডফাদারের তৃতীয় চলচ্চিত্রে। তবে আল পাচিনো তার কাজের সবচেয়ে বেশি স্বীকৃতি পান ‘সেন্ট অব আ ওম্যান’ ছবিতে অভিনয় করে। ১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবির সুবাদে সপ্তমবারের মতো অস্কার মনোনয়ন পান এবং তালুবন্দি করেন নিজের প্রথম ও একমাত্র অস্কার পুরষ্কার। একই বছরেই ‘গ্লেনগ্যারি গ্লেন রস’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ট পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন। এক বছরে দুটি চলচ্চিত্রের জন্য দুটি বিভাগে অস্কার মনোনীত প্রথম অভিনেতা তিনি। ১৯৯৫ সালে মাইকেল মানের ‘হিট’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন।

অভিনয় এবং পরিচালনা

২০০০ সালে তিনি অভিনয় করেন ‘চাইনিজ কফি’ চলচ্চিত্রে। এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালনার কাজ শুরু করেন তিনি। যদিও এর আগে ১৯৯৬ সালে ‘লুকিং ফর রিচার্ড’ শিরোনামের একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মাণ করেন। ২০০৩ সালে ‘অ্যাঞ্জেল ইন আমেরিকা’ নামের একটি টিভি সিরিজে অভিনয় করেন। ২০০৭ সালে অভিনয় করেন সুপারহিট চলচ্চিত্র “ওশেন’স থারটিন”-এ। ২০১০ সালে টিভি সিনেমা ‘ইউ ডোন্ট নো জ্যাক’-এ ড. জ্যাক কেভোরকিয়ান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অ্যামি অ্যাওয়ার্ডস ও গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস পান। ২০১১ সালে ‘ওয়ার্ল্ড স্যালোমি’ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে ‘স্যালোমি’ শিরোনামের ২য় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

প্রায় পাঁচ দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে করেছেন অগণিত চরিত্র। ‘গড ফাদার’ সিরিজের বিচক্ষণ মাফিয়া সম্রাট, ‘স্কারফেস’ এর ড্রাগলর্ড টনি মন্টেনা, ‘আমেরিকান বাফেলো’ ছবির অসহায় শিক্ষক, ‘ডগ ডে আফটারনুন’-এর ব্যাংক ডাকাত, ‘গ্লেনগারি গ্লেন রস’ ছবির পটু বিক্রয় কর্মী, ‘হিট’ এর অদম্য ডিটেকটিভ, ‘সেন্ট অফ আ ওমেন’ এর বদমেজাজি বুড়ো কর্নেল, ‘সারপিকো’তে আদর্শবান পুলিশ, ‘ডনি ব্রাস্কো’-তে হিটম্যান, ‘ডেভিল’স অ্যাডভোকেট’ এ তো তিনি স্বয়ং শয়তান— এমন হাজারো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শক-সমালোচকদের মুগ্ধ করেছেন এ জাদুকর।

এছাড়া আল পাচিনোর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে— মি. নাটালি, দ্য পেনিক ইন নিডল পার্ক, এ্যান্ড জাসটিস ফর অল, স্কারফেইস, সি অব লাভ, ডিক ট্রেসি,দ্য ইনসাইডার, দ্য রিক্রুট, ইনসোমনিয়া, জ্যাক এ্যান্ড জিল ইত্যাদি।

বেঁচে থাকুক আল পাচিনো, বেঁচে থাকুক শতবর্ষ। শুভ জন্মদিন।