খুনি শহরে উন্নয়নের ‘গজব’ ও লাশের মিছিল

খুনি শহরে উন্নয়নের ‘গজব’ ও লাশের মিছিল

আমাদের উন্নয়নের অসুখে ধরেছে। এই অসুখ এখন মহামারির রুপে নিয়মিত বিরতিতে হাজির হচ্ছে। যেটা আবার ভয়াবহতায় প্রায়ই ‘গজবের’ মাত্রা পেয়ে যায়। এখনকার আলোচনার প্রেক্ষিত সাভারের ‘রানা প্লাজায়’ আজ থেকে পাঁচ বছর আগে যে গণখুনের ঘটনা ঘটেছে তাকে কেন্দ্র করেই।

বলাই বাহুল্য, এই ঘটনার শোকে মানুষ মাত্রই বিহ্বল হবেন। আমি শোককে আপাতত ছুটি দিতে চাই। যেখানে আমরা সচেতন ভাবে, নিয়ম করে, শতমুখী প্রস্তুতি নিয়ে খুনের সব আয়োজন করে রেখেছি সেখানে এইরকম ঘটনায় নিয়মিত শোক প্রকাশও কৌতুকে পরিণত হয়েছে। আমরা আর এই ধরণের কৌতুকে কান দিতে চাই না।

আলবেয়ার কামু তাঁর ‘দি রেবেল’ বইটার ভূমিকার শুরুতেই যেমন বলেন, এখানে অপরাধের জন্য অধ্যবসায় ও অপরাধের যুক্তি তৈরি হচ্ছে। এবং যারা এই ধরণের অপরাধের রাজত্ব তৈরিতে নিরলস কাজ করে চলেছেন এরা বেবুঝ নন। এরা খুবই পাকনা, মানে দক্ষ। অপরাধ এবং অপরাধী যখন নিজেকে জাস্টিফাই করে, নানান যুক্তি তৈরি করে তখন এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

বিভ্রান্তির ভেতর নিরবে ক্ষয়ে যেতে থাকে প্রতিবাদের প্রবল প্রতিজ্ঞা। তখন খুন ও অত্যাচারের সংস্কৃতিতে মানুষ অভ্যস্ত হতে থাকে, এটাই এখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি। ফলে আমাদের এখানে প্রতিদিন যেসব রাজনৈতিক সংঙ্কটের বয়ান আমরা শুনি তার কোন বাস্তবিক উপযোগিতা নাই। কারণ নৈতিক সংঙ্কটের সরব বিস্তার নিয়ে আমাদের টেনশন এখনও দেখা যায় না।

ছয়তলার অনুমতি নিয়ে নয়তলা করার সব ফাঁক ফোঁকর রেখে দিব! তারপর গণখুনের সামনে দাঁড়ায়ে শোক প্রকাশ করব! নানান দল ও সংগঠন আহাজারি করবে, শোক জানাবে। নেতারা সংবাদ সম্মেলন করবেন। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করবেন। মধ্যবিত্ত প্রাণ শোকে কাতর হবে, মিডিয়ায় প্রকৌশলীদের হিড়িক পড়ে যাবে। তিনারা টেকনিক্যাল ব্যাখ্যা দিবেন। ব্যাবহারবাদী, পারোকোয়াল বামপন্থি দলগুলা শ্রমিক দরদী কর্মসূচি দিবেন। মালিককে যথারিতি খুঁজে পাওয়া যাবে না ঘটনার পর থেকেই। এবং মালিক হবেন, স্বাভাবিক নিয়মেই ক্ষমতাসীনদের ঘরের লোক। সাংসদ তাকে পালাতে সহযোগিতা করবেন ইত্যাদি নানা কর্মকান্ডকে নিশ্চিত ভাবেই কৌতুকের অংশ হিসেবেই ধরতে হবে।

অন্যদিকে মিডিয়া স্বাভাবিক ভাবেই– দুর্ঘটনা, বিপর্যয়, ট্রাজেডি বা ভয়াবহতা বোঝানোর মত কোন শব্দ ব্যবহার করবে। এর ফলে আমরাও ঘটনার হৃদয়বিদারকতা কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় নিব। বেদনা কাটিয়ে উঠতে উঠতে আবার ঘটে যাবে আর একটা ‘ট্রাজেডি’।

ফলে মিডিয়ার এই সব ভাষ্যের আড়ালে যে ব্যবস্থার কারণে এই রকম ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা ঘটে তার ঠিকুজিও আমরা ধরতে পারব না। দেশ নির্বাচন, ক্ষমতা, জামাত, হেফাজত ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে। গণতন্ত্রের আকাঙ্খায় কাতর হয়ে আমরা ভোট দিতে পারব কিনা সেই আশঙ্কা বা আশায় দিন পার করতে থাকব। বাড়তে থাকবে আমাদের উন্নয়ন অকাঙ্খা। গ্রামকে বানাব শহর মুখী। স্থাপনাই হবে উন্নয়নের নিদর্শন। এই যখন অবস্থা তখন, শহর মানেই খুনের রাজত্ব হতে বাধ্য। সেটা ঢাকা, সাভার বা ময়মনসিংহ যেখানেই তা করা হোক না কেন।

এখন তো ভূমিকম্পের অতঙ্কের মধ্যে নাগরিকদের ঘুমাতে যেতে হয়। এবং ঘুম থেকে উঠে আবার জীবনের দৌড়ে শামিল হতে হয়। এতো ভোগাকাঙ্খায় সারাদিন আতঙ্কিত হওয়ারও সময় পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে ঝাঁকি দিলেই কেবল নিজেকে খুব অসহায় ফিল করেন নাগরিকগণ। যা হোক এখানে কথা বলব রানা প্লাজা নিয়ে। অবশ্য এই লেখাটা রানাপ্লাজা যে দিন ধসে পড়ে তার কয়েক ঘন্টা পরেই লেখা হয়েছিল। সেই লেখাই প্রায় হুবহু তুলে দিচ্ছি।

এই সব গণখুনের ঘটনা আমাদের একটা ঐতিহ্যতে পরিণত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজউকের হিসেবেই ভবন ধস ও হেলে পড়ার ৫০ টি ঘটনার রেকর্ড আছে। ২০১০ সালে বেগুনবাড়িতে আব্বাসউদ্দিনের ৫ তলা বাড়ি পাশের একটি বস্তিতে হেলে পড়লে ২৫ জন মারা যান। ২০০৬ সালে ২৪ ফেব্রয়ারি তেজগাঁওয়ে ফিনিক্স ভবন ধসে ২১ জনের মৃত্য হয়। ২০০৫ এ ফেব্রিক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ ও স্পেকট্রাম সোয়েটার ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এর ৮ তলা ভবন ধসে ৬২ জন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্য ঘটে।

গত ২০১২ সালের নভেন্বরে তাজরিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুনে পুড়ে মারা যান ১১০ জন। হাতের কাছে পাওয়া এসব তথ্য খুবই অপ্রতুল। এসব ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা অগনিত। নিহতের সংখ্যাও লুকানো হয়। এত এত হত্যার নিয়মিত মহড়া দেখে আমরা মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। একে উপড়ে ফেলার কোন লক্ষণ এখনও আমাদের সমাজে হাজির করতে পারিনি। অন্যদিকে রানা প্লাজার ঘটনাটা হত্যাকান্ড হিসেবেই দেখতে হবে।

আগে থেকেই ভবনটিতে ফাটল ছিল। কারখানা ছুটিও দেয়া হয়েছিল। মালিক সোহেল রানা, সাভার থানার যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বলেছেন, এমন ফাটল কোন ব্যাপার না। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ঘটনার সাথে সাথেই মিথ্যাচার করেছেন। তিনি বলেছেন, আগে থেকেই সেখান থেকে নাকি সব লোককে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। তাহলে যে হাজার এর উপর মানুষের লাশ বের করা হলো, হাজার হাজার আহত মানুষ কাতরাচ্ছিলেন তারা কি প্রধানমন্ত্রীর কছে মানুষ ছিলেন না?

অন্যদিকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকদের বাধ্য করা হয় কাজে যোগ দিতে। বাধ্য করা হয় তাদের এই মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে। এটা হত্যাকান্ড! এর বিচার তো হতেই হবে। আরও যেটা জরুরি তা হল খুনি শহরে উন্নয়ন উম্মত্ততা রোধ করা। ছলে-বলে-কৌশলে ঘুষ, রাজনৈতিক প্রভাব, ইত্যাদি নানা প্রক্রিয়ায় আমরা যেভাবে মুনাফামুখী নীতির দাসে পরিণত করেছি তাতে শহর হয়ে উঠছে মৃত্যুকুপ। গ্রামগুলোও ধুকছে উন্নয়নের অসুখের ভয়াবহ ভাইরাসে।

একটি দেশে যখন কোন প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক হয় না। রাষ্ট্র যখন কেবল ৫ বছরের জন্য লিজ নেবার মত একটা টেরিটরিতে পরিণত হয়। এর মধ্যে বিদেশি পুঁজি দেখভাল করার জন্য কতিপয় পাওয়ার এলিট ও বিপুল ননপাওয়ার এলিট মিলে দেশকে উন্নয়ণের জোয়ারের জোসে রেখে মানুষকে বেধে রাখে সংখ্যার প্যাচে, তারাই এই খুনি শহরকে ক্রমেই দানবীয় করে তুলছেন।

একটি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি আকারে গড়ে উঠবার শর্তকে আমরা এত দিন পাশ কাটিয়ে নিজেদেরকে গুটিকয়েক মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি। চেতনার ব্যবসার বলি হয়েছি আমরা নানা ভাবে। এই সব ব্যবসায়ীরা উন্নয়ন, উন্নয়ন বলে যে বয়ান দাতাগোষ্ঠী এবং তাদের স্থানীয় দালালদের স্বার্থের দিক থেকে নির্ধারণ করেছে। আমাদের ওপর কৌশলে চাপিয়ে দিয়েছে সে সবকেই আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভুয়া বাকোয়াড়িতে গণবলাৎকারের সব পথ পরিস্কার করেছি এতদিন। নিজেদের পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রকৃতির সাথে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক ভুলে গেছি।

নিজেদের উৎপাদনের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা ভুলে গেছি আধুনিকতার ধাঁধালো তুড়িতে। আমরা নিজেদের হারিয়ে ফেলেছি। আমরা নিজের অজান্তে গণকবরে ঢুকে পড়েছি। সেতু নির্মাণ থেকে শুরু করে, ভবণ নির্মাণ সবকিছুতেই দাতা স্বার্থ দেখভাল ও ভাগ ভাটোয়ারার পথ পরিষ্কার করার জন্য তিনারা তো বটেই, মিডিয়াও আমাদের সভ্যতা বিরোধী উন্নয়নের বয়ানে বুদ করে ফেলেছে। আমরা নিজেদের চিন্তা ও ইতিহাসের মধ্য থেকে নিজেদের উপযোগি কোন নীতির দিকে আগাতে পারি না। আমরা খুনিদের নীতিকেই উন্নয়ন বলে ধরে নেই।

এই কাজের সবচেয়ে বড় দোসর হল আমাদের কুৎসিত মনের সুশীল নামধারী ঘাতকরা। ফলে আমরা নিজেদের প্রজ্ঞার দিকে যদি মনযোগী না হই তাহলে রানা প্লাজা ধসের মত উন্নয়নের গজব থেকে আমরা রক্ষা পাব না। বলাই বাহুল্য গজব কথাটা ভয়াবহতার তান্ডব বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের গোটা শহর এক দশকের মধ্যে ভূমিব্যসায়ীর আওতায় চলে গেল। তারা এর গাল ভরা নাম দিল ডেভেলপার কোম্পানি। তারা কিসের ডেভেলপার। কী তারা ডেভেলপ করে।

বিল্ডিং বানালেই ডেভেলপ করা হয়ে যায় না। আর নয়া মধ্যবিত্ত ব্যাপক হারে ফ্ল্যাটের ক্রেতা হয়ে উন্নয়নের সৈনিকে পরিণত হল। এই লাগাম ছাড়া ডেভেলপারের নীতিটা কি? আমাদের পরিবেশ, প্রকৃতিকে তারা ড্রয়িংরুমে ডুকিয়ে দিল। ফলে অপরিকল্পিত ভাবে ভবন ধসের ঘটনাকে দেখে আৎকে উঠার কিছু নাই। গজবের নমুনা মাত্র শুরু। ভয়াবহতা সামনে আরও বাকি আছে। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে একটা কথা আছে , তা এখনও আমরা টের পাচ্ছি না। গোটা দেশের মানুষকে দিন দিন কঞ্জ্যুমার বানানো হচ্ছে।

শ্রমিকদের মুলা ঝুলানো হচ্ছে নিত্যদিন। বাংলাদেশকে আমরা সবার জন্য বাসযোগ্য একটা রাষ্ট্র না বানিয়ে, তার জন্য কোন সংগ্রামে সামিল না হয়ে, এই ভু-অংশকে দেশি-বিদেশিদের বাজারে পরিণত করেছি। উন্নয়ন বলতে বাজারের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকুই। শুধু দোহাইটা দেয়া হয় জনগণের। ফলে বৈষম্য দিন দিন বাড়ে। উল্টাদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ে উন্নয়নের জিকির। আমরা ফাঁদে পড়েছি। এই ফাঁদ এখন গজবের আকারে নেমে আসছে আমাদের উপর।

আমরা ডিজিটাল ডিগবাজিতে এমন বুদ হয়ে আছি, ডিজিটাল বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ। সরকার করে গণহত্যা। বুদ্ধিজীবীরা করে গণহত্যার মত উৎপাদন। মধ্যবিত্ত নিজেদের শ্রেনী ও সাংস্কৃতিক ঘৃণার আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে প্রান্তের মানুষের জীবন, বিশ্বাস, ধর্মবোধ। আমাদের হুশ কবে হবে? উন্নয়ের ফাঁপা বুলি কেন আমরা ধরতে পারি না।

যে দেশে বিশাল বিশাল ভবন তৈরির অনুমতি দেয়া হয়, সে দেশে কোন ভবন ধসলে আমরা দেখি কি, হেচকো ব্লেড দিয়ে দেয়াল কেটে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। দেয়ালের নিচে চাপা পড়া মানুষ পানি পানি বলে চিৎকার করতে করতে মারা যায়। ব্লেডের ধার শেষ হয়ে যায়। উদ্ধার করতে করতে লাশের গন্ধে এলাকায় টেকা দায় হয়ে যায়। এই তো ডিজিটাল দর্শন এর ফল দাঁড়িয়েছে। এটা কার উন্নয়ন? আমরা কেন এসব ভেল্কি বুঝতে পারি না।

এই গণখুনের ঘটনা নিয়ে যারা কৌতুক করতে পারে তাদের কাছে আপনি আর কি প্রত্যাশ্যা করতে পারেন? এখন ক্ষতি পূরণের দাবি নিয়ে হৈচৈ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে লাশই পাওয়া যায় না সেখানে লাশের জন্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোন আশা দেখা যাচ্ছে না।

সেই দিনের ঘটনাটা একটু মনে করে দেখুন, গোটা শহরের পথে হাজার হাজার অ্যাম্বুলেন্স ছুটছে। লাশ আনতে ছুটছে সাভারে। ফিরছে লাশ নিয়ে, ফিরছে আহত শ্রমিককে নিয়ে। পথে আছে ভয়াবহ জ্যাম। জীবন তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে, গাড়ির চাকার সাথে বাঁধা পড়ে আছে জীবন। চাকা চলছে না, জীবনও থমকে আছে মৃত্যুর দুয়ারে। হুইসেলের আওয়াজ শহর কাঁপিয়ে দিচ্ছে। গোটা শহর লাশময়। হাসপাতালগুলোতে আহত মানুষের গোঙানো বাতাসকে ভারি করে তুলছে। শতশত তরুণ ছুটছে রক্ত দিতে। গোটা শহর জুড়ে লাশের গন্ধ। লাশের মিছিলে আমরা খাচ্ছি-দাচ্ছি, শহরে চলছে জীবন জীবিকার সংগ্রাম। এই আমার শহর। খুনি শহরে একটি প্রাণীও আজ নিরাপদ নয়।

রানা প্লাজা ভয়াবহতার ৫ বছর পরেও অনেক পরিবার স্বজনদের লাশ বুঝে পান নাই। আর ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে চলেছে তছরুপের উৎসব। আর সেই কুখ্যাত রানা। সরকারি দলের নেতা হওয়ায় বিচারের নামে কালক্ষেপন চলছেই। বিচার এখন অবশ্য কেউ অবশ্য আশাও করে না। কারণ বিচার তো এখন কল্পনা। নামমাত্র তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে একটি মামলায়, তার বিরুদ্ধে অন্য ১৩টি মামলার রায় হয়নি এখনো। দেশের আইন-আদালত জনগণের পক্ষে নাই -এটা সবাই জানেন।

কেন এমনটা হচ্ছে? নিয়ম নীতির তোয়াক্কা যাদের নাই, মানুষের জানের প্রতি বিন্দুমাত্র দরদহীনরাই বানায় এমন দানবীয় শহর। উন্নয়নের নামে গড়ে ওঠে বিশাল ভবন। সেই ভবন গজব হয়ে ধসে পড়ে জাতির জীবনে। এই খেলা আর চলতে পারে না। পাল্টা গজব তৈরি করতে হবে। ধসিয়ে দিতে হবে খুনের প্রিন্সিপাল কলাম, শক্ত ভিত। আর একবারও যেন উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোলে আকাশ-বাতাস ধ্বনিত না হয়। এখনই সময় সব জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইকে এগিয়ে নিবার।

 

(লেখাটির প্রথম খসড়া ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ার দিন সন্ধ্যায় লেখা হয়। সংক্ষেপে সম্পাদনা করে সেসময় একটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়। কিছুটা পরিমার্জন করে আবার জবান এর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।)