১৬ বছরের যে ছাত্রীর ডাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে ক্লাস বন্ধ হয়েছিল

১৬ বছরের যে ছাত্রীর ডাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে ক্লাস বন্ধ হয়েছিল

গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা হাইস্কুলে এক বন্দুকধারীর হামলায় ১৭ জন নিহত হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গত বছর বন্দুকধারীদের সহিংসতা বিরোধী প্রতিবাদে নামেন ১৬ বছর বয়সী স্কুলচাত্রী লেন মারডক। তার মতে, সরকার বন্দুকধারীদের সহিংসতা প্রতিরোধে উদাসীন।

একই সাথে তিনি প্রতিবাদের মাধ্যম হিসাবে অনলাইন পিটিশনের আহবান করেছেন। তিনি ছাত্র ছাত্রীদেরকে তার সাথে প্রতিবাদে অংশগ্রহণের জন্য আহবান জানাতে থাকেন। বিশেষত, কলম্বিয়ান সহিংসতার ১৯ তম বার্ষিকী ২০শে এপ্রিলকে কেন্দ্র করে তিনি সোচ্চার হয়ে ওঠেন।

১৯৯৯ সালের ২০শে এপ্রিল দুইজন শিক্ষার্থী তাদের স্কুলের ১২ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে বন্দুকের গুলিতে হত্যা করে এবং শেষে নিজেরাও আত্মহত্যা করে।

মারডক তার অনলাইন পিটিশনে লিখেছেন, ‘অধিকাংশ কিশোর-কিশোরীর ভোট দেয়ার অধিকার নেই, তাই সরকার আমাদের কথার গুরুত্ব দিতে চান না’।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমেরিকার ভবিষ্যত রক্ষা করার জন্য কিশোর-কিশোরীদের উচিৎ তাদের মনের কথা বলা এবং তাদের হতাশাকে প্রতিবাদে রূপ দেয়া। এর জন্য এখনই যথার্থ সময়’। তার এই আহবানে মানুষ কতটা সাড়া দেবে তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন মারডক।

পার্কল্যান্ড হামলার দুই মাসের মধ্যে ‘ন্যাশনাল স্কুল ওয়াকাউট’ নামে প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করে এই কার্যক্রম শুরু করেন। দ্রুতই এই কার্যক্রমে আড়াই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং ২০শে এপ্রিল তারা যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মঘটের ডাক দেয়।

পরে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং তাদের সমর্থকরা শুক্রবারের এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করে এবং ক্লাস বন্ধ রাখে।

মারডকের বর্তমান বয়স ১৬ বছর। ইতিমধ্যেই তিনি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে তরুণদের কাছে সুপরিচিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। মারডকের বাসা রিডজিফিল্ড এলাকায়, সেখানকার একটি স্কুলকে তিনি ১৯৬০ সালের ছাত্র আন্দোলনের মত ধর্মঘট পালনের স্থান হিসাবে বেছে নিয়েছেন।

তার মতে, ‘তিনি অনুভব করছেন যে, এই ধর্মঘট যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদেরকে সচেতন করবে এবং তরুণদের ভোটাধিকার প্রদানের দাবিকে শক্তিশালী করবে’।

এই প্রতিবাদী ধর্মঘট ও র‍্যালি এনআরএ’র (যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন) সাথে ব্যবসা রয়েছে এমন ব্যবসা প্রতিষ্টানগুলি বয়কটের আন্দোলনের সাথেও কাজ করে। এটা রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকেও সচেতন করে তুলছে। কেননা, আগামী নভেম্বর মাসের নির্বাচনে অনেক তরুণ ভোটার প্রথমবারের মত তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। সম্প্রতি তারা ভোটার তালিকায় স্থান পেয়েছেন।