ধনীদের দেশত্যাগে ‘এক্সিট ট্যাক্স’ বসাচ্ছে ভারত

ধনীদের দেশত্যাগে ‘এক্সিট ট্যাক্স’ বসাচ্ছে ভারত

কয়েক বছর ধরে দেশত্যাগ করছেন ভারতের কোটিপতিরা। ২০০০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় ৬১ হাজার ভারতীয় কোটিপতি দেশ ছেড়ে বাসা বেঁধেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের মত সমৃদ্ধশালী দেশগুলোতে। ভারত সরকার আশঙ্কা করছে, আয়কর থেকে অব্যাহতি পেতেই ধনীদের দেশত্যাগের হার বাড়ছে।

কর ফাঁকির দেয়ায় পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে ভারতের বহু ধনীর নাম এসেছে। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ১২১ জন। তবে এটিই দেশত্যাগের একমাত্র কারণ নয়। সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, বিনিয়োগের ভালো সুযোগ, করের নিম্নহারও বিবেচনায় নিচ্ছেন দেশত্যাগীরা।

মর্গান স্ট্যালেনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে ৭ হাজার কোটিপতি ভারত ছেড়েছেন। গত চার বছরে দেশ ছেড়েছেন সব মিলিয়ে ২৩ হাজার কোটিপতি। ক্রেডিট সুইসের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ভারতে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটিপতি ছিলেন।

আইন আছে, দেশত্যাগ বা বহির্গমন করতে হলে সরকারকে কর দিতে হবে। কারণ কোনো নাগরিক যখন স্থায়ীভাবে অন্য দেশে চলে যান তখন সরকার ধরে নেয়, তার সম্পত্তির প্রতি স্বত্ব ত্যাগ করেছেন। এটিকে ‘হস্তান্তরযোগ্য’ও বলা হয়।

দেশত্যাগে সরাসরি একটি প্রভাব রয়েছে ভারত সরকারের আয়কর ও রাজস্বের ওপর। তাই আয়কর সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজস্ব মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া দি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি) দেশত্যাগীদের জন্য ‘এক্সিট ফি’ নির্ধারণ করতে একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করেছে। এছাড়া প্যানেল রাজস্ব হ্রাস বন্ধ ও জনসাধারণকে দেশত্যাগে নিবৃত্ত করতেও কাজ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

ইতোমধ্যে ওই খসড়া আইন নিয়ে ভারত সরকারের উচ্চ মহলে আলোচনা হচ্ছে। খুব শিগগিরই আইনটি পাস হতে পারে। আর এটি পাস হলে কোটিপতিরা ইচ্ছা করলেই দেশত্যাগ করতে পারবেন না। তাকে এক্সিট ফি দিয়ে চলে যেতে হবে। এছাড়া সরকারকে তার সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে যেতে হবে। পরবর্তীকালে হয়তো তারা আর নিজের সম্পদ পাবেন না অথবা চিরতরে দেশে আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। ধনীদের দেশত্যাগ বন্ধে ভারত সরকার এসব পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।