ভারতে ১৩২ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১৭ কোটি মুসলমানের বসবাস। এটা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী। ২০১৪ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের অধিকাংশ এলাকায় মুসলমানদের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণ ও সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যায়। মুসলমানদেরকে গরুর গোস্ত খাওয়া বা গোহত্যার অভিযোগে অনেকবার কট্টর হিন্দুদের হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
নিজ দেশের এ ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ক্রমবর্ধমান মুসলিম বিদ্বেষ, ভারতের তরুণ মুসলিম পণ্ডিত ও সাংবাদিক নিয়াজ ফারুকীকে তার প্রথম বই ‘এন অর্ডিনারি ম্যানস গাইড টু র্যাডিকালিজম : গ্রোয়িং আপ মুসলিম ইন ইন্ডিয়া’ লিখতে বাধ্য করে।
মূলত স্মৃতিকথা নির্ভর এই বইটিতে ফারুকী বলেছেন, ভারতবর্ষে মুসলমানদের সম্পর্কে অনেক কল্পকাহিনী ও মিথ প্রচলিত আছে, যা তিনি পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন। হিন্দু ও মুসলমানসহ অন্যান্য সম্প্রদায়গুলোর মধ্যকার বৈচিত্র্য এবং তাদের বসবাসের বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। ঘটনাবলীর উদাহরণ হিসাবে তিনি ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা মধ্যযুগীয় স্থাপত্য বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং ২০০৮ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় পুলিশি এনকাউন্টার, যা ভারতীয় রাষ্ট্রের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ককে পরিবর্তন করে দিয়েছে– এসব তুলে ধরেছেন।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা, ভারতীয়দের মূলধারায় এমন একটি বিভাজন তৈরি করেছে, যা উগ্রপন্থি হিন্দু গ্রুপ ও ভারতীয় মুসলমানদের মানসিকতা গভীরভাবে আলাদা করে দিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি অবিশ্বাসী করে তুলেছে।
দিল্লি সংঘর্ষের ঠিক ১০ বছর পরে এই বইটি প্রকাশিত হলো। লেখক এই বইতে পাঠকদের জন্য বিতর্কিত এনকাউন্টারের সংঘটিত-অসংগঠিত সকল বিষয়ে স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন, যে ঘটনার পরে এখানকার মুসলমানদের ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল’ হিসাবে সরলীকরণ করে নানাবিধ অত্যাচার এখনও অব্যাহত রয়েছে।
স্মৃতিকথায়, বিহার রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি দূরবর্তী গ্রামের উদ্বিগ্ন পরিবেশের কথা উঠে এসেছে, যেখানে লেখক নিয়াজ ফারুকী বেড়ে উঠেছেন। লেখকের দাদা চাইতেন, বড় হয়ে যেন তিনি বিভিন্ন উৎসের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে– কবির, আল্লামা ইকবাল, আমির খসরু, গুরু নানক, চাণক্য অথবা আরও যারা বড় লেখক আছেন, তাদের মত বড় লেখক হন।
‘২০ বছর বয়স পর্যন্ত আপনি এখানকার পরিচয় ও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জটিলতা বুঝতে পারবেন না। এই বইয়ে আমি তুলে ধরেছি, ২০০৮ সালের এনকাউন্টার, রাষ্ট্রের প্রতি আমার বিশ্বাস কীভাবে নষ্ট করে দিয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, এখানকার অনেক মানুষের বিশ্বাস আমার মতই নষ্ট হয়ে গিয়েছে’, আল জাজিরাকে বলছিলেন ফারুকী।
নয়াদিল্লিতে লেখক নিয়াজ ফারুকীর সাথে কথা হয় আলজাজিরার সাংবাদিক নেহাল আহমদের। সাক্ষাৎকারটি জবানের পাঠকদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করেছেন নাঈম আহমাদ।
নেহাল আহমদ : একজন মুসলিম হিসাবে ভারতে বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা কেমন?
নিয়াজ ফারুকী : এটা খুবই জটিল প্রশ্ন। অল্প কথায় এর উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা আপনাকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লিখতে বাধ্য করবে। অথবা যা মুসলমানদেরকে তাদের সামাজিক ব্যাক্তিপরিচয় বর্জন করতে বাধ্য করবে।
নব্বইয়ের দশকে এবং ২০০০-এর দশকে ভারতে বেড়ে ওঠা বিভিন্ন কারণে বেশ জটিলতাপূর্ণ ছিল– হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এ সময়ে প্রথমবারের মত ক্ষমতায় এসেছিলো। তা স্বত্বেও, আমার প্রজন্ম তাদের আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। বিজেপি দলীয় বা এর সংস্পর্শের লোকেরা একটি ডিসকোর্স আবিষ্কার করেছে, যেখানে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের ধর্মান্ধতার জায়গাটা অতিক্রম করতে পারেনি।
এটা আমাদের মত তরুণ মুসলিমদের জন্য দুর্ভাগ্য– যেখানে আপনার আত্মপরিচয় ও আত্মপরিচয়ের নিরাপত্তার মাঝখানে একটি বিভাজন রেখা আগে থেকেই আঁকা আছে।
আপনি কেন মনে করেন মুসলমানরা হিন্দুত্ববাদী দলগুলির দ্বারা আক্রান্ত হবার হুমকির মুখে রয়েছেন?
ফারুকী : মোদি আমলের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যেও মুসলিম বিদ্বেষী ধর্মান্ধতা এক ধরনের স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। এটি সংবিধানের ওপর হামলা, মুসলিম সম্প্রদায় সাংবিধানিক অধিকারের বেশি কিছু চায় না। মুসলমানরা বিশেষ কোন সুযোগ-সুবিধা চায় না, তারা চায়, যে অধিকার তাদের সাংবিধানিকভাবে দেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদীদের টিকে থাকার জন্য একটি শত্রুপক্ষ দরকার। সুতরাং এখন মুসলমানরা তাদের প্রধান শত্রু।
আপনার বইতে উল্লেখিত ‘র্যাডিকেল’ শব্দ দ্বারা আপনি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
ফারুকী : শিরোনামে র্যাডিকালিজম শব্দটি ব্যবহার করার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমত, আমার এলাকায় ২০০৮ সালে পুলিশ গুলি চালানোর পর মিডিয়ার প্রতিবেদনে তা খুব কম গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করা হয়। তারা এলাকার এমন একটি চিত্র তুলে ধরেছিল, যেন এটি একটি চরমপন্থি সন্ত্রাসপূর্ণ এলাকা। এবং এখানকার বাসিন্দারা র্যাডিকাল ও সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল।
সুতরাং, আমার পয়েন্ট হচ্ছে, আপনি যদি আমাকে র্যাডিকাল বলে থাকেন, তাহলে আমি নিজেই নিজেকে র্যাডিকাল বলে পরিচয় দিব। এখন এই সমস্যার মোকাবিলা করুন। কারণ আমি যে নির্দোষ এটা এবং আমার দেশপ্রেমের কথা বলতে বলতে ক্লান্ত।
এটা ক্ষোভের জায়গা থেকে বলা এক ধরণের প্রতিক্রিয়া।
বইয়ে আমি বলেছি, মুসলমানদের ‘জাতির শত্রু’, ‘পাকিস্তানি’ ও ‘সন্ত্রাসী’ ইত্যাদি নামে ডাকা হয়
আপনি বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও বাটলা হাউজ এনকাউন্টারের কথা উল্লেখ করেছেন। আপনি কেন আলোচনার জন্য এই ঘটনা দুটিকে বেছে নিয়েছেন?
ফারুকী : ১৯৯২ সালের (বাবরি মসজিদ ধ্বংস) ঘটনা ছিলো খুবই দুঃখজনক এবং ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি মূলত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংবিধানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, যে সংবিধান আমাদের (মুসলমানদের) নিরাপত্তা ও সমতা প্রদান করে। সহজাতভাবে এখানে নিশ্চয়তা ছিল আমাদের মর্যাদা, আমাদের সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় স্থাপনাসমূহ রক্ষার ব্যাপারে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস ছিল বিশ্বাসঘাতকতা, যা আমাদের আস্থাকে নষ্ট করে দিয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সামান্য কিছু ইতিবাচক দিকও বের হয়ে এসেছে। মুসলমানদের তালিকাভুক্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, তারা তাদের অধিকার দাবি করতে শুরু করেছে এবং তারা তাদের নেতাদের প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। এটাকে অনেকটা মুসলিম সমাজের ‘রাজনৈতিক’ হয়ে ওঠার মত ব্যাপার, যা সমাজে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছে।
যখন বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়, তখন কী ঘটে যাচ্ছিলো তা অনুধাবন করার বিবেচনায় আমরা খুবই ছোট ছিলাম। ঘটনাটি ছিলো এমন যে, তারা আমার এলাকায় ব্যাক্তিগত পর্যায় পর্যন্ত গুলি করে, যা আমার রাজনৈতিক হয়ে ওঠার বড় কারণ, এবং আমি নিশ্চিত যে এটি আরও অনেক মুসলমানদের জন্যও সত্য।
আপনি জামিয়া নগরের কথা বলেছেন, যেটি নয়া দিল্লির বিশাল মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। যেটাকে আপনি ‘গোপন আস্তানা’ বলেছেন, বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করুন।
ফারুকী : আমি ব্যঙ্গাত্মক কারণে অধ্যায়গুলির জন্য অনুরূপ নাম ব্যবহার করেছি। যখন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয় তখন প্রায়ই এই ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়। ২০০৮ সালের পুলিশি গুলির প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলাম আমি। অথচ পুলিশ এক্ষেত্রে ‘সন্ত্রাস’, ‘গোপন আস্তানা’, ‘অস্ত্রের গুপ্ত ভান্ডার’, ‘গোপন বাহিনী’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করেছিল, এখন পর্যন্ত করে যাচ্ছে। যখন তারা আমার এলাকা সম্মন্ধে এসব পরিভাষা ব্যবহার করে, তখন আমি হৃদয়ে আঘাত পাই এবং এটা হজম করতে আমার কষ্ট হয়।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমি যে এলাকায় বসবাস করছিলাম, সেখান রাতভর আমি ভয়াবহ অবস্থা দেখছিলাম। আমি আমার স্মৃতি থেকে আমার বইয়ে তুলে ধরেছি। সুতরাং আমি আমার বাসার পরিচয় তুলে ধরেছি। এখানে আমি আমার বাল্যকালের স্মৃতি থেকে পাওয়া ‘গোপন আস্তানা” শব্দটি প্রয়োগ করেছি। যখন আমি আমার দাদুর কাছ থেকে দেশপ্রেম ও দেশের জন্য সংগ্রাম শিখেছিলাম। আমি এটাকে বলি ‘স্মৃতিভাণ্ডার’ বা তেমন একটা কিছু। ১৯৯৭ সালে আমি জামিয়া নগরে আসি এবং এই এলাকাকে আমার সাথে সাথে বেড়ে উঠতে দেখি। ২০০২ সালে গুজরাটের গণহত্যা এই এলাকায় জনসংখ্যা-বিষয়ক (ডেমোগ্রাফিক) পরিবর্তন ঘটায়। এর আগে জামিয়া নগর নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে পূর্ণ ছিল এবং ছোট ধরণের শিল্পের সাথে সাথে জনবসতি ছিল। কিন্তু ২০০২ সালে ধনী মুসলমানদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়, যারা দিল্লির অন্যান্য অংশের উপনিবেশগুলিতে যৌথভাবে বসবাস করতেন। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মুসলিমদের শক্তি কমানোর জন্য এমনটা করা হয়। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মধ্য দিয়ে যা শুরু হয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে তা সম্পন্ন করা হয়।
নরেন্দ্র মোদির শেষ চার বছর সংখ্যালঘুদের জন্য কেমন কাটলো?
ফারুকী : মন্ত্রীসভার মন্ত্রীরা এবং বিজেপি সরকারের অন্যান্য নেতাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা। তারা সংখ্যালঘুদের দেশবিরোধী ও সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করে থাকেন। গরুর গোস্ত খাওয়ার গুজব ছড়িয়ে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। মোদি আমলের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যেও মুসলিম বিদ্বেষী ধর্মান্ধতা এক ধরণের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে।
দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, মোদির নেতৃত্বাধীন লোকসভায় মুসলমানদের চরম ভাবে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে কম মুসলিম সদস্য রয়েছে বর্তমান লোকসভায়। এবং উত্তর প্রদেশের লোকসভায় কোন মুসলিম প্রতিনিধিত্বই নেই, যেখানে একটি বিশাল সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠী বসবাস করে থাকে। গণতন্ত্র মানে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া না, গণতন্ত্র মানে সবার ক্ষমতায়ন।
এটা নতুন খবর নয় যে, মুসলমানদের কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে। এমনকি বড় বড় বলিউড তারকারাও যেমন, আমির খান, শাহরুখ খানরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের নিয়ে ব্যাঙ্গ করা হয়েছে। এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলায় তাদেরকে ‘উন্নয়ন বিরোধী’ বলে খেতাবও দেয়া হয়েছে।
আপনি কি মনে করেন, আপনার এই বই মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রচলিত পৌরাণিক ও কাল্পনিক ধ্যানধারণা দূর করতে সহায়তা করবে?
ফারুকী : আমার অভিজ্ঞতা অনুসারে, এই বই অনেক মুসলিম তরুণকে নিজেদের অবস্থা বোঝাপড়ার জায়গায় পরিষ্কার হতে সহায়তা করবে। আমি অনেক তরুণ পাঠকদের কাছ থেকে এই প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এবং তাদের প্রায় সবাই বলেছেন, তারা আমার এই গল্পের মধ্যে তাদেরকে খুঁজে পেয়েছেন।
একজন মুসলিম হিসাবে, আমার শিক্ষাদীক্ষা কবির, চানক্য, গুরু নানক, নবীজী মুহাম্মদ (সঃ), রাম, আল্লামা ইকবাল এবং অন্যান্যদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। কিন্তু কিছু মানুষের মতে, মুসলমানদের ধারণা এবং উপলব্ধি একটি মাথার খুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে আর দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রকৃতপক্ষে, মুসলিম শিশুদের শেখানো হয় ‘সারা জাহান সে আচ্চা (পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হচ্ছে ভারত), ‘ইজ খাক ছে উথে হাঁয় ইজ খাক মে মিলেগা’ (এই মাটি থেকে উত্থিত হয়েছি, এই মাটিতেই মিশে যাবো) [উর্দু ভাষায় লিখিত] কিন্তু সমাজ সেটা স্বীকৃতি দেয় না, অথবা খুব কমই এটাকে গুরুত্ব দেয় হয়। মুসলমানদের সাধারণত ‘দেশ বিরোধী’, ‘পাকিস্তানি’, ‘সন্ত্রাসী’ ইত্যাদি বলে অভিহিত করা হয়, যা আমি আমার বইতে প্রত্যাখ্যান করেছি।
এই বইয়ের মূল ম্যাসেজ কী?
ফারুকী : মুসলমানদেরকে স্বাভাবিক মানুষের মত দেখা হয় না, যারা লাখ লাখ অন্যান্য ভারতীয়দের মত জীবিকা, শিক্ষা ও মর্যাদার অনুসন্ধান করছে। তাদেরকে একটি নোংরা, অশিক্ষিত, হিংসাত্মক জনগোষ্ঠীর হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই সকল বিষয় এই বইতে আলাদা আলাদা ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। মুসলিমরা অত্যাচার করে না, বরং তারা অত্যাচারিত।