সাত বছর ধরে চলা সিরিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া বেশ পুরনো খেলোয়াড়। স্থানীয় তুরস্ক ও ইরান তো রয়েছেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন অন্যান্য পক্ষগুলো নিজেদেরকে আস্তে আস্তে সরিয়ে নিতে শুরু করলেও সর্বশেষ রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ তুলে আবারো সক্রিয় হওয়ার আভাস দিচ্ছে।
সিরিয়ার সর্বশেষ রাসায়নিক হামলার জের ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে ক্ষেপনাস্ত্র হামলার জন্য ‘প্রস্তুত’ হতে বলেছেন। বুধবার এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রস্তুত হও রাশিয়া, সুন্দর এবং নতুন আর স্মার্ট ক্ষেপনাস্ত্র হামলার জন্য।’ একই বার্তায় তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিরস্কার করে আরও বলেন, ‘তুমি একজন গ্যাস মারা জানোয়ারের সঙ্গী হয়ে উচিত করোনি; যে তাঁর জনগণ মারে এবং উপভোগ করে।’
বার্তাটি দেয়া হয় লেবাননের রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জাসিপকিনের সাক্ষাৎকারের পরপরই। সাক্ষাৎকারের তিনি বলেন, ‘এখানে যদি মার্কিন হামলা হয়, আমরা– পুতিন ও রাশিয়ান চিফ অফ স্টাফের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলাবো; মার্কিন রকেটে গুলি করবো, এমনকি ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপনের উৎসেও গুলি করবো।’
ট্রাম্পের টুইটের পর বসে নেই রাশিয়াও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখোর্ভা ট্রাম্পের প্রত্যুত্তরে বলেছেন, ‘স্মার্ট ক্ষেপনাস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিকে উড়ে আসা উচিত, সিরিয়ার আইনসঙ্গত সরকারের দিকে না; যারা বহু বছর ধরে তাদের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।’
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পশ্চিমা নেতারা সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। আজ এই বিষয়ে বৈঠকের কথা রয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের। অন্যদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেও। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনও নড়ে চড়ে বসেছেন। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছে, তিনি সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার ‘প্রমাণ’ পেয়েছেন।
এক কথায় এখন বলা যায়, রক্তারক্তির সুইমিংপুলে রাশিয়ার পিঠে ভর দিয়ে সাঁতার কাটছে সিরিয়া, সেখান ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত আমেরিকা আর পানি ছুয়ে দেখছে যুক্তারাজ্য। ফ্রান্সও কি তবে যোগ দেবে!
উল্লেখ, গত শনিবার (৭ মার্চ) সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর দৌমাতে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। যুক্তরাষ্ট্র দাবী করেছে যে, রাশিয়ার মদদে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ এ হামলা চালিয়েছে। আর রাশিয়া ও সিরিয়া সরকার তা অস্বীকার করে এজন্য বিদ্রোহীদের দায়ী করে। ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আওতায় একটি বিশেষ প্যানেল গঠন করতে আলাদা দুটি প্রস্তাব নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সরকার ‘রাসায়নিক হামলা’ বন্ধে সেদেশের পক্ষ থেকে যে কোন পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রধানকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে। ফলে এই যুদ্ধে যুক্তরাজ্যও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Russia vows to shoot down any and all missiles fired at Syria. Get ready Russia, because they will be coming, nice and new and “smart!” You shouldn’t be partners with a Gas Killing Animal who kills his people and enjoys it!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) April 11, 2018