আসিফা ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ভারতে তোলপাড়

আসিফা ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ভারতে তোলপাড়

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের হিন্দু অধ্যুষিত জেলা কাঠুয়ায় আট বছরের শিশু আসিফা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে কমবেশি কথা উঠলেও দেশব্যাপি তেমন কোন সাড়া ফেলেনি বিচারের দাবি। কিন্তু বৃহস্পতিবার এ ইস্যু নতুন মোড় নেয়। ওই দিন দুপুর একটার দিকে বিজেপির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভিজয় কুমার সিং এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা আসিফাকে রক্ষা করতে পারিনি, কিন্তু ওকে বিচার পাইয়ে দিতে হবে।’ যেখানে এতদিন মোদি সরকার ও ‘হিন্দু একতা মঞ্চ’ গ্রেফতারকৃতদের বাঁচানোর নানা চেষ্টা করে যাচ্ছিলো সেখানে ভিজয় কুমারের এমন বক্তব্যে নড়ে চড়ে বসে ভারতীয়রা।

অন্যদিকে ভি কে সিংয়ের টুইটের ঘন্টা তিনেক পরই কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করেন ‘এক জন অপরাধীকে কিভাবে কেউ আড়াল করতে পারে? একটি শিশুর সঙ্গে যে নৃশংস অপরাধ হয়েছে, এটা বিনা বিচারে ছেড়ে দেয়া যায় না। তার মধ্যেও যদি আমরা রাজনীতি টেনে আনি, তা হলে আমাদের কী অবস্থা ভাবুন!’ এবং তিনি গতকাল রাতে একটি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন মিছিলে নেতৃত্ব দেন। রাজনীতির ডাকে প্রতিবাদ শুরু হলেও দিল্লির ছাত্র থেকে চাকরিজীবী সবাই জড়ো হন ইন্ডিয়া গেটে। হাঁটেন ন্যায় বিচারের জন্য। দাবি করেন, অপরাধীর ফাঁসি। সে সময় ‘বেটি বাচাও’ স্লোগানে গর্জে ওঠে মধ্যরাতের দিল্লি।

এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বতী মালিওয়াল জানিয়েছেন, শুক্রবার (আজ) থেকে ভারতে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করবেন তিনি। সরব হয়ে উঠেছে সোস্যাল মিডিয়াও। ‘জাস্টিস ফর আসিফা’ হ্যাশট্যাগে চলছে প্রতিবাদ।

উল্লেখ্য, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের হিন্দু অধ্যুষিত কাঠুয়া জেলার যাযাবর বাখারওয়াল মুসলিম পরিবারের সদস্য আসিফা বানু গত ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ঘোড়া চরাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর ২৩ জানুয়ারি তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ এবং এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করে। তখনই এই গ্রেফতারের বিরুদ্ধে কাশ্মিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ শুরু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে জম্মুর আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে গেলে আইনজীবীদের বাধায় তা ব্যর্থ হয়। ওই চার্জশিটে লেখা হয়েছে, ‘দিনের পর দিন মন্দিরে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় আসিফাকে। শারীরিক নির্যাতন করা হয়। আর শেষে খুন করা হয়।’ শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল আসিফাকে। মাথায় পাথর দিয়ে দু’বার আঘাতের চিহ্নও মেলে ময়নাতদন্তে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা, চারজন পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন কিশোর রয়েছে।