জিতেও বাদ পড়ে গেল জুভেন্টাস

জিতেও বাদ পড়ে গেল জুভেন্টাস

রিয়াল মাদ্রিদ       ১-৩      জুভেন্টাস
রোনালদো ৯০+৮’ (প)     মান্দজুকিচ ২’,৩৭’
মাতোওদি ৬১’

• চ্যাম্পিন্সলিগে রোনালদোর ১৫ তম গোল
• ‎এ মৌসুমে খেলা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রত্যেক ম্যাচেই গোল করলেন রোনালদো

স্কোয়াড :

রিয়াল মাদ্রিদ (৪-৪-২)

নাভাস, মার্সেলো, ভ্যালেহো, ভারান, কার্ভাহাল, ইস্কো, ক্রুস, ক্যাসেমিরো, মদ্রিচ, বেল, রোনালদো

সাব : বেল-অ্যাসেন্সিও, ক্যাসেমিরো-লুকাস, মদ্রিচ-কোভাচিচ

জুভেন্টাস (৪-৩-৩)

বুফন, সান্দ্রো, বেনেটিয়া, কিয়েলিনি, লিচেনস্টার, মাতোওদি, পিয়ানিক, খেদিরা, মান্দজুকিচ, হিগুইন, কস্তা

সাব: লিচেনস্টার-মাত্তিয়া, বুফন-সেজনি

গোলকিপিং : শেষ মুহুর্তে মাথা গরম করে লাল কার্ড না দেখলে নিঃসন্দেহে রাতটা হতো বুফনের। কেন তাকে সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষকের স্বীকৃতি দেয়া হয় পুরোটা সময়ই তার প্রমাণ রেখেছিলেন তিনি। ৫ টা সেভ এবং একটি ক্লিয়ারেন্স দিয়ে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন তুরিনের বুড়িদের। শেষ মুহুর্তের ভুলের খেসারত দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্নটা অধরা রেখেই মাঠ ছেড়েছেন বুফন। অপর দিকে নাভাস এর নৈপুণ্য ছিলো চূড়ান্ত রকমের হতাশাজনক। দুটি গোল তার দুর্বল গোলকিপিংয়ের খেসারত দিয়েই খেয়েছে রিয়াল। বিশেষ করে তৃতীয় গোলটি যেভাবে হজম করেছেন সেটি রিয়ালের মতো কোনো দলের গোলরক্ষকের জন্য বেমানান। রিয়াল হাসিমুখে মাঠ ছাড়লেও গোলকিপিংয়ে বুফনই এ ম্যাচের সেরা।

ডিফেন্স : অধিনায়ক রামোসের অনুপস্থিতির অভাবটা ম্যাচের শুরু থেকেই টের পেয়েছে রিয়াল। তার বদলে নামা তরুন ভ্যালেহো নজর কারার মতো কিছু তো করতে পারেনই নি, বরং বিপদে ফেলেছেন বেশ কবারই। রক্ষণে হতাশ করেছেন মার্সেলোও। প্রথম দুটি গোলই হয়েছে তার ফ্ল্যাংক থেকে। ভারান-কার্ভাও যদি একই পথে হাটতেন তাহলে বেশ বড় লজ্জা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হতো মাদ্রিদকে। মাদ্রিদের ৩ এর বিপরীতে জুভেন্টাসের ১ গোল হজমই বলে দিচ্ছে রক্ষণেও ব্লাংকোসদের চেয়ে বেহতার ছিলো জুভেন্টাস। কিয়েলিনির নেতৃত্বে জুভেন্টাসের রক্ষণ এক প্রকার বাক্সবন্দিই করে রেখেছিলো ব্লাংকোসদের। বেনেটিয়ার অহেতুক ফাউলটিই সর্বনাশ ডেকে এনেছে পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা জুভেন্টাসের জন্য।

মিডফিল্ড : খেদিরা, মাতোওদি এবং পিয়ানিক ট্রায়োর সামনে একরকম নিষ্প্রভই মনে হয়েছে মাদ্রিদের মিডফিল্ডকে। বিশেষ করে মদ্রিচ এবং ক্যাসেমিরো যেন ছিলেন নিজেদের ছায়া হয়ে। তবে মধ্যমাঠে মুগ্ধ করেছেন ক্রুস। অবিশ্বাস্য শোনালেও ম্যাচে তিনি মোট পাস দিয়েছেন ১০০ টি, যার ৯৭ টিই খুজে পেয়েছে সঠিক গন্তব্য। ১৫ টি লং পাসের প্রত্যেকটিই ছিলো সফল। কি পাস ছিলো ৪টি। অপর দিকে জুভেন্টাসের মিডফিল্ড কাজ করেছে দলগতভাবে। এবং কাজটি যে তারা বেশ চমৎকারভাবেই করেছে তার সাক্ষী স্কোর লাইনই।

অ্যাটাক : মাদ্রিদের বেল-রোনালদো জুটিকে ছাড়িয়ে পুরো আলোটা নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন মান্দজুকিচ। ম্যাচের শুরুতেই গোল করে বার্নাব্যুকে স্তব্ধ করা মান্দজুকিচ দারুণ খেলেছেন পুরো ম্যাচই। গোল বার লক্ষ্য করে তিনটি প্রচেষ্টার দুটিতেই গোলের দেখা পেয়েছেন তিনি। নিখুত পজিশন সেন্সও ছিলো দেখার মতো। গোল না পেলেও বলের জোগান দিয়ে রিয়ালের রক্ষণের বেশ ভালে পরীক্ষাই নিয়েছেন হিগুইন এবং কস্তাও। অপর দিকে রোনালদোর সাথে জুটি বাধা বেল ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ। তার বদলি হিসাবে মাঠে নেমে দারুণ খেলেছেন লুকাস। শেষ মুহুর্তে পেনাল্টি আদায় করে রিয়ালকে স্বস্তিও এনে দিয়েছেন তিনিই। অপর দিকে অ ম্যাচেও উজ্জ্বল ‘দ্য বেস্ট’ রোনালদো। ম্যাচের অন্তিম মূহুর্তে স্নায়ুর পরীক্ষায় দারুণভাবে পাশ করে রিয়ালকে কাঙ্খিত গোলটি এনে দিয়েছেন তিনি। নিঃসন্দেহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের সেরা মৌসুমটি কাটাচ্ছেন তিনি।

সাবদের ভূমিকা : রিয়ালের সেমি নিশ্চিতের পিছনে অন্যতম অবদান বেলের বদলি হিসাবে নামা লুকাসের। বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরির পাশাপাশি পেনাল্টি আদায় করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

সেট পিস : সেট পিসে ব্যর্থ দু দলই। রিয়াল সাতটি এবং জুভেন্টাস তিনটি কর্ণার পেলেও কোনো দলই গোল করতে পারেনি সেট পিস থেকে। একদমই ব্যর্থ বলার সুযোগ রাখেননি রোনালদো। তার নিখুত পেনাল্টিটিই শেষ পর্যন্ত হয়েছে ফল নির্ধারক।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ : মারিও মান্দজুকিচ (জুভেন্টাস)

ফলাফল : ৪-৩ এগ্রিগেটে সেমি ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ।