কেবল ২০১৬-এর জুলাই থেকে কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর সহিংসতায় ১ হাজার ২৫৩ জন স্থানীয় মানুষ তাদের আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। উল্লিখিত মানুষদের কারো দুটি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে– কারোবা একটি। এইরূপ ক্ষতিগ্রস্ত চোখের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৬টি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এইরূপ ক্ষতিগ্রস্তরা মূলত ভারতীয় বাহিনীর শর্টগান থেকে প্যালেট গানের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।
সম্পতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘গ্লোবাল জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’সহ কয়েকটি চিকিৎসা বিষয়ক জার্নালের তথ্য থেকে উপরোক্ত হিসাব মিলেছে। গবেষকরা কাশ্মিরের এসএমএইচএস হাসপাতাল এবং পাঞ্জাবের অমৃতসরের একটি হাসপাতালকে ভিত্তি করে এই গবেষণাগুলো পরিচালনা করেছেন। গবেষণা প্রতিবেদনগুলোয় এও বলা হচ্ছে, ভারতীয় বাহিনীর এই প্যালেট গান আক্রমণের শিকার কাশ্মিরীদের ক্ষতিগ্রস্ত চোখে আলো ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।
এই বিষয়ে ‘জার্নাল অব এভালুয়েশন অব মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, প্যালেট গানের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ ভাগ ভর্তি হওয়ার সময় তাদের চোখে কেবল আলো ও অন্ধকারের পার্থক্য বুঝতে পারতেন এবং যথেষ্ট চিকিৎসা শেষে তাদের ৩৫ ভাগেরই অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। আরেক তথ্যে দেখা যায়, এরূপ চিকিৎসা পাওয়া ৫০ ভাগ মানুষ এক বা দুই চোখ দিয়ে সর্বোচ্চ কেবল ৬ মিটার দূরের কোন বস্তু দেখতে পারেন। যা একজন স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির মানুষের চেয়ে ১০ গুন কম।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেডিক্যাল সায়েন্স এন্ড পাবলিক হেল্থ’-এর পূর্ববর্তী এক গবেষণায় এইরূপ কাশ্মিরী আক্রান্তদের মাত্র ১৬ ভাগের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের অর্ধেকের চেয়ে অধিক দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন পাওয়া গেছে। বাকি ৮৪ ভাগের ক্ষেত্রে হয় পূর্ণ অন্ধত্ব বা আংশিক অন্ধত্ব বিরাজ করছে। উপরোক্ত গবেষণাগুলোর সারসংকলন থেকে এটাই প্রমাণিত হয়, ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা কাশ্মিরী আন্দোলন দমনে প্যালেট গানকে ততটা ‘মারণঘাতী নয়’ বলে প্রচার করলেও কার্যত তা স্থানীয় একটা প্রজন্মকে অন্ধ করে দিচ্ছে।
সূত্র: গ্রেটার কাশ্মীর