মেসির নৈপুণ্যে উড়ে গেলো লেগানেস

মেসির নৈপুণ্যে উড়ে গেলো লেগানেস

বার্সেলোনা ৩ – ১ লেগানেস

মেসি (২৭”,৩২”,৮৭”) নাবিল (৬৮”)

ক্যাম্প ন্যূতে লেগানেসকে একাই রুখে দিলো আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। তার হ্যাট্রিকের সুবাদে ৩-১ গোলে বার্সেলোনা হারিয়েছে লেগানেসকে।একই সাথে লালিগায় সর্বোচ্চ ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকা রিয়াল সোসিয়াদের পাশে নাম লিখিয়েছে বার্সেলোনা।আর একটি ম্যাচ অপরাজিত থাকলেই লা লিগায় সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড একক ভাবে নিজেদের করে নিবে এই কাতালান ক্লাবটি।

প্রথমার্ধ

ম্যাচের প্রথম দিক থেকেই বেশ গুছিয়ে খেলছিল বার্সেলোনা। তবে প্রথমার্ধের শুরুতে যেন গোল মিসের মহড়া চলছিল। ২ মিনিট ব্যবধানে দুটি গোলোর সুযোগ মিস করে বসেন বার্সেলোনার নাম্বার নাইন লুইস সুয়ারেজ।

ম্যাচের ১৮ মিনিটে আবারও সুযোগ পায় সুয়ারেজ। এবার ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিতে পারলেও তার ভলি শ্যূটটি লক্ষভ্রষ্ট হলে হতাশ হন পুরো ক্যাম্প ন্যূতে উপস্থিত থাকা কাতালান ভক্তরা। তার এক মিনিট পরেই আবারও গোল করার সহজ সুযোগ পান সুয়ারেজ।মেসি নিজে গেলমুখী শ্যূট না নিয়ে বল বাড়িয়ে দেন সুয়ারেজকে। সুয়ারেজ সে সুযোগটিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। কিন্তুু এই ব্যর্থতা আর হতাশার মাঝে বেশিক্ষণ ডুবে থাকতে হয়নি বার্সা সমর্থকদের। ম্যাচের ২৭ মিনিটে ডি বক্সের কাছাকাছি ফাউলের শিকার হোন লিওনেল মেসি আর সেই ফ্রি কিক থেকে নেয়া বাঁকানো শ্যূটে অসাধারণ একটি গোল করে দলকে প্রথম লিড এনে দেন তিনি। এ সিজনে এখন পর্যন্ত ৬টি ফ্রি কিক থেকে গোল করলেন মেসি।

ম্যাচের ৩২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করে বার্সেলোনা। এবারের গোলটিও আসে মেসির পা থেকে। কৌতিনহোর বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে দুজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বা পায়ের জোরালো শ্যূটে ম্যাচের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেন আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধের বাকি সময়টুকুতে কোনো দলই আর গোল করতে পারেনি। তাই প্রথমার্ধ মেসির দেয়া ২ গোলের সুবাদে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই শেষ করে বার্সেলোনা।

দ্বিতীয়ার্ধ

প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা বার্সেলোনা দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নেমেছিলে। উদ্দেশ্য ছিল ব্যবধান বাড়িয়ে নিজেদের মাঠে বড় জয় আদায় করে নেয়া।

অন্যদিকে লেগানেস মরিয়া হয়েছিলো ম্যাচে ফেরার। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে  ব্যবধান বড় করার আরেকটি সহজ সুযেগ পেয়ে যায় বার্সেলোনা। সতীর্থের বাড়িয়ে দেয়া বলে সামান্য টোকা লাগালেই গোল এমন সুযোগও মিস করে বসেন সুয়ারেজ। তার পিছনে থাকা জেরার্ড পিকে অবশ্য শ্যূট করার সুযোগ পেয়েছিল তবে তার শ্যূটটিও চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

ম্যাচের ৬৮ মিনিটে লেগানেসেরর হয়ে ব্যবধান কমান নাবিল।

ম্যাচের ৭৪ মিনিটে আবারও সুন্দর একটি আক্রমণ সাজায় বার্সেলোনা। এবার গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে চিপ শ্যূটে গোল আদায় করার চেষ্টা করেন মেসি তবে স্প্যানিশ গেলকিপার ইভান কুয়েরাকে ফাঁকি দিতে পারেনি মেসি।

ম্যাচের ৮১ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়ে যায় সুয়ারেজ। গোলবারের মাত্র ৬ গজ দূর থেকেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শ্যূট করেন তিনি। তার মিনিট ছয়েক পরই মেসি ম্যাচে তার তৃতীয় গোলটি করে হ্যাট্রিক পূরণ করার পাশাপাশি দলের ৩-১ গোলে জয় নিশ্চিত করেন।

মেসির সাথে সাবেক লিভারপুল তারকা কৌতিনহো এবং ডেম্বেলের অভিবাদন বিনিময়। Image: Reuters

সুয়ারেজের গোল মিসের মহড়ায় মেসি হ্যাট্রিকের পাশাপাশি দলকে সহজ জয় এনে দেয়। আজকের ম্যাচে হ্যাট্রিক নিয়ে এ সিজনে লা লিগায় মেসির গোল সংখ্যা ২৯ (তিনি লা লিগায় এ সিজনে সর্বোচ্চ গোলস্কোরার)।

আজকের ম্যাচের ম্যান অফ দ্য ম্যাচও হয়েছেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।

৩১ ম্যাচ শেষে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে বার্সেলোনা এবং সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ১৪ তম অবস্থানে আছে লেগানাস। ফলে লা লিগার শিরোপার এরকম নিকটে চলে গেল বার্সা।