পাক সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। যাবতীয় প্রশাসনিক বাধা উড়িয়ে গত বছরই নিজের তৈরি রাজনৈতিক দলের অফিস খুলেছিলেন হাফিজ সাঈদ। জানিয়েছিলেন ভোটে লড়ার কথাও। এবার হাফিজ সাঈদের সেই রাজনৈতিক সংগঠন মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল)-কে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মিল্লি মুসলিম লিগের পাশাপাশি তেহরিক-ই-আজাদি-ই-কাশ্মীর (টিএজেকে)-কেও জঙ্গি সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। খবর: এনডিটিভি ও আনন্দবাজার এর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তরফে সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এমএমএল এবং টিএজেকে-উভয় সংগঠনই লস্কর-ই-তৈয়্যেবার শাখা সংগঠন হিসেবে তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, লস্কর-ই-তৈয়্যেবা একটি জঙ্গি সংগঠন।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নাথান এ সালেস বলেন, ‘‘আমেরিকা কোনও দিনই জঙ্গি কার্যকলাপকে সমর্থন করে না। এই সব দলের কোনও রাজনৈতিক মতবাদও থাকতে পারে না।’’
২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইতে হোটেল তাজ হামলার প্রধান আসামী হিসেবে হাফিজ সাঈদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে ভারত। হাফিজ সাঈদকে বিচারের আওতায় আনতে দীর্ঘ দিন ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তান সরকারকে বলা হচ্ছে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মাথার দাম ধার্য করে ১ কোটি ডলার। জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তাকে।
হাফিজ সাঈদ যেদিন থেকে ঘোষণা করেছেন যে মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল) নামে একটি রাজনৈতিক দল খুলছেন তিনি, সেদিন থেকেই পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাক প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন যাতে এমএমএল-কে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় হয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
লড়াই গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে পাক সরকার জানায়, লস্করের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগ রয়েছে এমএমএল-এর। এ ধরণের সংগঠন রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে কট্টরবাদ এবং হিংসা বাড়বে বলেও সরকারের তরফে জানানো হয়।
শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে জিততে পারেননি হাফিজ সাঈদ। সুপ্রিম কোর্টের রায় তার পক্ষে যায়নি। নির্বাচন কমিশনও এমএমএল-কে স্বীকৃতি দেয়নি। তা সত্ত্বেও হাফিজ সাঈদ এমএমএল-এর ব্যানার নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন।