সামান্যের জন্য শতভাগ ভোট পাননি সিসি!

সামান্যের জন্য শতভাগ ভোট পাননি সিসি!

গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সরকারি ফলাফলে দেখা গেছে, সাবেক সেনাপ্রধান সিসি ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। আবারো চার বছরের জন্য আবদেল ফাত্তাহ এল সিসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার এমন ফলাফলে মিশরীয়রা কোনভাবেই অবাক হননি, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

আলজাজিরার খবরে বলা হয়, সোমবার ভোটের ফল ঘোষণাকালে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। গতবারের নির্বাচনে ৪৭ শতাংশ মিশরীয় ভোটে অংশ নিয়েছিলো।

প্রতিদ্বন্দীবিহীন এই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পদের অন্তত ছয়জন প্রতিদ্বন্দীকে চলতি সরকারের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় সিসি জেল অথবা মামলা মোকদ্দমার মাধ্যমে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

একমাত্র প্রতিদ্বন্দী মুসা মোস্তফা মুসা একেবারে শেষবেলায় এসে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। মোস্তফা মুসা সিসির রাজনীতির সমর্থক হিসেবেই পরিচিত।

ভোট নিয়ে নাটকও কম হয়নি। মিশরের জাতীয় ফুটবল দল ও যুক্তরাজ্যের ক্লাব লিভারপুলের হয়ে খেলা ফুটবলার সালাহ ভোটে না দাঁড়িয়েই দশ লাখ ভোট পেয়েছেন। ভোটের দিন দুই জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম ব্যালট পেপার থেকে কেটে দিয়ে ফুটবলার সালাহর নাম লিখে ভোট দেন দশ লাখ মিশরীয়, এমন নজিরবিহীন খবরে সারা দুনিয়ায় রীতিমতো হই চই পড়ে যায়।

ইকোনোমিস্টের দেয়া খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, মুসা একমাত্র প্রতিদ্বন্দী হলেও ভোটে না দাঁড়ানো ফুটবলার সালাহ’র চাইতে কম ভোট পেয়েছেন তিনি।

যদিও পরের দিন নির্বাচন কমিশন জানায়, ব্যালট পেপার নষ্ট করার মতো এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

“এই নির্বাচনের পুরোটাই জালিয়াতি এবং কৌতুকে ভরপুর” বলে উল্লেখ করেছেন ‘ওয়াশিংটন ভিত্তিক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’ এর ফেলো সারাহ ইয়ারকেস। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, “এই নির্বাচন কোনভাবেই দেশটির জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল কোন ঘটনা নয়।”

আবদেল ফাত্তাহ সিসি সেনাপ্রধান থাকাকালে এক অভ্যূথানের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন তিনি। মুরসির পতনের পর ক্ষমতা নিয়ে জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণে ব্যর্থই হয়েছেন সিসি। সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা বলেছিলেন তিনি। আবর দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত মিশরের পাশে দাঁড়ায় সে সময়। তবে বিভিন্ন কারণে বড় বড় বিনিয়োগের সেসব প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হয়নি এখনো।