সন্তান উৎপাদন বন্ধ রাখার জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল খাওয়া। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলেও অনেকের শরীরে তা মানিয়ে যায়। আবার কখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেয়ে অনেকে মোটা হয়ে যান। তাই কোনো পিল শরীরে না মানালে চিকিৎসকরা অন্য পিল খাওয়ার পরামর্শ দেন। সাধারণত ঝামেলা কম বলে এ পদ্ধতি আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। তবে টানা বেশি দিন ধরে পিল খেলে শারীরিক বিভিন্ন মস্যা দেখা দিতে পারে, এমনকি হতে পারে স্তন ক্যানসারও।
গবেষকরা জানান, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে থাকে উচ্চমাত্রায় ইস্ট্রোজেন। তা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ওয়াশিংটন-এর ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারের পাবলিক হেলথ সায়েন্সের বিজ্ঞানী এলিজাবেথ এফ বিয়েবার জানান, এ পর্যন্ত যত নারীর স্তন ক্যানসার হয়েছে তারা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করেছেন। পিল সেবনে কম বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। যেসব পিলে ইস্ট্রোজেন-এর পরিমাণ বেশি থাকে সেগুলোয় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বেশি থাকে। তবে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কম পরিমাণ সেবন করলে ঝুঁকি কম থাকে।
সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যানসার রিসার্চের এক প্রকাশনায় ওই গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে।
আমেরিকা একদল গবেষক ক্যানসারে আক্রান্ত ১ হাজার ১০ রোগীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখতে পেয়েছেন, যারা অতীতে কিংবা বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করছেন তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিজনের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে।
ওই গবেষকরা জানান, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বন্ধ করার পর ১০ বছর পর্যন্ত স্তন ক্যানসারের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তাই পিল সেবনের মাত্রা ও বিভিন্ন ধরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের ফর্মুলেশন নিয়ে সতর্কতা জরুরি।
ব্রেক থ্রো ক্যানসারের ড. ক্যারোলাইন ডাল্টন বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল খাওয়ার আগে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে এর বিভিন্ন দিক ও অন্য কোনো ভালো কোনো পিল আছে কি না তা জেনে নেয়া করা উচিত।
গবেষকরা বলেন, সাধারণত ৪০ বছরের নিচে নারীদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে না তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করেন বা না করেন।