ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রযুক্তি বয়কট!

ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রযুক্তি বয়কট!

ইন্দোনেশিয়ার বানতেনের একটি উপজাতি ‘বাদুয়’, যারা তাদের প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখার লক্ষ্যে সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি বর্জন করেছেন। বিংশ শতাব্দীতে এসেও তাদের জীবনযাত্রার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। বিদ্যুতের ব্যবহার তারা নিষিদ্ধ করেছেন। এমনকি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষাকেও ত্যাগ করেছেন তারা। যেখান থেকে তাদের সীমানা শুরু সেখান থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে ফেলা হয়েছে। তবে তাদের একাংশ ক্রমেই আধুনিক হয়ে উঠেছে।

উপজাতিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে- এর রক্ষণশীল অংশটি “শুদ্ধবাদী” হিসাবে পরিচিত, আর এর বাইরে আরেকটি অংশ আছে “উদারপন্থি”, যারা কিছু আইনের ক্ষেত্রে উদার। যেমন তাদের কেউ কেউ মোবাইল ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।

পাতা দিয়ে ঘরে ছাউনি প্রস্তুত করছেন বাদুয় নারীরা। Image: ijsseldijkblog.com

বাদুয়দের এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা কি তাদের আধুনিক জগতে টিকে থাকতে সহায়তা করবে? নাকি তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধ্বংস করবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তারা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন।

বাদুয়দের যে অংশে আধুনিক প্রযুক্তি এড়িয়ে চলা হয়। Image: ijsseldijkblog.com

উদারপন্থীদের মতে প্রযুক্তি তাদের অনেক সহায়তা করছে। তাদের একজন মোবাইল দেখিয়ে বলেন, “এর মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি।” এই অংশের প্রায় ৯০ শতাংশ মোবাইল ব্যবহার শুরু করেছেন। অনেক স্থানে টেলিভিশনও দেখতে দেখা যাচ্ছে। তারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করছে এবং তাদের মধ্যে দারিদ্রও কম। এই অংশের কেউ কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

বাদুয়দের পাথরের রাস্তা, আধুনিক প্রযুক্তি থেকে মুক্ত থাকলেও নিজেদের কালচারে রয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। Image: ijsseldijkblog.com

অন্যদিকে “শুদ্ধবাদী” অংশে দারিদ্র আগের মতোই বর্তমান। তাদের একজন বলেন, তারা এখনো প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন প্রয়োজন উপলব্ধি করেন না। তাদের তাঁতের কাপড়, বাঁশের বাদ্যযন্ত্র ও প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে ধর্ম পালন করতে দেখা যায়।

নিজেদের চলাফেরার সুবিধার্থে বানিয়ে নিয়েছেন বাঁশের মজবুত সাঁকো। Image: ijsseldijkblog.com

সূত্র : আলজাজিরা।