গত বছরের নভেম্বরে সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় গণগ্রেফতারে আটক হওয়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা সম্প্রতি দেশটির জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মংডু শহরের বুথিডং জেলখানা থেকে বের হয়ে এসে তারা সেখানে রোহিঙ্গা বন্দীদের ওপর অকথ্য নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাভিশনটিভির অনলাইনে এ খবর দেওয়া হয়েছে।
মংডুর উত্তরাঞ্চলীয় জাম্মোনিয়া গ্রামে ২০১৭ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্থানীয় বৌদ্ধদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হামলা চালায়। বাড়িঘরে আগুন দেয় এবং ব্যাপক ধরপাকড় চালায়। সেসময় নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু সবাইকেই ধরে নিয়ে কোন বিচার ছাড়াই বুথিডং কারাগারে পাঠানো হয়।
তাদের মধ্য হতে বয়স্ক একজন ওলি আহমেদ গত সপ্তাহে ছাড়া পান। কারাগার থেকে মুক্তি মিললেও নিজ বাড়িতে যেতে পারেননি ওলি আহমেদ, কেননা তার গ্রামে বাড়িঘর কিছুই নেই। সেনা ও স্থানীয় বৌদ্ধদের হামলায় ঘর বসতি সব বুলডোজারে গুড়িয়ে দেওয়া হয়, এখন সেখানে সরকারি মদদে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
ওলি আহমেদ বলেন, “আমরা জানি না, কী কারণে আমাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো, তারা শুধু শুধুই আমাদেরকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো। বুথিডংয়ের কারাগার ও হাজতখানায় আমাদেরকে রাখা হয়েছিল, সেখানে আমাদেরকে পশুর মতো খাবার পানি না দিয়ে ফেলে রাখা হতো দিনের পর দিন। চরম নির্যাতন করা হচ্ছে সেখানে, এখনও অনেক রোহিঙ্গা সেখানে আছে এবং তারা অচিরেই মারা পড়বে।”
ওলি আহমেদ উপায়ান্তর না দেখে বাংলাদেশেিএসে কক্সবাজারের ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তার দুই ভাই ও তিন ছেলে বুথিডংয়ের হাজতখানায় রয়েছেন। ওলি দিনরাত তাদের মৃত্যুভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন।
কক্সবাজারের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে আরো আট লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাথে অসুস্থতা ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সাথে লড়াই করে দিন পার করছেন।