বাঘ-সিংহের লড়াই যে এতদূর গড়াবে তা কেউ ভাবতে পারেননি। নিজেদের মাঠে ব্যাপক দর্শক সমাগম ও জয়ের অদম্য প্রত্যাশার পাশাপাশি লংকানদের ওপর বাড়তি চাপও সৃষ্টি করেছে বলা যায়। কিন্তু খবরে দেখা গেল, স্বাগতিকরা ধরেই নিয়েছিলেন ফাইনাল হতে যাচ্ছে ভারত-শ্রীলংকার মধ্যে। এবং ওই অনুযায়ী ‘ওয়েলকাম টু শ্রীলংকা ভার্সেস ইন্ডিয়া গাড়ির স্টিকারও ছাপিয়ে রেখেছিল শ্রীলংকার ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ। এ থেকেই বোঝা যায়, বাংলাদেশকে তারা কোনাে হিসাবের মধ্যেই রাখেনি। ওই বাংলাদেশি টাইগাররা যখন গর্জে উঠলেন তখন বাজে আম্পায়ারিংয়ের সুযোগটিও কাজে লাগাতে পারেনি লংকান সিংহরা। তাই শেষ ওভারে উত্তেজনাটা যেন মাত্রা ছাড়িয়েই গিয়েছিল।
শেষ ওভারের নো বলকাণ্ড
ইংনিসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বল। রান আউট হয়ে ফিরে যাচ্ছেন মোস্তাফিজ। কিন্তু এর আগেই জটলা বেঁধে গেছে বাউন্ডারি লাইনে। বাংলাদেশ দলপতি সাকিব আল হাসান ততক্ষণে তর্ক জুড়ে দিয়েছেন ম্যাচ অফিসিয়ালদের সঙ্গে, একাধিকবার মাহমুদুল্লাহ-রুবেলকে ইঙ্গিত করলেন মাঠ ছেড়ে আসারও। তবে খালেদ মাহমুদ-এর মধ্যস্থতা এবং নিজের ওপর অটল বিশ্বাসে ক্রিজে ফিরে বাংলাদেশকে অবস্মরণীয় জয় এনে দিলেন মাহমুদুল্লাহ।
প্রশ্নটি হচ্ছে ঠিক কী ঘটেছিল ওই সময় যে, বিশাল ঝুঁকি নিয়ে হলেও সাকিব ম্যাচ শেষ না করেই ফিরে আসতে বলেছিলেন রুবেল-রিয়াদকে? উদানার করা দ্বিতীয় বলটিকে লেগ আম্পায়ার নো বল কল করলেও সেটি অগ্রাহ্য করেন মূল আম্পায়ার। আর এটিই তাতিয়ে দিয়েছিল সাকিবকে। ম্যাচের অমন পরিস্থিতিতে একটি ফ্রি হিট এবং বাড়তি রানের গুরুত্ব অবুঝেও বোঝে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন ম্যাচ ডাকাতি অবশ্য নতুন নয়। বিশ্ব কাপে ভারতের ওই ডাকাতির স্মৃতি তো আজও রক্ত ঝরায় বাঙালিদের মনে। তবে এ ম্যাচ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, প্রতিপক্ষ যেই হোক প্রতিবাদ করতে শিখেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ বয়কট করাটা হয়তো ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচিত হতে পারে। তবে বার বার অন্যায় মেনে মুখ বুজে বসে থাকারও কিছু নেই।
হ্যাঁ, হয়তো আরেকটু ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতেন সাকিব। কিন্তু ওই ইস্যুতে সাকিবের সমালোচনা না করে বরং পাশেই দাঁড়ানো উচিত। এসব ক্ষেত্রে যেখানে লেগ আম্পায়ারের কলই বহাল থাকে সেখানে সেটি না করে বরং অন্যায় করেছেন ফিল্ড আম্পায়ার। আর টাইগার সাকিবও প্রতিবাদ করে দেখিয়ে দিয়েছেন প্রকাশ্যে ম্যাচ ডাকাতির দিন শেষ।
ড্রেসিংরুমে ভাংচুর
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রীলংকান পত্রিকা কলম্বো গেজেট। শুক্রবার বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পর মাঠের বাইরেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে কে বা কারা ড্রেসিংরুমে ভাংচুর করেছে তা জানায়নি পত্রিকাটি। প্রতিবেদনে ড্রেসিংরুমের সামনে ভাঙা গ্লাস পড়ে থাকার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ক্রিকইনফো-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড্রেসিংরুমে ভেতর থেকে কেউ ভেঙে থাকতে পারে। জয়ের কারণে ‘অতি উচ্ছ্বাস’ থেকে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। এদিকে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করতে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি।
Bangladesh dressing room door at R Premadasa stadium shattered during celebrations following heated conclusion to match against Sri Lanka #Cricket pic.twitter.com/UNTjP7GddD
— Azzam Ameen (@AzzamAmeen) March 16, 2018