মেসির জাদুয় ক্যাম্প ন্যূতে বিধ্বস্ত চেলসি

মেসির জাদুয় ক্যাম্প ন্যূতে বিধ্বস্ত চেলসি

বার্সেলোনা ৩-০ চেলসি

মেসি (৩” ৬৩”)

ডেম্বেলে (২০”)

ক্যাম্প ন্যূতে মেসির দূর্দান্ত পারফর্মেন্সে কোয়াটার ফাইনাল নিশ্চিত করলো বার্সেলোনা। প্রথম লেগ ম্যাচে স্ট্যাম্পফোর্ডে পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচের শেষ মুহুর্তে গোল করে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বার্সেলোনা। তবে আজ নিজেদের মাঠে কোনো ছাড় দেয়নি লন্ডনের নীল সেনাদের। যার ফলাফল স্বরূপ বার্সেলোনার কাছে আজকের ম্যাচে ৩-০ গোলে এবং দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলের ব্যবধানে হেরে চ্যাম্পিয়নস লীগ থেকে বিদায় হলো চেলসি।

প্রথমার্ধ

ম্যাচের শুরুতেই নিজেদের কপাল পুড়েছেন চেলসির ফুটবলাররা। ৩ মিনিটের মাথায় চেলসি ডিফেন্ডার মার্কো আলেনসোর পায়ে লেগে বল চলে যায় লুইস সুয়ারেজের পায়ে। সুয়ারেজ বল পাস করে দেন তার কাছাকাছি থাকা লিওনেল মেসিকে। মেসি কোনো ভুল করেনি। ম্যাচের শুরুতেই প্রতিপক্ষের দেয়া সুযোগের সদ্ব্যবহার ঠিকভাবেই করেছেন এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার। চেলসির গোলকিপার কর্তোয়াকে বোকা বানিয়ে তার দু পায়ের ফাঁকা দিয়ে বল জড়িয়ে দেন চেলসির জালে। ম্যাচের ৩ মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এই গোলটি মেসির ক্যারিয়ারে সবচেয়ে দ্রুততম গোল। ম্যাচের একদম শুরুর দিকে গোল খেলেও চেলসি ম্যাচে ফেরার জোর চেষ্টা চালাচ্ছিলো। ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রায় সমতায় ফিরে এসেছিলো চেলসি তবে বার্সেলোনার গোলবার প্রহরী মার্কো স্টেগেনের গ্লোভস ফাঁকি দিতে পারেনি উইলিয়ানের জোরালো শ্যূটটি।

উল্টো ম্যাচের ২০ মিনিটে আবারও গোল হজম করে চেলসি। এবারের গোলেও বার্সেলোনা প্লেয়ারদের কৃতিত্বের চাইতে চেলসির ফুটবলারদের অবদানটাই বেশি ছিলো। মাঝ মাঠে ফেব্রিগাসের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যায় মেসি আর তার সামনে থাকা রক্ষণভাগের একজন ফুটবলারকে কাটিয়ে ডি বক্সে ঢুকে তার ডান দিকে থাকা সতীর্থ ফুটবলার ডেম্বেলেকে পাস দিয়ে দেন। আর ডেম্বেলেও মেসির আস্থা রেখেছেন। মেসির দেয়া পাস কে গোলে রূপান্তর করে দলের কোয়াটার ফাইনালের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। এটি বার্সেলোনার হয়ে তার প্রথম গোল।

বিরতির আগে আবারও ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিলো চেলসি। তবে ভাগ্য দেবতা যেনো বার্সেলোনার প্রতি সুপ্রসন্ন ছিলেন তাই প্রথমার্ধের শেষের দিকে মার্কো আলেনসোর করা দূর্দান্ত ফ্রি কিকটি বারে লেগে প্রতিহত হয়।

যার সুবাদের স্বাগতিক বার্সেলোনা ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে।

দ্বিতীয়ার্ধ

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পর পরই আবারও গোলের সুযোগ পেয়ে যায় চেলসি। তবে এবার ভাগ্য দেবতা নয়, স্বয়ং রেফারি বার্সেলোনার প্রতি সুপ্রসন্ন ছিলেন। ৪৯ মিনিটে ডিকে বার্সেলোনার ডি বক্সের ভেতরে আলেনসোকে ট্যাকল করলে পড়ে যায় আলেনসো। সেটা থেকে চেলসি একটা পেনাল্টি পেতেই পারতো তাই রেফারির কাছে দাবিটাও জোরালো ছিলো চেলসির ফুটবলারদের। তবে রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। রেফারির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ দেখিয়ে উল্টো হলুদ কার্ড দেখেছেন চেলসির ফরাসি ফুটবলার ওলিভিয়ের জিরুড। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে সুয়ারেজের ছোট্ট পাস থেকে পাওয়া বল নিয়ে দ্রুত ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। এবারও প্রথম গোলের মতই চেলসি গোলকিপার কর্তোয়াকে বোকা বানিয়ে দু পায়ের ফাঁকা দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। আর এরই সাথে বার্সেলোনার কোয়াটার ফাইনাল খেলা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন ফুটবলের এই জাদুকর। এটি ছিলো তার চ্যাম্পিয়নস লীগের শততম গোল।ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লীগে একশো গোলের মাইল ফলক স্পর্শ করলেন তিনি।ম্যাচের বাকি সময়টুকু যেনো নিয়ম রক্ষার জন্য খেলছিলো দুই দল। তবে ম্যাচের একদম শেষ মুহুর্তে চেলসি ডিফেন্ডার রুডিগারের শ্যূট আবারও বারে লেগে প্রতিহত হলে আর ব্যবধান কমানো হয়ে উঠেনি চেলসির। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লীগ থেকে বিদায় নিতে হয় এই ইংলিশ ক্লাবটিকে।

ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ

আজকের ম্যাচে ২ গোল এবং একটি এ্যাসিস্টসহ ৩টি গোলে অবদান রেখে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছেন লিওনেল মেসি।

চেলসির বিপক্ষে প্রথম লেগে বার্সেলোনার হয়ে একমাত্র গোলটিও মেসি করেছিলেন।

অন্যদিকে ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ, জুভেন্টাস, সেভিয়া রোমা চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়াটার ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে। মার্চের ১৬ তারিখে এই আট দলের মাঝে কোয়াটার ফাইনালের ড্র অনুষ্ঠিত হবে।