খেলোয়াড়দের কুসংস্কার মেনে চলার কথা সব সময়ই শোনা যায়। ফুটবল খেলায় যেন এই কুসংস্কারে বিশ্বাসের প্রবণতা আরো বেশি। মেসি রোনালদো থেকে শুরু করে ক্রিকেটের এম এস ধোনি ও ভিরাট কোহলি সবারই কিছু না কিছু কুসংস্কারে বিশ্বাস রয়েছে। কিন্ত আমরা অদ্ভুদ ঘটনার সাক্ষী হই যখন ২০১০ সালে স্পেন বিশ্বকাপের আটটি ম্যাচের নির্ভূল ফলাফল অনুমান করে বিশ্বের বহু ফুটবল অনুরাগীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল পল নামের এই অক্টোপাসটি। বিশ্বকাপের সময় দুটি বাক্স থেকে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের পতাকা আঁকা ঝিনুক বেছে নিয়ে ম্যাচের ফলাফল সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করে হৈচৈ ফেলে দেয়। ২০১০ বিশ্বকাপে পলের আটটি ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি মিলে যায় যার মধ্যে ছিল ফাইনালের হলান্ড-স্পেন ম্যাচটিও।
পরের বার ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপেও খেলার ভবিষ্যৎবাণীর নতুন কিছু দেখতে আগ্রহী হয়ে ওঠে বিশ্ববাসী। সেবার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো গণক নির্ধারণ করা না হলেও কখনো উট, কখনো হাতি কিংবা কখনো কচ্ছপ বা পান্ডা দিয়েও ভবিষ্যৎবাণী করতে দেখা গেছে আগ্রহী সমর্থকদের।
এ বছর বিশ্বকাপের আসর বসতে যাচ্ছে রাশিয়ায়। বিশ্বকাপ আয়োজক কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিড়ালকে নির্ধারণ করেছে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য। রাশিয়ার বিখ্যাত জাদুঘর সেন্ট পিটার্সবার্গের হার্মিটেজ মিউজিয়ামের আশ্রমে বসবাসরত সাদা রংয়ের এই বিড়ালই হবে রাশিয়া বিশ্বকাপের গণক।

জাদুঘরটির হার্মিটেজ বিড়ালের প্রেস সেক্রেটারি মারিয়া হালটানেন জানান, বিড়ালটিকে নির্ধারণ করার পেছনে কারণ হচ্ছে, তার বিচক্ষণতা ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা।
১৭৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটির চিত্রাঙ্কন পাহারা দেয়ার জন্যে হার্মিটেজ বিড়াল নিয়োগ দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম না। তার সাথে রয়েছে এমন আরো ৫০ জন। এর নামকরণের পেছনেও রয়েছে জাদুঘরটির ঐতিহ্য। ঐতিহ্য অনুযায়ী তারা মিথোলজির বিভিন্ন চরিত্র থেকে নাম নিয়ে থাকে যা ফলস্বরূপ বিড়ালের নামকরণ হয় অ্যাকিলিস। এছাড়া সহকর্মী বিড়ালদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত এবং বিচক্ষণ হওয়ায় তাকে বেছে নেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে জন্ম থেকেই বধির হওয়ার কারণেই অ্যাকিলিসের মধ্যে সুচতুর অনুমান এবং বিচক্ষণতার ক্ষমতা রয়েছে।
কিন্ত কিভাবে নির্বাচন করবে অ্যাকিলিস? দুই পাত্রে তার জন্যে খাবার হিসেবে ইঁদুর রাখা হবে এবং অ্যাকিলিস যেই পতাকা সম্বলিত খাবার গ্রহণ করবে সেটাই নির্ধারণ করা হবে ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে। উল্লেখ্য যে অ্যাকিলিস এর আগে কনফেডারেশন কাপে চারটার মধ্যে তিনটা খেলার ভবিষ্যদ্বাণীই সফলভাবে করে দেখিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পলের মতো ফুটবল বিশ্বাকপের ফলাফল নিয়ে অনুমান করে চমক দেখাতে পারে কিনা অ্যাকিলিস?