ঈশ্বর-পৃথিবী ও জীবন নিয়ে স্টিফেন হকিংয়ের কিছু আলোচিত ভাবনা

ঈশ্বর-পৃথিবী ও জীবন নিয়ে স্টিফেন হকিংয়ের কিছু আলোচিত ভাবনা

একনজরে হকিং

পুরো নাম : স্টিফেন উইলিয়াম হকিং

জন্ম : ৮ জানুয়ারি, ১৯৪২

মৃত্যু : ১৪ মার্চ ২০১৮

জাতীয়তা : ব্রিটিশ

কাজ : জেনারেল রিলেটিভিটি, কোয়ান্টাম গ্রাভিটি

বই : ‘এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম’, ‘দি ইউনিভার্স ইন অ্যা নাটশেল’, ‘অন দি শোল্ডার্স অফ জায়ান্টস’, ব্ল্যাকহোল অ্যান্ড দি বেবি ইউনিভার্স’, ‘দি ফিউচার অফ স্পেস টাইম’, ‘থিওরি অফ এভরিথিং’ ইত্যাদি।

বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে স্টিফেন হকিংকে ধরা হতো। তিনি ছিলেন একাধারে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, কসমোলজিস্ট ও লেখক। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর থিওরিটিকাল কসমোলজিতে তিনি গবেষণা বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বিখ্যাত বই ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ বা A Brief History of Time বহুল পঠিত ও আলোচিত একটি বই। মূলত, বিগ ব্যাঙ থেকে কেমন করে আজকের পৃথিবী এলো তা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে ওই বইটিতে। ‘অ্যামিওট্রপিক লেটারাল লেরোসিস’ রোগের কারণে তিনি ২১ বছর বয়স থেকেই অসুস্থ ছিলেন এবং তার চলাফেরা, শোনা, বলা- সবকিছুই যন্ত্রনির্ভর ছিল। যখন ওই রোগে আক্রান্ত হন তখন ডাক্তার বলেছিলেন, হয়তো তিনি আর দু’বছর বাঁচবেন। ডাক্তারের সেদিনকার কথা মিথ্যা প্রমাণ করে তিনি ৭৬ বছর বয়সে আজ মৃত্যুবরণ করেন। স্পিচ জেনারেটিং ডিভাইসের মাধ্যমে তিনি অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

স্টিফেন হকিংয়ের ধারণা, ‘মৃত্যুর পর আর কোনাে জীবন নেই। পরকাল, স্বর্গ- এগুলো অন্ধকারকে ভয় পাওয়া মানুষের তৈরি রূপকথা।’ এমন নানান উক্তি বিশ্বে আলোচনার ঝড় তুলেছে বিভিন্ন সময়।

নন্দিত-নিন্দিত ওই বিজ্ঞানীর কিছু বিখ্যাত উক্তি একনজরে দেখে নিতে পারি-

‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে সৃষ্টিকর্তা, স্বর্গ-নরক বলতে কোনাে কিছুরই অস্তিত্ব নেই মন্তব্য করে স্টিফেন হকিং বলেছেন, মৃত্যুর পর শুধুই অন্ধকার বিরাজমান।

বুদ্ধিমত্তা তাকেই বলে যখন আপনি পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন।

আকাশের নক্ষত্ররাজির দিকে তাকাও, কখনো তোমার পায়ের দিকে নয়। তুমি যা দেখছ তা উপলব্ধি করার চেষ্টা করাে এবং বিস্ময়াভূত হও যে, পুরো বিশ্ব কেমন করে টিকে আছে। কৌতূহলী হতে শেখো।

জীবন যেমনই কঠিন হোক না কেন, অবশ্যই এমন কিছু আছে যা তুমি করতে পারবে এবং ওই কাজে তুমি সফল হবে।

বিজ্ঞান শুধু অনুসন্ধান বা কার্যকারণের শিষ্যই নয়, বরং তা এক ধরনের ভালোবাসা ও অনুরাগও বটে।

যদি আপনি সব সময় রাগান্বিত থাকেন এবং অভিযোগ করতে থাকেন, কেউ আপনার জন্য নিজের মূল্যবান সময়টুকু দিতে চাইবে না।

জীবনটা খুবই ছন্দহীন হয়ে যেত যদি জীবনে কোনাে হাসি-ঠাট্টা না থাকতাে।

একটি বৃহৎ মস্তিষ্কের নিউরনগুলো যেভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত থাকে, আমরাও বর্তমানে ইন্টারনেটের সঙ্গে এভাবেই যুক্ত আছি।

আমার মতাে অন্যান্য চলৎশক্তিহীন ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আমার উপদেশ হবে এই যে, আপনারা কখনো নিজেদের নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না বা আপনার অবস্থা কেন এমন হলাে তা নিয়ে কারণ খুঁজতে যাবেন না। এর কোনাে কারণ নেই। এর চেয়ে নিজের মধ্যে যতটুকু শক্তি আছে তা দিয়ে অন্যের উপকার করুন।

কয়েকদিনের পূর্বাভাস না দেখে কেউ হঠাৎ করে একদিনের আবহাওয়া পূর্ভাবাস বলে দিতে পারবে না।

অভিকর্ষ থাকার কারণেই এই বিশ্ব শূন্য থেকে তৈরি হয়ে যেতে পারে।