‘গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিরূপণ করা যায় না’

সাবা মাহমুদ এর সাক্ষাৎকার

‘গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিরূপণ করা যায় না’

মানতে খুবই কষ্ট হলেও এটিই সত্যি, সাবা মাহমুদ (১৯৬২-২০১৮) আর আমাদের মধ্যে নেই।  গত ১০ মার্চ সবাইকে বিস্মিত করে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি। এই মৃত্যু এতই আকস্মিক ছিল যে, সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তার অসংখ্য গুণগ্রাহীকে শোকের সাগরে ভাসিয়েছে। ক্যানসারের আকস্মিক ছোবলে তিনি হঠাৎ করে দুনিয়া থেকে চলে গেলেও তার কাজ রয়ে গেছে। ‘সেকুলারিজম, নৃবিজ্ঞান, ভায়োলেন্স, আইন, এথিক্স, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, ইসলাম ও ফেমিনিজম নিয়ে কাজ করা নারী চিন্তকদের মধ্যে সম্ভবত সারা দুনিয়ায় তার মতো প্রভাব বিস্তারকারী চিন্তক আর কেউ নেই। তার অন্যতম কাজগুলো হলো ‘পলিটিকস অফ পাইটি’, ‘রিলিজিয়াস ডিফারেন্স ইন অ্যা সেকুলার এইজ’, ‘ইজ ক্রিটিক সেকুলার’, ‘পলিটিকস অফ রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ প্রভৃতি। তবে ওইসব কাজের মধ্যে ‘পলিটিক্স অফ পাইটি’ বইটি তাকে সারা দুনিয়ায় চিন্তক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি দিয়েছে। এটি বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ওই বইটি নিয়েই এ আলাপে তিনি কথা বলেছেন…

সাবা মাহমুদের কাজের গুরুত্ব যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘দি লাইট ইন হার আইজ’ ডকুমেন্টারি ফিল্মটিতে নেয়া সাক্ষাৎকারটি ‘জবান’-এর পাঠকদের জন্য অনুবাদ করে দেয়া হলো। অনুবাদ করেছেন মিনহাজ আমান

 

প্রশ্ন : ‘পাইটি মুভমেন্ট’ বা ‘ধার্মিকতার আন্দোলন’টি আসলে কী?

সাবা মাহমুদ : মধ্যপ্রাচ্যসহ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নারীরা আজকাল এক ধরনের নিয়ম-মাফিক ইসলাম চর্চার চেষ্টা করছেন। তারা কােরআন মুখস্থ করছেন, কােরআন পাঠের নিয়ম-নীতি যাকে বলা হয় তাজবিদ, এটি তারা মানছেন। তারা হাদিসও শিখছেন। কোথাও কোথাও তারা মসজিদে বসেই এসব চর্চা করছে যেখানে আগে তারা এসব ঘরে বসেই চালাতেন। তারা এখন বাস্তববাদী নানান চর্চা করছেন, মানে, যেসব কাজ বর্তমান সমাজের জন্য বেশ দরকারি। কিন্তু তারা আবার এসব কাজ করতে গিয়ে তাদের শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্বসহ দৈনন্দিন ও সামাজিক ব্যস্ততা বাদ দিচ্ছেন না, যে ব্যস্ততা সমাজে বসবাসরত নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই জরুরি।

এই আন্দোলনে আপনার আগ্রহ কীভাবে তৈরি হলাে?

মাহমুদ : আসলে শুরুতে কিছু নারী আমাকে একবার বললেন, ‘জানেন, মসজিদ-ঘরে আমাদের আন্দোলন ব্যাপক হারে বাড়ছে।’ পরে কিছু ইসলামি গণমাধ্যমে খোঁজ করলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। এত সাড়া জাগানো একটি ব্যাপার! অথচ জনমনে তা নিয়ে কোনাে আলাপ নেই? এছাড়া কী ধরনের চর্চার পরিবর্তন এলে আমাদের সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনে প্রভাব ফেলছে- এটাও জানা প্রয়োজন।

কোন বয়সের নারীরা ওই ধরনের চর্চায় জড়িত হচ্ছে এবং এর শুরুটা হয় কীভাবে?

মাহমুদ : আমার অভিজ্ঞতা বলে, মূলত ১৪-১৫ বছর বয়স থেকেই শুরু হয়। ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত ওই ধারা চলে। তবে বেশির ভাগ ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই ঘটে।

আপনি কি বলবেন, ওই চর্চাটি দেশ থেকে দেশান্তরে একই? মানে, ওই এথিকস ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কি মিসর থেকে সিরিয়া, মরক্কো- সব জায়গার ক্ষেত্রেই সত্য? সবখানেই কি একই চর্চিত ইসলাম দেখা যায়?

মাহমুদ : এর একাট্টা উত্তর তো আসলে যা দেখেছি ও পড়েছি এর ওপর ভিত্তি করে বলতে পারবাে না। তবে ব্যাপক মিল পেয়েছি। জানি না, ওই চর্চার ইসলাম সব জায়গায় একই, নাকি তারা ইসলামের ক্ষেত্রে একই সমস্যার মুখোমুখি হন।

কিন্তু তাদের চর্চার জায়গা হিসেবে ঘরের বদলে মসজিদের ব্যবহারের কোনাে বিশেষ গরেুত্ব আছে? থাকলে কী সেটি?

মাহমুদ : মসজিদ বেশ বড় জায়গা এবং প্রচলিত অর্থে মসজিদ পুরুষদের জায়গা। মিসরে ১৯৫০ সালে জয়নাব আল গাজ্জালি-র মত বেশ জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন যারা মসজিদে নানান কিছুর শিক্ষার আয়োজন করতেন। এতে তিনি সাড়া পান এবং আল আজহারেই পড়ানো শুরু করেন। যখন তিনি পড়ানো থামিয়ে দিলেন, তখন আসল আন্দোলন শুরুর আগ পর্যন্ত সেখানে কেউ আর এভাবে পড়াতে পারেননি। আপনি যখন দেখেন ৫০০ নারী একসঙ্গে মসজিদে সপ্তাহে দু’দিন এভাবে শিক্ষা নিচ্ছেন তখন ওই ছবিটিই অনেক কিছু বদলে দেয়ার মতাে। তারা একই ইসলামই পড়ছেন। তবে তাদের ব্যবহারটি বেশ ভিন্ন।

আপনি কি মনে করেন নারীদের ইসলামি জ্ঞান বৃদ্ধি পেলে তারা প্রচলিত সাংস্কৃতিক চর্চাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন?

মাহমুদ : হ্যাঁ অবশ্যই। আমার বইয়ে এমন একটি উদাহরণও আছে। এক নারী যিনি এভাবে বেশ জ্ঞান বিলি করতেন।আমাকে ইসলামের আসল পথের ব্যাপারে তিনি নানান কথা বললেন এবং তিনি নারীদের নামাজে ইমামতিও করেন। মসজিদের আসল ইমাম বলেছেন, ওই নারীর এসব করা উচিত নয়। কিন্তু তিনি মনে করেন, ওই ইমামের চেয়ে তিনি বেশি জানেন এবং ইসলামের এক মানহাজ মতে, নারীদের ইমামতি করা অনুমোদনযোগ্য। এছাড়া ইসলামের নানান মানহাজের মধ্যে যে কোনাে একটি অবলম্বন করার হুকুম থেকেও তার নিজের ইচ্ছামতো মানহাজ বাছাইয়ের সুযোগের অধিকার আছে। ফলে নারীদের ইমামতিতে নারীদের নামাজ ওই মসজিদে অল্প সময়ে প্রতিষ্ঠিত হলাে। কিন্তু কেউ হয়তাে বলতে পারেন, তিনি সম্মানিত ইমামের বিরুদ্ধে গেছেন। কিন্তু তার দাবি হলাে, ইমামের বিরুদ্ধে যাওয়ার অধিকারের তিনি প্রাপ্য।

এ ধরনের আন্দোলন সহযোগিতা নির্ভর, নাকি রাজনৈতিক?

মাহমুদ : সহযোগিতামূলক কোনাে আন্দোলন হওয়াটা কল্পনার বাইরে। কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে বলা যায়, এটি সংগঠিত কোনাে রূপ নিলেই রাষ্ট্র এতে বাধা দিত এবং সংগঠিত হওয়ার জন্য এক ধরনের মাধ্যমের প্রয়োজন থাকে। আমি মনে করি না, ওই নারীদের সংগঠিত হওয়াটা রাষ্ট্রের জন্য খুব আনন্দের বা কাজের কোনাে বিষয় হবে। তাই আমি মনে করি না, ওইসব আন্দোলন সংগঠিত ও সহযোগিতামূলক হতে পারে। আবার প্রচলিত রাজনীতির সামাজিক ভিত্তি মাথায় রেখে ওই আন্দোলনটি রাজনৈতিক আন্দোলনও বলা যায় না। কেননা রাজনীতি শুধু রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়াই নয় কিংবা সরকারের নীতি পরিবর্তন বা নাগরিক সমাজের সঙ্গে যুক্ততাও নয়। রাজনীতি সমাজকে ভেতর থেকে বদলায়।

পশ্চিমারা একটি প্রশ্ন প্রায়ই করেন, আসলে নারীরা ধর্মপ্রাণ মুসলিম হন কিসের আশায়? কেনই বা করেন এসব?

মাহমুদ : আমি দেখেছি, তারা নানান সময় পরিবারের মা-নানিদের প্রজন্মের বিরোধিতা করে এসব করছেন। তারা মনে করেন, তারা তার মা-নানিদের থেকে চিন্তায় বেশ অগ্রসর। এর কারণ হচ্ছে, তার মা-নানির প্রজন্ম মূলত ষাট-সত্তরের দশকের জামাল নাসের, আসাদের ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট মডেলের আওতায় বড় হয়েছেন। ওই শাসনের আলখেল্লাটা মূলত পশ্চিমা আদলে তৈরি। মিশরের জামাল আবদন নাসের-এর সরকার ও সিরিয়ার হাফিজ আল আসাদ-এর সরকার- দুটিই মূলত প্রতিষ্ঠিত সেকুলার সরকার। ফলে এটি এ প্রজন্মের সঙ্গে ওই প্রজন্মের একটি ব্যাপক তফাত তৈরি করে দিয়েছে।

আমি মনে করি, এটি চিন্তার একটি বুনিয়াদি ব্যাপার যে, পুণ্যের বেশ মর্যাদা আছে এবং এর মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছাকাছি যাওয়া যায়। ফলে ওই পুণ্যতা সবাই খুব করে চান। এর গভীর অনুভব আছে, ‘ওই পুণ্যের মধ্য দিয়েই জীবন তার আসল মানে পাচ্ছে।’ কোনাে ধ্যান বা গৃহত্যাগী না হয়েও সৃষ্টিকর্তার প্রতি এরূপ ভালােবাসার গভীর তাৎপর্য আমাদের আমলে নিতে হবে। অবশ্য আমি মনে করি, আমাদের পশ্চিমা মগজ দিয়ে এসব ধর্মপ্রাণ নারী কীভাবে এসব অক্ষত রেখে আধুনিক-সেকুলার দুনিয়ায় চলেন তা বােঝা কঠিন। তারা পথে চলতে চলতেই ওইসব সমস্যার সমাধান বের করে নেন। উদাহরণ চাইলে বলা যায়, কোনাে নারী যদি গণপরিবহনে যৌন হয়রানির শিকার হন তাহলে ধর্মপ্রাণ নারী হিসেবে তার করার কী আছে? প্রায়শই, আগে নারীরা ধর্ম প্রচারকদের কাছে প্রশ্ন করতেন, স্বপ্নদোষ হলে বুঝবাে কী করে বা আমার আকাঙ্খার লাগাম ধরবাে কী করে কিংবা বাগদত্তার সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন হবে অথবা কোনাে নারী জানলেন তার মেয়ে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে- তার কী করণীয়  হবে ? ফলে নারীরা এসব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ শায়খদের বরাবর চিঠি লেখতেন। এখন তারা এসব প্রশ্ন অন্য নারীদের সঙ্গে আলোচনায় সমাধা করতে পারছেন, হচ্ছে উন্মুক্ত আলোচনা।

আপনি হিজাবকে এই মুহূর্তের আলোচিত ইস্যু মনে করেন কিসের ভিত্তিতে? নারীদের ক্ষেত্রে ওই হিজাবের গুরুত্ব কেন এবং পশ্চিমা ও সেকুলাররা সমাজে হিজাবের বিরুদ্ধে উচ্চস্বর কেন?

মাহমুদ : হিজাব এই মুহূর্তে বেশ শোরগোল তোলার মতো ব্যাপার। তবে হিজাব প্রশ্নে পশ্চিমা ও ইসলামের মুখোমুখি অবস্থান মূলত একটি উপনিবেশিক সিলসিলা। উপনিবেশিক শাসনকালে পর্দাকে ইসলামের সাংস্কৃতিক হীনমন্যতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অন্য অর্থে তারা মনে করে, নারীকে ইসলাম পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবেই দেখে এবং পর্দাকে সেটির চিহ্ন হিসেবে দেখে। উপনিবেশিক সাহিত্যে এর ঢের প্রমাণ দেখা যায়।

আলজেরিয়ার মতো নানান জায়গায় নারীদের উন্মুক্ত রাস্তায় হিজাব টেনে খুলে ফেলা হয় যাতে তারা ইসলামের পুরুষতান্ত্রিক মুঠো থেকে বের হয়ে আসতে পারে। যেমন- রেজা শাহ পাহলভি-র সময় প্রথমবারের মতাে হিজাব নিষিদ্ধ করলেন। একই ঘটনা তুরস্ক ও মিসরে ঘটেছে, এমনকি হুদা শারাওয়ের মতো নারী যারা রাস্তায় তার হিজাব খুলে ফেলেন তিনি দাবি করেন, এটিই তার স্বাধীনতা। তার পরের প্রজন্ম আবার বলছে, হিজাব আসলে কোনাে অত্যাচারের প্রতীক নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। অনেক নারী বলেন, হিজাবই আমাদের পরিচিতি, এটিই ইসলাম।

আবার কয়েক নারী আছেন যারা কোনাে চিন্তা থেকে হিজাব করনে না। তারা বলেন, হিজাব করেন। কারণ তার রব আদেশ করেছেন এবং এটিই ধর্মের পথ। আমি মনে করি, ওই ধরনের অবস্থান পশ্চিমারা বুঝতে পারনি না। এমনকি যৌনতার ক্ষেত্রে ওই ধরনের উপস্থাপনাও পশ্চিমা যৌনতার ধারণা থেকে আলাদা। এমন নয়, ইসলাম যৌনতা মানেই অবরোধ আর পশ্চিমারা উদাসীন। আসলে যৌনতা বিষয়ে তাদের ভাবনাটিই ভিন্ন।

পর্দা-হিজাব বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অতি চিন্তা এবং পর্দাকে ইসলামের পশ্চাৎপদতা প্রমাণের চেষ্টা চলছে নানান লেখা ও কাজে। তাই বলা হচ্ছে, সভ্যতার পাশে থাকতে পর্দাকে বাদ দিতে হবে।

আপনার রক্ষণশীল ইসলামের পরিবর্তে অর্থডক্স ইসলাম বলার পেছনে কী কারণ?

মাহমুদ : আমাদের কাছে রক্ষণশীলতাও এক ধরনের রাজনীতি। ফলে নৈতিক সংখ্যাগুরুতা এক্ষেত্রে খুব ভালাে উদাহরণ। যদি সবাই ওই ধরনের সংখ্যাগুরুতার সঙ্গে অংশীদার হয়, তাহলে গর্ভপাত বিরোধিতা বাড়বে। ফলে রিপাবলিকান পার্টির অংশে থাকা মানেই তারা কনজারভেটিভ অর্থাৎ রক্ষণশীল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়বে- রক্ষণশীলতার ব্যাখ্যা আমার কাছে এমনই। এটি মূলত লিবারাল ইসলামের উল্টোপিঠ যেটি ধারণা করা হচ্ছে, লিবারাল রাজনীতির জন্য আরো সহজসাধ্য হবে। কিন্তু মুসলিম বিশ্বে এ রকম হয় না। বিষয়টি ইসলাম নিয়েও নয়, বরং যারা ইসলামের নানান আন্দোলনে আছেন তারা যে কোনাে সময় র‌্যাডিকাল হয়ে উঠতে পারেন। যেমন- বাজি ধরে বলতে পারি, মিসর, তুরস্ক, তিউনিসিয়া-র মতাে দেশগুলয়ি গণতান্ত্রিক উন্নয়নের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন আছে। এটিকে আর যাই হোক, গণতন্ত্রহীনতা বলা যায় না। ফলে পুরনো বিশ্ব ব্যবস্থায় লিবারাল বনাম কনজারভেটিভ যে তফাত কাজ করতাে, যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা বা রক্ষণশীলতা মাপা হতাে গণতন্ত্র দিয়ে এটি কাজ করবে না। তাই যখন কোনাে সেকুলার চিন্তা-ধারার কেউ বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা যারা চান তারা আসলে আরেকটা ইরান চনে। আমি এমনটি মনে করি না।

মিসরের মসজিদের নারীদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আপনি কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন?

মাহমুদ : আমি সেখানে গিয়েছিলাম মূলত কিছু পূর্বানুমান নিয়ে যেসবের সমালোচনা বের করেছি। বলেছিলাম, তারা খুবই রক্ষণশীল এবং তাদের কাজের বিষয়ে তত কিছু ভাবিনিও। পরে খুব অবাক হয়েছি, তাদের সচেতনতা ও লড়াই দেখে। ওই ভ্রমণ আমার চোখ খুলে দিয়েছে। গবেষণার বরাত দিয়ে খুব বেশি মিশতে পারিনি। একেবারে অতি সাধারণ হিসেবেই তাদের সঙ্গে মিশেছি। দু’বছর পর তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি।