রিয়াল মাদ্রিদ ২ – ১ এইবার
রোনালদো ৩৪, ৮৪ | রামিস – ৫০
“প্রতিপক্ষের চেয়ে পুরো ম্যাচ খারাপ খেলেও আপনি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবেন, যদি আপনার দলে একজন রোনালদো থাকে।”
এমনটাই ঘটেছে মাদ্রিদ বনাম এইবার এর ম্যাচে। রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান এই ম্যাচ শুরুর আগেই হেরে গিয়েছিলেন। তার সেই হার ঘটেছিল ট্যাকটিক্স বোর্ডে। রিয়াল মাদ্রিদই এই ম্যাচে ছিল দুর্বল, দাপুটে পারফর্মেন্সতো দেখিয়েছে এইবার।
প্রথমার্ধ
ম্যাচের একদম শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে এইবার। বল বেশিরভাগ সময়ই ছিল তাদের পায়েই। রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের রক্ষণভাগ থেকে আক্রমণে যাওয়ার কোন রাস্তাই যেন খুঁজে পাচ্ছিল না। বল পায়ে এলেও সেটা আবার এইবার খেলোয়াড়দের চাপে হারিয়ে ফেলছিলো বারংবার। পুরোটা সময় তারা ব্যস্ত এইবারের আক্রমণ সামলাতে। কিন্তু ভাগ্য এইবারের সহায় ছিল না। অনেকগুলো সুন্দর আক্রমণ থেকেও তারা একটি গোলও বের করে আনতে পারেনি। মাদ্রিদও গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল কয়েকটি। কিন্তু তারাও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। তাই অনেক সুযোগ সৃষ্টি হলেও খেলার প্রথম ৩০ মিনিট ছিল গোলশূন্য। ম্যাচের ৩৪ তম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। গোলটি আসে এইবার খেলোয়াড়দের ভুল থেকেই। এইবার ডিফেন্ডার আরবিলার করা পাসের মাঝে বাধ সাধেন মদ্রিচ। তারপর নিখুত এক লং পাসের মাধ্যমে বল পাঠান রোনালদোর কাছে। রোনালদোও ভুল করেননি কোন। নিজের বুকের সাহায্যে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো এক শটে তা পাঠিয়ে দেন এইবার এর জালে। প্রথমার্ধে আর কোন গোল না হলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মাদ্রিদ। এরই মধ্যে ম্যাচের ২৬ তম মিনিটে মাথার ইঞ্জুরির জন্য জিদান মাঠে থেকে তুলে নেন ভারানেকে। বলে মাথা ছোঁয়াতে গিয়ে এইবার খেলোয়াড় গার্সিয়ার মাথার সাথে ভারানের মাথার ধাক্কা লাগে। এতে ভারানের কপাল ফুলে যায় এবং তাকে বদলি করে নাচোকে মাঠে নামান জিদান।
দ্বিতীয়ার্ধ
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচে ফিরে আসে এইবার। ম্যাচের ৫০ তম মিনিটে এইবার ডিফেন্ডার রামিস কর্ণার থেকে আসা বলে খুব সহজে মাথা ছুঁইয়ে দিয়ে এইবারকে ম্যাচে সমতায় ফেরান। রামিসকে মার্ক করা মাদ্রিদ ক্যাপ্টেন রামোস ফুটবলের ভাষায় “বল ওয়াচিং” এ ব্যস্ত হয়ে পরলে খুব সহজেই নিজের জন্য স্পেস ক্রিয়েট করে নেন এইবার ডিফেন্ডার রামিস। যদিও মাদ্রিদ গোল খাওয়ার কিছু সময় পরেই ম্যাচে আবার এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু বেল এর ক্রস থেকে রোনালদোর কতা শট শক্ত হাতে ঠেকিয়ে দেন এইবার গোলরক্ষক ডিমিত্রোভিচ। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও এইবার প্রথমার্ধের মতই দুর্দান্ত খেলে যেতে থাকে। ম্যাচের একটা সময় মনে হচ্ছিলো এইবারই হয়তো যেকোন সময় একটি গোল করে জিতে নিবে ম্যাচটি। বেশির ভাগ সময়ে বল তাদের দখলে থাকলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি এইবার। উল্টো ম্যাচের ৮৪ তম মিনিটে আরেকটি ভুলের মাশুল গুনতে হয় তাদের। এবারও ভুলের শাস্তিদাতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে রোনালদোর। এইবার খেলোয়াড় লিওনের পাসে ইন্টারসেপ্ট করেন কার্ভাহাল এবং পেনাল্টি বক্সের মধ্যে একটি নিখুঁত ক্রস দেন তিনি। ক্ষিপ্রগতিতে দৌড়ে এসে সেই ক্রস থেকে হেডের মাধ্যমে গোল করেন রোনালদো। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে গেলেও সেই গোল পরিশোধ করতে পারেননি এইবার খেলোয়াড়রা। ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।
এই ম্যাচে জোড়া গোলের মাধ্যমে গত ৭ ম্যাচে রোনালদোর গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। ২০১৭-১৮ মৌসুমে মাদ্রিদের হয়ে তিনি ৩৪ ম্যাচ খেলেছেন এবং করেছেন ৩৩টি গোল। লীগ টেবিলে মাদ্রিদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। ২৮ ম্যাচ খেলে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল আছে টেবিলের ৩ নম্বর স্থানে। অপরদিকে বার্সা ২৭ ম্যাচ খেলে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ৬১ পয়েন্ট নিয়ে ২য় স্থানে আছে এথলেটিকো মাদ্রিদ।