সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের একটি দল জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আলজাজিরার খবরে বলা হয়, ‘ইরায়েলের অপরাধে ইন্ধন জোগাচ্ছে ফেসবুক’ এবং ‘ইসরায়েলের দখলদারিত্বে সমর্থন দিচ্ছে ফেসবুক’- এমন লেখা সংবলিত ব্যানার প্রদর্শন করেন বিক্ষোভকারীরা।
৫ মার্চ সোমবার ফিলিস্তিনি এনজিও ‘জার্নালিস্টস সাপোর্ট কমিটি’র ওই বিক্ষোভে হামাসের মুখপাত্র সালামা মারুফ তার বক্তব্যে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে মত প্রকাশে স্বাধীনতার পরিপন্থী আচরণের অভিযোগ করেন।
বিক্ষোভের আয়োজকরা জানান, ফিলিস্তিন কোনাে কারণ ছাড়াই গত বছর ২০০ নাগরিকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়। এ বছর দুই মাসের মধ্যেই ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ২০ শতাংশ ইসরায়েলি নাগরিকের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়ে থাকে যাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধের কোনাে ভয় নেই।
ফেসবুক ও ইসরায়েলের বন্ধুতা
২০১৬ সালের শেষের দিকে ইসরায়েলি বিচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ফেসবুক একটি চুক্তি সই করে যাতে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের অ্যাকাউন্ট ‘পর্যবেক্ষণ’ করবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
২০১৭ সালের মার্চে বন্দুক হাতে ইয়াসির আরাফাতের একটি ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ফাতাহ-র ফেসবুক পাতাটি বন্ধ করে দেয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ- উভয়ের প্রতি সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি রাখে এমন একটি রাজনৈতিক রম্য প্রকাশকারী ফেসবুক পাতা ‘মিশ ইয়াক’। এটিকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার বন্ধ করেছে আবার খুলেও দিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমগুলো সাধারণত রাজনৈতিক কোনাে পোস্ট নিয়ে কখনো আপত্তি করে না বা মুছেও দেয় না। যেটি তারা নিয়ন্ত্রণ করনি সেটি হচ্ছে ঘৃণামূলক কোনাে কিছু হচ্ছে কি না বা সহিংসতা উসকে দেয়া কোনাে কিছু পোস্ট দেয়া হচ্ছে কি না।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিমালায় স্ববিরোধীতা ও ঘাপলা রয়েছে।
RT DaysofPalestine "#Facebook is the occupation’s partner in crimes against Palestinians and collaborates with Israeli ageist the Palestinians.#FBfightsPalestine pic.twitter.com/mZxO2oBRh1"
— Richard Hardigan (@RichardHardigan) March 7, 2018
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টরা মিলে নিজেদের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যার নাম ‘সাডা সোশ্যাল’। এটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর ফিলিস্তিনের তিন সাংবাদিকের উদ্যোগে চালু হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ফেসবুক ও ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের যেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে সেগুলো ওইসব সামাজিক মাধ্যমের কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা।
সাডা সোশ্যাল-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইয়াদ আলরেফায়ি আলজাজিরাকে বলেন, ‘ইসরায়েলিওি ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রে আলাদা নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।’ ফিলিস্তিনিদের হত্যার আহ্বান জানিয়ে কোনাে ইসরায়েলি যদি পোস্ট দেয় এতে তার ‘কিছু হয় না’। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর কোনাে অত্যাচার বা অপরাধের কোনাে কিছু যদি কোনাে ফিলিস্তিনি পোস্ট দেয় তাহলে ফেসবুক তা মুছে দিতে পারে যে কোনাে সময়। এমনকি এ কারণে তার অ্যাকাউন্ট বা পেইজও বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
#FBfightsPalestine pic.twitter.com/40KlUcLVJf
— Palestine Observer (@PalObserver) March 7, 2018