বার্সার জয়রথে লাগাম টানলো লাস পালমাস

বার্সার জয়রথে লাগাম টানলো লাস পালমাস

এবার লিগ টেবিলের তলানিতে ১৮ নাম্বারে থেকে রেলিগেশনের শঙ্কায় পড়া লাস পালমাসের কাছে হোঁচট খেলো বার্সেলোনা। সদ্য জিরোনাকে তাদের মাঠেই বিধ্বস্ত করেছিলো ভালভার্দের শিষ্যরা। তবে এক ম্যাচ যেতে না যেতেই লাস পালমাসের সাথে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো এবারের লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করা দলটির।

ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করে খেলছিলো বার্সেলোনা। ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায়ই  সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। তবে লাস পালমাসের গোলকিপারের দক্ষতায় সে যাত্রায় গোল বঞ্চিত হয় বার্সা। ম্যাচের ১০ মিনিটে ডি বক্সের একদম সামনে ফ্রি কিক পায় বার্সেলোনা। তবে মেসির নেয়া দূর্দান্ত ফ্রি কিক শ্যূটকে রুখে দেয় লাস পালমাসের আর্জেন্টাইন গোলকিপার লেয়ানর্দ্যো চিচিজোলা।

ম্যাচের ২০ মিনিটে আবারও ডি বক্সের একদম সামনে মেসিকে ফাউল করে লাস পালমাসের রক্ষণভাগের ফুটবলার। এবার আবারও ফ্রি কিক নেন মেসি তবে এবার আর স্বদেশীয় ফুটবলারের শ্যূটটি রুখতে পারেনি লেয়ানর্দ্যো। মেসির করা জোরালো শ্যূটে ম্যাচের ২১ মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এটি এ সিজনে তার করা ফ্রি কিক থেকে  ৪র্থ গোল এবং লা লিগায় ২৩ তম গোল।

এক গোলে পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচের ফেরার চেষ্টা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছিলো স্বাগতিকরা। তবে বার্সেলোনার রক্ষণভাগ এবং গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে পারছিলো না লাস পালমাসের ফরোয়ার্ডের খেলোয়াড়রা।

প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার একদম শেষ মুহুর্তে লাস পালমাসের গোলকিপার ডি বক্সের বাহিরের বল হাত দিয়ে ঠেকিয়ে ফেলে। যদিও বা সেটা অনিচ্ছাকৃত ভাবে ছিলো। তাই রেফারি তাকে কোনো শাস্তি দেয়নি। তবে বার্সেলোনার ফুটবলাররা এবং কোচ রেফারির কোনো ধরণের সাজা না দেয়ায় প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু ম্যাচ রেফারি এন্তোনিও মাতেও তিনি তার দেয়া সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন।

দ্বিতীয়ার্ধের আগে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও বার্সেলোনা যে আহামরি ভালো খেলেছিলো তা কিন্তু নয়। তাই প্রথমার্ধের ভুলগুলো কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বড় করার উদ্দেশ্যে মাঠে নামেন বার্সেলোনা।

অন্যদিকে নিজেদের মাঠে গোল করে সমতায় ফেরার উদ্দেশ্যে মাঠে নামেন লাস পালমাস।

ম্যাচের ৪৮ মিনিটেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরায় লাস পালমাসের আর্জেন্টাইন  ফরোয়ার্ড জোনাথ কাললেরি। লাস পালমাসের হয়ে শেষ ৭টি গোলের ৬টিতেই সরাসরি অবদান রেখেছিলেন তিনি। (৪ টি গোল, ২ টি এ্যাসিস্ট)।

জোনাথের করা গোলে লাস পালমাস সমতায় ফিরলে ভালভার্দে বার্সেলোনার আক্রমণের ধার বাড়ানোর জন্য ৫৭ মিনিটে কৌতিনহো,৬৩ মিনিটে রিকিটিচ এবং তার শেষ অস্ত্র ডেম্বেলেকে ৭৫ মিনিটে মাঠে নামান। আক্রমনভাগ শক্তিশালী হলেও শেষ পর্যন্ত আর কেউ গোল করে দলকে এগিয়ে নিতে পারেনি। যার ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে টানা ৫ ম্যাচ পরাজিত হয়ে অবশেষে পরাজয়ের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এলো লাস পালমাস। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষে ১৪ দেখায় ৫ টি ড্র এবং ৯ টিতে পরাজিত হয়েছে তারা।

অন্যদিকে জিরোনার বিপক্ষের ম্যাচে দূর্দান্ত ফর্মে থাকা সুয়ারেজ লাস পালমাসের বিপক্ষে পুরো ম্যাচ জুড়েই ফ্লপ ছিলেন। তাছাড়া কৌতিনহো, রিকিটিচ, ইনিয়েস্তাদেরকেও তাদের ধারাবাহিক ফর্মে দেখতে পাওয়া যায়নি।

গতকালের ম্যাচের পর লা লিগার ২৬ ম্যাচ শেষে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১ এ অবস্থান করছেন বার্সেলোনা অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে ৬১ পয়েন্ট নিয়ে মাত্র ৫ পয়েন্ট কম নিয়ে লিগ টেবিলের ২য় তে অবস্থান করছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে প্রায় বার্সেলোনার থেকে ১৫ পয়েন্ট কম নিয়ে ৩য় তে অবস্থান করছে রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগার দৌড় থেকে রিয়াল মাদ্রিদ ছিটকে গেলেও বার্সেলোনা এবং এ্যাটলেটিকোর মধ্যে লিগ শিরোপা জয়ের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। অন্যদিকে,
পরবর্তী ম্যাচে ক্যাম্প ন্যূতে বার্সেলোনার বিপক্ষে মাঠে নামবে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। সে ম্যাচেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে এ সিজনের লিগ শিরোপা কাদের হাতে উঠছে।