শুরুতেই চিন্তা ছিল ডেনিম এক্সপার্ট হবো : মোস্তাফিজ উদ্দিন

‘ডেনিম গুরু মোস্তাফিজ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার

শুরুতেই চিন্তা ছিল ডেনিম এক্সপার্ট হবো : মোস্তাফিজ উদ্দিন

ব্যবসা খাতের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এক ব্যবসায়ী মোস্তাফিজ উদ্দিন। পোশাক শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ এরিয়া হচ্ছে ডেনিম বা জিনস। সাবলীলভাবে নিজের পরিচয় দিচ্ছিলেন- ভাই, আমি জিনস প্যান্ট বানাই। চট্টগ্রামের কণফুলঅ ইপিজেড-এ আমার কারখানা। অত্যন্ত মার্জিত ও স্বপ্নবাজ ওই তরূণ ব্যবসায়ীর ধ্যান-জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ডেনিম। তিনি ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো-র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। নিজের ব্যবসার পাশাপাশি সারাক্ষণ লেগে থাকেন ডেনিম নিয়ে। তার আয়োজনে করা বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। ব্যবসার এ পর্যায়ে আসতে তাকে পেরোতে হয়েছে নানান চড়াই-উতরাই। ভারতের মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করে ১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে আসেন। ১২ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পরও জীবনযুদ্ধের কঠিন সংগ্রামের চাপে হারিয়ে যেতে দেননি নিজের স্বপ্নকে। বাংলাদেশের পোশাক খাতের বহুবিধ বিষয়সহ ব্যক্তিগত ধ্যান-ধারণা নিয়ে কথা বলেছেন ‘জবান’-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইয়াসির আরাফাত এবং ছবি তুলেছেন আসলাম নজরুল—

 

ইয়াসির আরাফাত : ব্যবসা শুরুর সময়কার পরিস্থিতিটা কেমন ছিল?

মোস্তাফিজ উদ্দিন : ওই সময় চিন্তাও করিনি ব্যবসা করবো। মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। পড়াশোনা শেষ করেই কিছু একটা করার তাগিদ থাকে। ওই তাগিদ থেকে একটা বায়িং হাউসে চাকরি নিলাম। তবে চাকরিতে মনকে বুঝ দিতে পারতাম না। ১৯৯৮ সালে মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করে দেশে এলাম। চিন্তা ছিল ইউএসএ যাবো স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে। আমরা যা চাই এর সব তো আর হয় না! চাকরিতে আমার মন সায় দিত না। এর পাশাপাশি নিজে অর্ডার খুঁজতাম। একবার কোনােমতে এক বিদেশি বায়ার-কে রাজি করালাম স্যাম্পল বানানোর। স্যাম্পল জমা দিলাম। তিন হাজার পিস প্যান্টের অর্ডারও দিলেন। মহাখুশি নিয়ে চট্টগ্রামে গেলাম। কিন্তু কোনাে ফ্যাক্টরির মালিক কাজ করতে চনে না। অনেক কষ্টে সেটি কমপ্লিট করলাম। ওই থেকে টুকটাক করে শুরু। চলতে লাগলো ব্যবসা।

 

কোম্পানির নাম ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড হওয়ার কারণ কী?

মোস্তাফিজ : ২০০৪ সালে এসে কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন নিতে যে সরকারি অফিসে গেলাম। তো অফিসার নাম দেখে বলেন, এটা আবার কেমন নাম। বাংলাদেশে সাধারণত নাম হয় আম্বিয়া অ্যাপারেলস, জসিমউদ্দিন অ্যাপারেলস- এ রকম। রেজিস্ট্রেশন অফিসার বললেন, এ রকম নাম হবে না। বললাম, দেখেন, আমি ডেনিম-এ এক্সপার্ট হতে চাই। এ জন্য ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড নামটাই দিতে হবে। তখন অনেকেই হাসতেন নাম নিয়ে। এখন ডেনিম-এর কথা এলে মোস্তাফিজ নামটা সবাই বলে। শুরু থেকেই চিন্তা করতাম, ডেনিমে এক্সপার্ট হবো। এখন আমার মনে হয়, সেটি হতে পেরেছি।

 

ব্যবসায় বাধা-বিপত্তি থাকেই। এ যাবৎ ব্যবসা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন কখন?

মোস্তাফিজ : ব্যবসা মানে প্রতিকূলতা থাকবেই। তবে শুরুতে আমার সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা ছিল আমার কোনাে গার্ডিয়ান ছিলেন না। সব জায়গায় জানতে চায় রেফারেন্স কী। এটিই আমার কাছে সব থেকে বিরক্তিকর মনে হয়েছে। এমনকি যখন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়েছি তখন সেখানেও রেফারেন্স জানতে চেয়েছিল। আমার ওই সময়ের কথাগুলো এখনাে মনে পড়ে রেফারেন্স-এর অভাবে কীভাবে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছিল। কিন্তু আমাদের আসলে দেখা উচিৎ, যে ব্যক্তি ব্যবসার জন্য সাহায্য চাচ্ছেন তিনি ব্যবসাটা বোঝেন কি না। যার ক্যাপাসিটি আছে, দক্ষতা আছে তাকে টাকা দিলে তিনি ঠিকই ভালাে করবনে। আমার মনে হয়, এখনো আমরা ওই রেফারেন্সের সংকট থেকে মুক্ত হতে পারিনি। তবে যোগ্যতা, সদিচ্ছা ও সৎসাহস থাকলে যে কেউ রেফারেন্স ছাড়াই সফল হতে পারেন। আমি হয়তো বা এর বড় উদাহরণ।

 

সম্পূর্ণ রফতানি নির্ভর পোশাক শিল্পের সঙ্গে দেশের রাজনীতির মাঠের পরিস্থিতির একটা সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসার পরিবেশ ঠিকঠাক থাকা বলতে কি শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতামুক্ত অবস্থাটিকেই বোঝায়?

মোস্তাফিজ : রাজনৈতিক অস্থিরতামুক্ত পরিবেশ তো থাকতেই হবে। রাস্তায় গ্যাঞ্জাম থাকলে মানুষ বাসা থেকে বের হয় না। শ্রমিকদের কাজের আসতে অসুবিধা হয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ- এই দুয়ের মধ্যে ব্যালান্স করে চলতে হবে। এছাড়া তো উপায় নেই। আমরা ব্যবসা করি, রাজনীতিওয়ালাদের এসব ঠিক করা উচিৎ। তবে ব্যবসার পরিবেশের জন্য আরো বিষয় থাকে। সেগুলো ঠিক না থাকলে ব্যবসার পরিবেশ ঠিক আছে বলা যায় না। যেমন- সরকারের সদিচ্ছা ও সহায়ক ভূমিকা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন থাকতে হবে।

 

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে কোন জিনিসটি সবার আগে দরকার বলে আপনার মনে হয়?

মোস্তাফিজ : সবার আগে আমাদের আইডেন্টিফাই করতে হবে কোনটা দুর্নীতি আর কোনটা দুর্নীতি নয়। একটা বিশেষ দিন এলেই বখশিশ দিতে হবে- এটা মনে হয় বাধ্যতামূলক। এখন তো দুর্নীতিই নীতি হয়ে গেছে। কোনো কোনো জায়গায় রসিদ দিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। ঈদ এলেই সবকিছুর দাম বেড়ে যায়- এটাও একটা দুর্নীতি।

 

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ভারতীয়দের প্রভাব ব্যাপারটি নানান মহলে আলোচিত। ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে কিছু বলেনও না তেমন। আপনি কী ভাবেন?

মোস্তাফিজ : এটা আমিও শুনেছি। আমাদের এখানকার মালিকরা মার্কেট করতে পারেন না। এ ব্যাপারটায় ভালাে-খারাপ দুটি দিকই আছে। আপনি বিদেশ থেকে একটা মেশিন আনলে তো সেটির সঙ্গেও পাঁচজন আসে। তাদের থেকে কাজটা বুঝে নিয়ে নিজেদের ছেলেদের তা শেখার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তা না করে যদি আপনি তাদের ওপর ছেড়ে দেন তাহলে তো হবে না। নিজেদের তরুণদের পেছনে ব্যয় করতে না পারলে এমন হবেই। ১০০ কোটি টাকা কামাচ্ছেন, স্টাফের দক্ষতা বাড়াতে এক কোটি ব্যয় করবেন না তা তো হয় না। আমার মনে হয়, এ রকম একটা আইন করা উচিৎ। আপনি জাকাত দিচ্ছেন, সিএসআর করছেন- এখানে ব্যয় করতে সমস্যা কী?

চীন, ইউরোপ ও ভারত থেকে বিদেশিদের আনতে হবে এবং তাদের থেকে আমাদের শিখে নিতে হবে। আমাদের তরুণদের শেখার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এ ছাড়া পথ দেখি না।

 

বড় বড় কারখানার মালিকানাতেও ভারতীয়রা প্রবেশ করছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

মোস্তাফিজ : এটা মালিকদের সমস্যা। আমাদের লোকজনকে শেখানোর জন্য কোনাে আমরা ব্যবস্থা করছি না। ভারতীয়রা মার্কেট করছে আর আপনি তার হাতে ছেড়ে দিয়ে বসে থাকছেন- এটা হতে দিলে তো হবে না। আপনার নিজস্ব ধ্যান-ধারণা থাকতে হবে। লং টার্মে নিজস্ব তরুণদের এডুকেটেড করতে হবে। তাদের পেছনে ইনভেস্ট করতে হবে।

 

আপনি সব সময় বাংলাদেশকে ব্র্যান্ড তৈরির কথা বলেন। আপনার চিন্তা-ভাবনাটা শুনতে চাই।

মোস্তাফিজ : কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশের অনন্য অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। আমি এখানে জন্মেছি, এই দেশের প্রতি অটোমেটিক একটা ভালােবাসা কাজ করে। বেশ কিছুদিন আগে মহামায়া লেক-এর একটা ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছিলাম। মেইল, ফেসবুকে প্রায় দুই হাজার মানুষ জানতে চেয়েছে এটা কোথায়? বিভিন্ন দেশের কথা বলে যখন বললাম এটা চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ের ‘মহামায়া লেক’ তখন এত সুন্দর জায়গা যে এ দেশে আছে তা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। আমাদের ভালাে ব্যবস্থাপনা নেই। অথচ থাইল্যান্ড, কেরালায় একটা নদী বা সিঙ্গাপুরের একটা খাল, তারা কী একটা আয়োজন করে সেটিকে বিখ্যাত করে ফেলে। বাংলাদেশে যে এত ভালাে ভালাে জিনিশ আছে সেটি আমরা জানিও না। বিশেষ করে মেধাবী তরুণরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ বলে মনে করি। আর বাংলাদেশ নিজস্বতা নিয়ে না দাঁড়াতে পারলে আগামী দিনে আর সস্তা শ্রমের কথা বলে লাভ হবে না।

 

আপনার ম্যাগাজিন ও প্রদর্শনীর আয়োজন নিয়ে বলুন।

মোস্তাফিজ : ম্যাগাজিন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ডেনিম টাইমস’। আমি এর প্রধান সম্পাদক। ইউরোপে আরো চার জন সম্পাদক আছেন। বছরে তিনবার বের হয়। এটি অলাভজনক একটা প্রতিষ্ঠান। কোনাে বিজ্ঞাপন নেয়া হয় না। এতে বাংলাদেশে কী হয় তা ইউরোপের লোকজনকে আমরা জানাতে চাই। আর ইউরোপে কী হয় সেটি বাংলাদেশের মানুষকে বলতে চাই। ইন্ডাস্ট্রির হালনাগাদ খবরাখবর ও প্রবণতাগুলো এখানে আমরা শেয়ার করি। এর মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করি আমরা।

আর প্রদর্শনীটা আমার করা। অনেকেই যুক্ত হওয়ায় এটা এখন বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশ্বে ডেনিম নিয়ে যত শো হয় এর মধ্যে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো তৃতীয় অবস্থানে আছে। প্রথমটা কিংপিন্স শো আমস্টারডামে, দ্বিতীয়টা প্যারিসে আর তৃতীয়টা করি ঢাকায়। চার বছর যাবৎ চলছে। মোট আটটি শো হয়েছে এ পর্যন্ত।

 

করপোরেট কালচার চালু করার সুবিধা অসুবিধাগুলো কী?

মোস্তাফিজ : আমেরিকান বা ইউরোপিয়ান করপোরেট কালচার আমাদের দেশে করতে গেলে চলবে না। বাংলাদেশ নিজের স্বকীয়তা নিয়ে চলবে- এটিই বলবো। শ্রমিক-মালিকের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক থাকতে হবে। আমাদেরও দোষ আছে, কোনাে মালিক যদি শ্রমিকদের বলনে আমার কাছে টাকা নেই তাহলে শ্রমিকরা বিশ্বাস করবেন না। কারণ মিথ্যা বলতে বলতে এটা হয়েছে। আমার কারখানায় যদি শ্রমিকদের বলি যে, আমার কাছে এখন টাকা নেই তাহলে সেটি আমার শ্রমিকরা বিশ্বাস করবনি। এ জায়গাটাই হচ্ছে আসল।

 

শিল্প-কারখানায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার আগের যে কোনাে সময়ের চেয়ে বেশি হচ্ছে। দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এ জায়গাটিতে। অদূর ভবিষ্যতে রোবট শ্রমিকের জায়গা নিতে পারে- এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি আপনি গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে কথাও বলেছেন।

মোস্তাফিজ : এটা মানুষের ভুল ধারণা। রোবট এলে চাকরি চলে যাবে সেটা ঠিক নয়। এই যে আমরা কফি খাচ্ছি- যখন কফিটা এলো অনেকে তখন বলেছিলেন কফির কারণে চা বিক্রি কমে যাবে। আসলে তা হয়নি, চা-কফি দুটোই বিক্রি হচ্ছে। রোবট তো নিজের বুদ্ধিতে কিছু করতে পারবে না, মানুষের বুদ্ধিতেই কাজ করবে। এক্ষেত্রে বলা যায়, যত যন্ত্রপাতির উন্নতি হবে, কাজ আরো দ্রুত গতিতে হবে, সেটি নিশ্চয় ভালােই হবে।

 

অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স-এর কারণে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছেন বলে শোনা যায়। এ নিয়ে আপনার মত কী?

মোস্তাফিজ : এটা একদম সত্যি কথা। মার তো খাবেনই। কারণ অ্যাকর্ড-এ যেসব শর্ত দিচ্ছে এগুলো করতে পাঁচ-সাত কোটি টাকা লাগে। আমাদের মতো বড় কারখানাগুলো করে ফেলছে। কিন্তু মাঝারি বা ছোট কারখানাগুলো করবে কীভাবে। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় তারা তো এটা করতে পারবেন না। শ্রমিকের নিরাপত্তা সব জায়গায় একই রকম থাকতে হবে। কিন্তু বাড়তি অনেক বিষয় শর্ত হিসেবে দেয়া হয় যেগুলো আসলে ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোর জন্য বোঝা হয়ে যায়।

 

আপনার কারখানায় শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ, ছুটি-ছাঁটা ও সুবিধাদি নিয়ে বলুন।

মোস্তাফিজ : আমাদের এখানে কাজও বেশি, সুবিধাও বেশি। যেমন- ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার ছিল, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিলে আমি তিন দিন ছুটি দিয়ে দিয়েছি। আমার শ্রমিকদের কোনাে সমস্যা নেই। তারা ছুটি বেশি নিলেও পরে কাজ বেশি করে করবেন। শ্রমিক-মালিকের সম্পর্কের জায়গাতে ভালাে থাকাটাই হচ্ছে আসল।

 

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে আগামী দিনের বাধাগুলো কী?

মোস্তাফিজ : গ্যাসের সমস্যা, পানি কমে আসছে, শ্রমিকের বেতন বাড়বে। অথচ বায়াররা দাম বাড়াবেন না। তা তো কোনাে সময় বাড়াতে চানও না। এসব সমস্যা মোকাবেলায় এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।

 

সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়েও বলুন…

মোস্তাফিজ : সম্ভাবনা অফুরন্ত। সেটিকে কাজে লাগাতে হবে। ধরেন, আপনি ক্রিকেট খেলতে নামছেন, বোলার বল করলো- আপনি চেষ্টা করবেন ছক্কা মারতে বা চার মারতে। যদি চেষ্টা না করেন তাহলে তো রান পাবেন না। তেমনি চেষ্টা করতে হবে, আপডেট থাকতে হবে। তা না হলে ওই বাজার হাতছাড়া হয়ে যাবে।

 

ব্যবসা করতে চান এমন তরুণদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলার থাকে…

মোস্তাফিজ : তরুণ বয়সে ব্যবসায় নামলে যে কত কষ্ট তা ভালাে করে জানি। যেহেতু পদে পদে এগুলো সামাল দিয়েই এ পর্যন্ত এসেছি সেহেতু ধৈর্য নিয়ে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, কাজটা সম্পর্কে বেশি বেশি জানার চেষ্টা থাকতে হবে। একটা মিনিটও বসে থাকা যাবে না। প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। লেগে থাকতে হবে।

মোস্তাফিজ উদ্দিন ও ইয়াসির আরাফাত; ছবি : আসলাম নজরুল

 

আপনার শৈশব-কৈশোর নিয়ে কিছু বলুন…

মোস্তাফিজ : ক্রিকেট খুব ভালাে লাগতো। আকরাম খান-এর খেলা দেখতে যেতাম আর মনে মনে ভাবতাম, ক্রিকেট খেলোয়াড় হবো। সেটি তো আর হলো না!

 

অবসর সময় কীভাবে কাটান?

মোস্তাফিজ : অবসর সময় আর কই পাই! যতটুকু সময় থাকে ততটুকু বই পড়ি, ম্যাগাজিন দেখি, নানান ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করি।

 

পরিবারকে কতটুকু সময় দেন?

মোস্তাফিজ : সময় খুব কমই থাকে। ব্যস্ততা লেগেই থাকে। তবুও যা কিছু করছি এর সব তো পরিবারের জন্যই। চেষ্টা করি যথেষ্ট সময় বের করার।

 

বেড়াতে যাওয়ার জন্য কোন জায়গাটি আপনার পছন্দের প্রথম তালিকায় থাকে?

মোস্তাফিজ : কক্সবাজার সমুদ্রের পাড় (উচ্ছ্বাসভরে)।

 

প্রিয় লেখক কে?

মোস্তাফিজ : হুমায়ূন আহমেদ।

 

প্রিয় সিনেমা কোনটি?

মোস্তাফিজ : টাইটানিক, বহুবার দেখেছি।

 

পছন্দের গাড়ি…

মোস্তাফিজ : গাড়ি-বাড়ি নিয়ে কখনো ভাবা হয়নি। কোনাে রকম চলার মতো হলেই হয়।

 

ধন্যবাদ আপনাকে…

মোস্তাফিজ : আপনাকেও ধন্যবাদ। জবান টিমের জন্য শুভকামনা।