জিরোনোকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সা

জিরোনোকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সা

কাতালান ডার্বিতে সদ্য এ সিজনে লা লিগায় সুযোগ পাওয়া জিরোনাকে বিধ্বস্ত করেছে বার্সেলোনা। ক্যাম্প ন্যূতে তাদের প্রথম (এর আগে ক্যাম্প ন্যূতে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছিলো) প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচটি স্বপ্নের মত শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত হতাশা আর ৬-১ গোলে পরাজয়ের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জিরোনার।

ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় বার্সেলোনার রক্ষণভাগের ভুলকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে গোল করে জিরোনাকে এগিয়ে নিয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ান পোর্তু। তবে বার্সেলোনাকে বেশিক্ষণ পিছিয়ে থাকতে দেয়নি মেসি সুয়ারেজরা। মেসির দেয়া দূর্দান্ত পাসকে গোলে রূপ দিয়ে ৫ মিনিটের মাথায় দলকে সমতায় ফেরায়  বার্সেলোনার উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ।

ম্যাচের শুরুতে বার্সেলোনার রক্ষনের ভুলে একটি গোল পেলেও ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সেলোনার আক্রমণে বেশ চাপে ছিলো জিরোনা। ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় এক আক্রমণ থেকে গোল করেন মেসি আর তার গোলের সুবাদে ৩০ মিনিট শেষে  ২-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। মেসির এ গোলে এ্যাসিস্ট করেছে সুয়ারেজ। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ডি বক্সের একদম সামনেই কৌতিনহোকে বাঁধা দিয়ে বার্সেলোনাকে ফ্রি কিক উপহার দেয় জিরোনার রক্ষণভাগের ফুটবলার বার্নার্ডো। আর সেই ফ্রি কিক থেকে অসাধারণ একটি গোল করেন লিওনেল মেসি। এটি ম্যাচে। মেসির দ্বিতীয় এবং এ সিজনে লীগের ২২তম গোল ছিলো।

বার্সেলোনার মুহুর্মুহু আক্রমণে প্রথমার্ধের আগেই ক্লান্ত বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলো জিরোনার রক্ষণভাগ। তখনও ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হতে ১ মিনিট বাকি হঠাৎ মেসি, কৌতিনহোর সাজানো আক্রমণ থেকে কৌতিনহোর বাড়ানো বলে দলের ৪ র্থ এবং ম্যাচে নিজের ২য় গোলটি করেন লুইস সুয়ারেজ। প্রথমার্ধ শেষ করার আগেই ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছিলো বার্সেলোনা। তাছাড়া ক্যাম্প ন্যূতে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-১ গোলে পিছিয়ে থেকে সমতায় ফেরা জিরোনা কেনো যে কোনো বিশ্বমানের দলের জন্যই প্রায় অসম্ভব।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আগের মত আক্রমণ করে খেলছিলো বার্সেলোনা। তবে  প্রথমার্ধের পর রক্ষণভাগ আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে জিরোনা। লক্ষ্য ছিলো আর গোল না খাওয়া তবে শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনার আক্রমণভাগকে আর সামলে রাখতে পারেনি জিরোনার রক্ষণভাগ। ম্যাচের বয়স যখন ৬৫ মিনিট তখন কৌতিনহো ডি বক্সের বাহির থেকে কোনাকুনি শ্যূটে একটি দৃষ্টিনন্দন গোল করেন। জিরোনার গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পরে বলটি ঠেকানোর চেষ্টা করলেও সেটা তার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠেনি। লা লিগায় এটি ছিলো কৌতিনহোর প্রথম গোল।

ম্যাচের ৭৬ মিনিটে ডেম্বেলের বাড়ানো বল থেকে গোল করে দলের জয়ের ব্যবধান বাড়ানোর পাশাপাশি নিজের হ্যাট্রিক আদায় করে নেন সুয়ারেজ। তার গোলের পর আর কোনো গোল না হওয়ায় ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।

এটি বার্সেলোনার বিপক্ষে জিরোনার তৃতীয় দেখা যার সব কয়টি ম্যাচই হেরেছে তারা তবে এই পরাজয়ের ব্যবধানটি সবচেয়ে বড় ব্যবধান ছিলো।

আজকের ম্যাচে দূর্দান্ত ছিলো বার্সেলোনার  আক্রমণভাগ। প্রথমবারের মত মেসি, সুয়ারেজ, ডেম্বেলে ও কৌতিনহো এক সাথে  একাদশে জায়গা পেয়েছিলো এই ম্যাচে। আজকের ম্যাচে তাদের সবার পারফর্মেন্স ছিলো সন্তোষজনক। ম্যাচে সুয়ারেজের হ্যাট্রিকের পাশাপাশি ছিলো ২টি এ্যাসিস্ট, এছাড়া মেসির ২ গোল ও  ১টি এ্যাসিস্ট, কৌতিনহো ১টি গোল ও ১টি এ্যাসিস্ট এবং ডেম্বেলে ১টি এ্যাসিস্ট করেছেন।

হ্যাট্রিকের পাশাপাশি ২ টি এ্যাসিস্ট করে ৫ গোলে সরাসরি অবদান রাখায় এই ম্যাচে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছে লুইস সুয়ারেজ।

২৫ ম্যাচ শেষে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের এক এ অবস্থান করছে বার্সেলোনা। একই সাথে তাদের অতীতের  লা লিগায় ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থকার রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন করে ৩২ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড করলেন বার্সেলোনা। তাছাড়া ২৪ ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের দ্বিতীয়তে আছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবং ২৫ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।