ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের মে মাস থেকে দেশটির ১৬তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর রাষ্ট্রীয় সফর করেছে পাকিস্তান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, রাশিয়াসহ নানান গুরুত্বপুর্ণ দেশ। অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও ভারতে আসছেন সময়ে সময়ে। এসব সফর দ্বিপক্ষীয় এবং সর্বোপরি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন নতুন সমীকরণ হাজির করে তা আমাদের সবারই কমবেশি জানা। এসব কেতাবি ব্যাপারের মধ্যেও যে জিনিসটি রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের আলাদা করে দৃষ্টিতে পড়েছে সেটি হলাে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে মোদির নজরকাড়া মোলাকাত। কেউ কেউ মোদির ওই বিশেষ ব্যাপারটির নাম দিয়েছে হাগ প্লোম্যাসি (Hug plomacy)। মোটামুটি উল্লেখযোগ্য সব রাষ্ট্রপ্রধানই মোদির উষ্ণ ওই মোলাকাত ‘হজম’ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, নেতানিয়াহুর মতাে কোনাে রাষ্ট্রপতি বিমান থেকে নামছেন আর দু’হাত খুলে হাসিমুখে এগিয়ে আসছেন মোদি। এ রকম দশটি দৃশ্য নিয়ে জবান-এর ফটোফিচার।
বলা হয়ে থাকে, তেলে-জলে মিললেও নাকি ভারত-পাকিস্তান কখনো মেলে না। কিন্তু দেখা গেল নেওয়াজ শরিফ-কে ২০১৫ সালের এক সামিটে বেশ কায়দা করেই জড়িয়ে ধরলেন নরেন্দ্র মোদি। আহা, সবকিছু যদি ছবির মতাে হতাে!
রাশিয়ার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এর সঙ্গে বেশ হাস্যােজ্জ্বল কায়দায় মোলাকাত করছেন নরেন্দ্র মোদি। এ বাঁধন যাবে না ছিঁড়ে!
২০১৭ সালের জুনে নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হয় এই মুহূর্তের বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবিতে দেখা যাচ্ছে হোয়াইট হাউস-এ আমন্ত্রিত মোদি কতই না ভালােবেসে জড়িয়ে ধরলেন ট্রাম্প-কে। তবে ট্রাম্পকে ততটা আগ্রহী দেখাচ্ছে না। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ব্রিকস গঠনসহ নানান মাত্রিক সম্পর্কের প্রতিক্রিয়াও এটি হতে পারে।
অনেকে মনে করতে পারেন, ট্রাম্প আলোচিত বলেই হয়তো ট্রাম্প-এর সঙ্গে এই উষ্ণ মোলাকাত মোদির কিংবা কেউ কেউ বলতে পারেন, হয়তো মোদির শ্বেতাঙ্গপ্রীতি আছে। এই নিন, নিন্দুকের মুখে বালি দিয়ে বারাক ওবামা-কে জড়িয়ে ধরা নরেন্দ্র মোদি।
গত মাসে ভারত সফরে এলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তার আগে ইসরায়েল সফরে গেলে মোদির সঙ্গে সমুদ্রপাড়ে পা মিলিয়ে হাঁটা নেতানিয়াহু-কেও দেখা গেছে। ভারতে এলে মোদির প্রটোকল ভেঙে বন্ধু নেতানিয়াহুকে অভ্যর্থনা যেন একই বৃন্তের দুটি ফুল।
নেতানিয়াহু-র সঙ্গে মানিকজোড় সম্পর্কের আলাপের পর আপনি সামান্য ভিরমি খেতে পারেন। হ্যাঁ, আপনি ঠিক দেখছেন, ফিলিস্তিন সফরে মাহমুদ আব্বাস-কে জড়িয়ে ধরলেন মোদি। প্রমাণ করলেন, ফিলিস্তিনির পক্ষে তিনি আছেন। একেই বলে পররাষ্ট্র নীতি।
কাউকে নরেন্দ্র মোদি হতাশ করেন না, এমনকি মুসলিম হলেও না। এই দেখুন, হৃদয়ের সবক’টা দুয়ার খুলে কীভাবে জড়িয়ে ধরলেন আবু ধাবি-র বিখ্যাত রাজপুত্র শায়েখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে।
সন্ত্রাসবাদ ও পরিবেশ রক্ষার স্লোগান নিয়ে গত বছর জুনে দু’জন দু’জনকে বেশ কাছেই পান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন ও নরেন্দ্র মোদি। আর ছবি তোলার সেটিংটিও নজরকাড়া। ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া গেট এই ভালােবাসার সাক্ষী।
শেষমেশ গত সপ্তাহে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আসতেই বেশ আলাপ ওঠে- মোদির মোলাকাত থেকে বঞ্চিত হবেন ট্রুডো, নাকি মোলাকাতই হবে দু’দেশের নতুন সম্পর্কের দিগন্ত। হ্যাঁ, তরুণ ওই রাষ্ট্রপ্রধানকে হাসিমুখেই বুকে টেনে নিলেন নরেন্দ্র মোদি। মোলাকাতের কূটনীতির জয় হয়েছে, হবেই।