আমজনতার কাছে চেলসি-বার্সেলোনা ম্যাচটি হয়তো এল ক্লাসিকোর মতো মর্যাদা পাবে না। সাধারণের কাছে এটি নেহায়েতই একটি বড় ম্যাচ। কিন্তু চেলসি সমর্থকদের কাছে বিষয়টি সম্পুর্ণই আলাদা। ০৮/০৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি ফাইনালে নরওয়াইন রেফারি টম হেনিং ওভরেবো এর বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সেমি ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিলো চেলসিকে। চেলসির মোট ছয়টি পেনাল্টির আবেদন তিনি নাকচ করে দিয়েছিলেন দ্বিধাহীনচিত্তে। যার খেসারত দিয়ে চেলসি বিদায় নেয় সেমি থেকেই। সেই ম্যাচের স্মৃতি এখনো চেলসি সমর্থকদের মনে জ্বালা ধরায়। যার ফলে বার্সা-চেলসি মুখোমুখি হওয়া মানেই চেলসি সমর্থকদের জন্য বাড়তি একটি উত্তেজনা কাজ করে। যদিও পরবর্তিতে ডি মাত্তেওর দল ১১/১২ মৌসুমে সেমিতে বার্সাকে হারিয়ে নিশ্চিত করেছিলো ফাইনাল। সে আসরে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার খেতাবও লাভ করে চেলসি। কিন্তু এরপরও কি চেলসি সমর্থকদের মন থেকে মুছে গিয়েছে ০৮/০৯ মৌসুমের সে ম্যাচটি?
এক নজরে একটু দেখে নেই সেদিনের বিতর্কিত সে সিদ্ধান্তগুলো।
২৩ মিনিট : ডি বক্সের ভেতরে দানি আলভেস পরিষ্কার ফাউল করেছিলেন চেলসির ফ্লোরেন্ত মালুদাকে। কিন্তু রেফারি পেনাল্টির বদলে বাঁশি বাজান ফ্রি কিকের!
২৬ মিনিট : মাত্র তিন মিনিট পরেই আবারো বঞ্চিত চেলসি। আইভরি কোস্ট তারকা দিদিয়ের দ্রগবাকে বক্সে টেনে ফেলে দিয়েছিলেন এরিক আবিদাল। এবারও নীরব রেফারি। বাজেনি ফাউলের বাঁশি।
৫৫ মিনিট : এবারো দৃশ্যপটে দ্রগবা। ৫৫ মিনিটি দ্রগবাকে কড়া একটি ট্যাকল করেন ইয়া ইয়া তোরে। কিন্তু তিনি বলের বদলে ট্যাকল করার জন্য লক্ষ্যে পরিণত করেন খোদ দ্রগবাকেই। এবারও নিশ্চুপ রেফারি টম ওভারেবো।
৭৮ মিনিট : আনেলকার গতিতে পরাস্ত হয়ে পেছন থেকে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন ইয়া ইয়া তোরে। উহু, এবারো চেলসির নসিবে কিছুই জোটেনি।
৮১ মিনিট : এবার দৃশ্যপটে পিকে। আনেলকার বাড়ানো বল পরিষ্কার হাতে লাগলেও চোখে পরেনি রেফারির। আবারো বঞ্চিত চেলসি।
৯৫ মিনিট : খেলার একদম শেষ মুহুর্তে মাইকেল বালাকের শ্যুট গিয়ে লাগে স্যামুয়েল ই’তোর হাতে। পরিষ্কার সে পেনাল্টির আবেদনেও বধির ছিলেন রেফারি টম ওভরেবো। ম্যাচে ফেরার শেষ সুযোগটুকুও হারায় চেলসি।
সন্দেহ নেই সেদিনের ম্যাচে চেলসিই ছিলো যোগ্য দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য রেফারিং এর নজির এদিন রেখেছিলেন টম ওভরেবো। এখানেই শেষ না। রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের দায়ে দ্রগবা নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিন ম্যাচ, বোসিংওয়া দুই ম্যাচ। এবং চেলসি জরিমানা গুণেছিলো ৮৫ হাজার পাউন্ড।
এ ম্যাচের পর থেকে যতবারই চেলসি-বার্সা মুখোমুখি হয়েছে প্রত্যেকবারই চেলসির খেলোয়াড়-দর্শকদের মাঝে দেখা গিয়েছে একটি বাড়তি কিছু করার তাড়না। আজকেও কি তেমন কিছুই অপেক্ষা করছে? যদি তেমনটি হয়, এটি নিশ্চিত যে ম্যাচটি বার্সার জন্য মোটেও সহজ হবে না।