• মিডিয়া ফিশি, সংবাদ মাধ্যমে যা লেখা হয় তাই নোংরা।
• সংবাদ মাধ্যমের কারণেই ক্রিকেট আটকে আছে।
• নোংরা বলতে গেলে, মিডিয়াতে যেভাবে লেখা হয়। মিডিয়ারও একটা ভুমিকা আছে যা আচমকা ফিশি হয়ে যাচ্ছে। এখন মিডিয়া ফিশি। মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকে আছে কি না সেটাও দেখতে হবে। মিডিয়াতে ভালো খারাপ সবই হবে। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে।
• ও ৫৩ বলে ৯ রান (আসলে ৮) রান করেছে, আমিও দেখেছি। আমারও ক্রিকেট জ্ঞান আছে। ‘৮৩ সালে খেলা শুরু করেছি। অনেক বছর হয়েছে, চুলও পেকে গেছে এখন। কে পারে, কে পারে না, কখন কাকে দরকার, এসব আমরাও বুঝি।
• সংবাদ মাধ্যম বিভিন্ন মত প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।
• আমার পেছনে যদি লেগে থাকা হয়, আমি কোনো দিন ভালো করলেও ভালো হবে না।
• এমনও শুনেছি রাস্তায় গেলে আমাকে মারও খেতে হতে পারে। তো ক্রিকেট খেলার জন্য মার খেলে এটা তো বিব্রতকর আসলে।
এ দেশে আলোচনায় আসা বড় কঠিন কিছু না। আলোচিত কোনো বিষয়ের জন্ম দিতে পারলে তো মারহাবা, না পারলেও ক্ষতি নেই। উক্ত আলোচ্য বিষয়টিকে বিনা বাজহায় বিষোদগার করুন, পত্রিকার শিরোনাম আপনার জন্য বরাদ্দ। প্রথম কাজটি কঠিন বিধায় অধিকাংশকেই হাটতে দেখা যায় বিকল্প পথে। তেমনই পথে হাটা সর্বশেষ ব্যক্তি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, বিসিবির পরিচালক, ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, ঘরোয়া ক্রিকেট লিগের তিনটি দল ও একটি একাডেমির কোচ, নির্বাচক কমিটির সদস্য, জাতীয় দলের ম্যানেজার, টেকনিকাল ডিরেক্টর এবং ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের সহ সভাপতি খালেদ মাহমুদ সুজন। টেকনিকাল ডাইরেক্টরের ছদ্মবেশে কোচের দায়িত্বে নিদারুণ ব্যর্থ সুজন ‘সু’ পরিকল্পিতভাবে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে বর্ম হিসাবে ব্যবহার করেছেন গণমাধ্যমকে। এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা তিনি করেছেন যা আমাদের মনে জন্ম দিয়েছে পাল্টা প্রশ্নের।
🔷 মিডিয়া ফিশি, নোংরা, মিডিয়ার কারণেই ক্রিকেট আটকে আছে। সুজন সাহেব গর্বের সাথে নিজের নামের পূর্বে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক লিখে থাকেন। তার অধীনে জাতীয় দলের হালত কি ছিলো সেটি জানার আগ্রহও জাগে বৈকি। টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন নয় ম্যাচ। জেতা তো দূর কি বাত একটা ম্যাচও ড্র করে দেখানোর ক্ষমতা হয়নি তার। ওয়ান ডেতে টস করতে নেমেছিলেন পনেরো বার। বলাই বাহুল্য, প্রত্যেকটি ম্যাচেই নতমস্তকে মাঠ ত্যাগ করেছিলো টাইগাররা! এহেন ব্যাক্তির নেতৃত্ব লাভই বরং আমাদের কাছে ফিশি ঠেকে। আর সে সময়ের অপরুপ নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয়ে গণমাধ্যম যদি ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো তাহলে আজকের দিনে রঙ্গিন চশমা চোখে গলিয়ে এরুপ অদ্ভুত মন্তব্য করার সুযোগ তিনি পেতেন বলে মনে হয় না।
🔷 মিডিয়া না থাকলে দলের হালত আপনারা কি করে ছাড়তেন তা বহুবারই দেখা গিয়েছে। নির্বাচক প্যানেলে আপনারই সহকর্মী মিনহাজুল আবেদিন শেষ মুহুর্তে লন্ডনের ফ্লাইট ধরে বিশ্বকাপ খেলতে পেরেছিলেন এই মিডিয়ার কল্যাণেই। কিন্তু কিছু জিনিস নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে বলতে আপনি আসলে কি বোঝাচ্ছেন? লঙ্কানদের বিপক্ষে স্পিনিং পিচ বানানোর যৌক্তিকতা নিয়ে মিডিয়ার সমালোচনাটা আপনার নেগেটিভ ঠেকছে? এ জন্য তো খেলোয়াড়দের কাঠগঢ়ায় তুলে দিলেন। পুরো বিশ্বের তাবৎ বিশ্লেষক এমন কি লঙ্কান দলপতি পর্যন্ত যেখানে বিষম খেয়েছে এমন বিচিত্র পরিকল্পনা দেখে, সেখানে অাত্ম সমালোচনা বা আত্মশুদ্ধির পথে না হেটে আপনি হাটলেন বিষোদগারের পথে। আপনার চোখের রঙ্গিন চশমা আপনাকে ধাঁধাঁয় ফেলে দিতে পারে কিন্তু বাকিরা এখনো চোখের মাথা খায়নি যে এ সহজ বিষয়টি বুঝবে না।
🔷 মোসাদ্দেককে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে আপনার ‘৮৩ সাল থেকে লব্ধ ক্রিকেটজ্ঞানের বিশাল এক ফিরিস্তি দিয়েছেন। যে জ্ঞান লাভ করতে গিয়ে শখের কালো কেশ সফেদে রুপ নিয়েছে। চুল সাদা হয়েছে ঠিকই কিন্তু বুঝ কতটা এসেছে তা প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, যাকে পরখ করে আপনি চুলই সাদা বানিয়ে ফেললেন তার বদলে দলভুক্ত বান্দা পুরো টেস্টেই সাকুল্যে খেলেছেন পাঁচ বল, করেছেন এক রান, ক্যাচ ফেলেছেন গোটা চারেক। এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে গিয়ে যদি শখের কেশ সফেদই হয়ে যায় তাহলে বলতেই হয়, অনেক হয়েছে। এবার ক্ষ্যান্ত দেন। আপনার এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সামনেই আরো বিচিত্র কোনো দৃশ্যের জন্ম দেয়ার আগে স্বেচ্ছায়ই বিশ্রাম গ্রহণ করে যৌবন ধরে রাখুন।
🔷 সংবাদ মাধ্যম বিভিন্ন মত প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলেও বলেছেন তিনি। সংবাদ মাধ্যম মত প্রকাশের মাধ্যম, মত প্রতিষ্ঠিত করার না। বরং, বিগত কিছুদিন আগেই আপনারই এক সহকর্মী দল নির্বাচনের যৌক্তিকতা নিয়ে যে মত প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যম তাতে নীরব থাকলে বাবা তুঘলক শতবর্ষ পরে এই বাংলায় পূণরায় ফেরত আসতেন। বরং, সংবাদ মাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণেই দীর্ঘদিন উপেক্ষার পরে রাজ্জাক সদর্পে ফিরছেন জাতীয় দলে। মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহরাও বেঁচে গিয়েছেন আপনাদের খেয়ালী আচরনের হাত থেকে।
আপনার পিছনে লেগে থাকার মতন আদমি ধরণীতে কে আছে বলুন? মানুষ যখন একটা পরিচয়ের সংকটেই লোকচক্ষুর সামনে আসতে বিব্রত বোধ করে সেখানে আপনি একাই দখল করে রেখেছেন দশটি পদ। এই বিষয়টা আপনার কাছে নোংরা বা ফিশি লাগে না? বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল, প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে টেস্টে একশ উইকেট নেয়া মোহাম্মদ রফিক কিংবা সময়ের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক খালেদ মাসুদকে যেখানে হারিকেন দিয়ো খোঁজা লাগে সেখানে যেখানে চোখ যায় সেখানেই আপনার নাম। এটা ফিশি না? কারণ, যাদের নাম নেয়া হলো এরা প্রত্যেকে খেলোয়াড় হিসাবে আপনার চেয়ে কোন মানের ছিলো সেটি বলে লাজে আঘাত করতে চাই না। যদিও সংশয়বাদীরা বলে এ লাজ জিনিসটাকে নাকি আপনারা জাদুঘরে স্থান দিয়ে এসেছেন।
বর্তমান বোর্ড যে কায়দায় নির্বাচনের নামে প্রহসন করে ক্ষমতায় এসেছে সেটি আপনার কাছে নোংরামি লাগেনি? বাস্তবতা হচ্ছে ঘরোয়া আসরে স্থানীয় কোচদের কাছেই যখন নাস্তানাবুদ হন, তখন হাথুরুর মত নিখাদ পেশাদারের সাথে লড়াইয়ে লজ্জাজনক হারটা হজমে আপনার সমস্যা হচ্ছে। সুযোগ দেখেছিলেন, দল ফর্মে, প্রতিপক্ষও প্রায় সমশক্তির; এমতাবস্থায় ফাকাতলে যদি কিছু সাফল্য এসে যায় ক্ষতি কি? পেশাদার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার রাস্তার পাড়ের ক্যাসিনো না, যে বসলাম আর কিছু হয়ে গেলো। দল খারাপ খেলেছে নিরেট সত্য। এর ফলে ফলাফল অনুকুলে আসেনি এটাও সত্য। কিন্তু তাতে টিম ম্যানেজমেন্ট এর কোনোই দায় নেই এটি পাগলেও বিশ্বাস করবে না। আর এ দায় ঢাকতে গিয়ে খেলোয়াড়দের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, মিডিয়ার বিরুদ্ধে অযাচিত বিষোদগার করে নিজের দৈন্যতারই আরো একটি প্রমাণ আপনি দিলেন। এ নোংরামি থেকে বাঁচতে আপনি ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়াতে চান । আপনার এই চাওয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই। একজন অযোগ্য ব্যক্তির নিকট দশটি পদ জিম্মি হয়ে থাকার চেয়ে দশ জন আলাদা মানুষ ভিন্ন চিন্তা নিয়ে ক্রিকেটের কাজে আসলে সেটিই বরং হবে লাভজনক।