রিয়াল পিএসজি ম্যাচ নিজেকে নতুন করে চেনানোর একটা বড় উপলক্ষ এনে দিচ্ছে নাচো-র সামনে। চলতি মৌসুমে হতাশার মধ্যে যেটুকু আশার আলো দেখা গেছে তা অনেকটাই নাচোর কারণে। দলের প্রয়োজনে যে কোনো পজিশনে খেলতে পারদর্শী ওই রক্ষণতারকার ওপর বর্তেছে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার-কে বোতলবন্দি করার দায়িত্ব। সাসপেনশনের খড়গে কার্ভাহাল ছিটকে গেলে জিদান-এর ভরসা ওই স্প্যানিয়ার্ডই।
জিনেদিন জিদানও পূর্ণ আস্থা রাখছেন ওই তরুণ তুর্কির ওপর। ১১ বছরে ব্লাংকোসদের জার্সি গায়ে ১৪৬ ম্যাচ খেলা নাচোর জন্য ওই ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ২৪ বার মাঠে নামলেও এর বেশির ভাগই ছিল প্রথম রাউন্ডের খেলায়। ফলে এবার সুযোগ নিজের যোগ্যতার জানান নতুন করে দেয়ার।
নাচোর প্রশংসা করেছেন প্রতিপক্ষ দলের তারকা ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভাও। তিনি বলেন, ‘নেইমারকে যদি কেউ থামাতে পারেন তাহলে তিনি হবেন নাচো। নাচো ও নেইমার প্রায় সমান গতির। পুরো ৯০ মিনিট একই মনোযোগে কেউ যদি খেলতে পারেন তাহলে তিনি নাচো।’
সন্দেহ নেই, প্রতিপক্ষের এমন প্রশংসা নাচোর আত্মবিশ্বাসের পালে বাড়তি হাওয়া জোগাবে।
মৌসুমে নাচো যেখানে বলা চলে রিয়ালের একমাত্র প্রশংসিত খেলোয়াড় সেখানে দলের কোচ জিদান পার করছেন কঠিন সময়। প্রতিনিয়তই সমালোচকদের সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত জিদান পাশে পেলেন সাবেক সতীর্থ ও রিয়াল কিংবদন্তি গুতি-কে। পিএসজি ম্যাচ নিয়ে করা এক মন্তব্যে গুতি বলেন, ‘মাদ্রিদের জন্য এটিই শেষ সুযোগ। তবে আমি মনে করি, এটি স্বাভাবিক এবং এটিই জিদানের শেষ সুযোগ নয়। আমাদের মনে রাখা উচিত, তিনি রিয়াল-এর হয়ে কী করেছেন। তিনি কথা বলেছেন নেইমার-এর রিয়ালে আগমনের সম্ভাবনা নিয়েই। নিজস্ব ভঙ্গিমাতেই গুতি বলেন, ‘এটি সত্য, নেইমারকে পছন্দ করি। কিন্তু তার আগমনের অর্থ যদি হয় রোনালদো-র বিদায় তাহলে সেটির পক্ষে আমি নেই।’
গুতি উপদেশ দিয়েছেন গোল খরায় ভোগা বেনজেমা-কেও। তিনি বলেন, ‘বেনজেমা-র সব ভুলে যেতে হবে। দর্শকদের দুয়ো, শিস- সব।’
ইতোমধ্যেই মাদ্রিদ বস জিদান একটি আভাস দিয়েছেন পিএসজি-র বিপক্ষের ম্যাচের স্কোয়াড সম্পর্কে।
গোলবারের নিচে নাভাস,
রক্ষণে নাচো, ভারান, রামোস, মার্সেলো
মধ্যমাঠে ক্যাসেমিরো, ক্রুস, মদ্রিচ
আক্রমণে বেল, রোলানদো ও বেনজেমা
যদিও ওই দলটি এ বছর এক সঙ্গে খেলেনি তবুও বিশ্লেষকদের বিচারে এটিই সেরা দল।
শত সমালোচনা সত্ত্বেও বেনজেমাকে দলের রাখার পক্ষে তিনটি যুক্তি দিয়েছে গণমাধ্যম ‘মার্কা’।
এক. বেনজেমার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রেকর্ড : ৯৮ ম্যাচে ৫৬ গোল নিয়ে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ওই ফরাসির অবস্থান ষষ্ঠ।
দুই. রোনালদোর সঙ্গে রসায়ন : লাইন প্রেসিংসে নিজের দিকে প্লেয়ার টেনে এনে বেনজেমা বেশ ফাঁকা একটা জায়গা তৈরি করে দেন সিআর সেভেন-কে। মাত্রই শেষ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা রোনালদোর পূর্ণ ফায়দা নিতে পার্টনার হিসেবে তিনিও চোখ বুজে বেনজেমাকেই চাইবেন।
তিন. সমালোচনার মুখোমুখি হওয়া বেনজেমার জন্য নতুন কিছু নয়। গত বছরও যখন সমালোচকদের কশাঘাতে জর্জরিত হচ্ছিলেন তিনি ঠিক তখনই ম্যাচের ফল নির্ধারক একটি গোলে সহায়তা করে ভূমিকা রেখেছিলেন ফাইনাল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে।
সন্দেহ নেই, এ মৌসুমিটি মাদ্রিদীয় নয়। তবে গুতির প্রকাশ্য সমর্থন, নাচোর ফর্ম ও বেনজেমার অতীতে আশা রাখতেই পারেন ব্লাংকোস সমর্থকরা।