য়্যুভেন্তাস ও টটেনহাম হটস্পারের জমজমাট ম্যাচ ড্র

য়্যুভেন্তাস ও টটেনহাম হটস্পারের জমজমাট ম্যাচ ড্র

ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রাউন্ড অফ সিক্সটিন

য়্যুভেন্তাস- টটেনহাম হটস্পার

য়্যুভেন্তাস স্টেডিয়াম, তুরিন

ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এবারই প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলো ইউরোপের দুই জায়ান্ট ক্লাব য়্যুভেন্তাস এবং টটেনহাম। অতীত অভিজ্ঞতায় জুভরা এগিয়ে থাকলেও টটেনহামের আশা ছিলো নিজেদের সাম্প্রতিক ফর্ম। সব মিলিয়ে জমজমাট একটি লড়াইয়ের প্রত্যাশা ছিলো সাধারণ ফুটবল ভক্তদের মধ্যে। কাউকে হতাশ না করে জমজমাট একটি ম্যাচই উপহার দিয়েছে দুদল। চার গোলের এ ম্যাচটি ছিলো আক্রমণ প্রতিআক্রমণে ঠাসা।

ম্যাচের মাত্র দুই মিনিটেই মারালেম পিয়ানিকের বুদ্ধিদীপ্ত একটি ফ্রি কিক থেকে দারুন এক গোল করে তুরিনকে উৎসবে মাতিয়ে তোলেন গঞ্জালো হিগুয়াইন। মিনিটের কাটা দশের ঘর ছোঁয়ার আগেই ব্যাবধান বেড়ে হয় ২-০। পেনাল্টি থেকে দলকে আবার এগিয়ে নেন হিগুয়াইন। এখানেই যারা ম্যাচের সমাপ্তি দেখেছিলেন তাদের নিয়ে যেন মুচকি হাঁসি হেসেছিলেন পাচেত্তিনো এবং তার শিষ্যরা। দমে না গিয়ে একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তোলো তুরিনের বুড়িদের রক্ষণ। ফল আসতেও দেরি হয়নি। ৩৫ মিনিটে জিজি বুফনের প্রতি সামান্যতম নাওয়াজিশ না দেখিয়ে ব্যবধান কমান ফর্মের তুঙ্গে থাকা এই ফিরিঙ্গি স্ট্রাইকার। এতে যেন আরো তেড়েফুরে ওঠে অ্যালেগ্রির শিষ্যরা। প্রথমার্ধ শেষ হবার আগে আবার আদায় করে নেন পেনাল্টি। হ্যাট্রিকের সামনে দাড়িয়ে এবার হতাশ করেছেন হিগুয়াইন। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-১ গোলে।

দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময়ই চলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে। কখনো রক্ষণ কখনো বা গোলরক্ষকের দৃঢ়তা আটকে যাচ্ছিলো সব প্রচেষ্টা। শেষ পর্যন্ত স্পার্সদের সামনে আসে মুউতজা ঘটানোর এক সুযোগ। আর সেটি ঘটাতে সামান্য কার্পণ্য করেননি ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন। জুভদের পাশবানকে পাশ কাটিয়ে তীব্র রাফতারে নেয়া তার নেয়া মাটি কামড়ানো শ্যুটের কোনো জবাব ছিলো না বুফনের কাছে। ৭১ মিনিটে করা এরিকসনের এ গোলেই ড্র এর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়লো জুভরা। আর স্পার্শরা পেল জয়ের সমান এক ড্র।

পরের লেগে হবে ওয়েম্বলিতে ৭ মার্চ। সন্দেহ নেই ম্যাচটি বেশ সুবিধাজনক অবস্থান থেকেই শুরু করবে স্পার্সরা।

ম্যাচ শেষে জুভ কোচ মাসিমালিয়ানো অ্যালেগ্রি বলেন, “আমরা লন্ডনে ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত (সেকেন্ড লেগ)। আমরা বেশ ভালো শুরু করেছিলাম কিন্তু ছন্দ ধরে রাখতে ব্যার্থ হয়েছি কেননা টটেনহাম খুব ভালো খেলছিলো। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা তাদের কোনো সুযোগ দেইনি, কিন্তু শাস্তি পেয়েছি একটি মাত্র ভুলের। ২-০ তে এগিয়ে যাবার পর আমরা রক্ষণাত্বক খেলার চেষ্টা করিনি, টটেনহাম আমাদের বাধ্য করেছে এটি করতে। তাদের দ্বিতীয় গোলের পর আমরা আরো ভয়ানক রুপে ফিরে এসেছিলাম। কেউ যদি মনে করে থাকেন যে আমাদের ৪-০ গোলো জেতা উচিত ছিলো, আমি মনে করি এটা শুধু এই জন্য যে অতীতে আমরা তাদের উড়িয়ে দিয়েছি। এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা কঠিন এবং সামনে এটি আরো কঠিনই হবে।”

স্পার্স কোচ মারিও পাচেত্তেনি বলেন, “আমরা এখন আরো পরিণত। আজকের খেলাটা এটার আরো ভালো উদাহারণ। প্রথম মিনিটটা আমাদের জন্য কঠিন ছিলো, কিন্তু দল অসাধারণভাবে ফিরে এসেছে। ফুটবলে আপনার ভাগ্যের ছোঁয়া লাগে। ২-১ আর ৩-১ এক জিনিস না (হিগুয়াইন এর পেনাল্টি নিয়ে বলেছেন)। দুই গোলে পিছিয়ে পড়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিলো না। প্রথমার্ধে আমরা আরো ভালো কিছু প্রত্যাশা করেছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা দারুণ খেলেছি এবং আমি মনে করি ড্র একটি একটি ন্যায্য ফল। কিন্তু, কিছুটা আনফেয়ার কারণ, আমরা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশ ভালো ছিলাম।

পাচেত্তিনোর পক্ষে কথা বলছে ম্যাচ স্ট্যাটক্টিস ৬৩% বল পজিশনে রেখে মোট দশটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলো স্পার্সরা। যার ছয়টি শ্যুটই ছিলো অন টার্গেট এবং একটি হয়েছিলো ব্লকড।

ওয়েম্বলি থিকে হাসিমুখে ফিরতে হবে মুউতজা বৈ বিকল্প কোনো রাস্তা আর খোলা নেই অ্যালেগ্রির সামনে।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ: গঞ্জালো হিগুয়াইন (য়্যুভেন্তাস)

এফসি বাসেল-ম্যানেস্টার সিটি

সেন্ট জ্যাকব পার্কে এফসি বাসেলের বিপক্ষে ৪-০ গোলের সহজ জয় তুলে নিয়েছে সিটি। সিটির হয়ে গুনদোগান দুটি, বার্নাড সিলভা একটি এবং আগুয়েরো করেন আরো একটি গোল। প্রথম লেগের এই সহজ জয়ে সিটির কোয়ার্টার অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়।