রিয়ালের জয়, বার্সার ড্র

রিয়ালের জয়, বার্সার ড্র

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভালো ভাবেই প্রস্তুতি শেষ করলো মাদ্রিদ। বার্নাব্যুতে সোসিয়াদাদের বিপক্ষে জয় এলো ৫-২ গোলে। একটি এ্যাসিস্ট সহ হ্যাট্রিক করে জন্মদিনে নিজেকে উপহার দিলেন রোনালদো। অপর ম্যাচে আবারো পয়েন্ট খোয়ালো বার্সা। আগের ম্যাচে বিরুপ কন্ডিশনে এস্পানিওয়ের সাথে ড্র এর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারো হোচট খেল কাতালানরা, এবার প্রতিপক্ষ ছিলো গেটাফে। যদিও, এতে লিগ টেবিলে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এ ম্যাচে রিয়ালের মূল প্রতিপক্ষ সোসিয়েদাদ হলেও পরোক্ষভাবে রিয়ালের লড়াইটায় শামিল ছিলো পিএসজি ও। মৌসুমে শুধুমাত্র এই একটি শিরোপার লড়াইয়েই এখনো টিকে আছে রিয়াল। মাদ্রিদ অধিনায়ক সার্জিও রামোসও সেটি স্বীকার করেছেন অকপটে। তিনি জানান দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল খেলোয়াড়দের ভাবনার অনেকটা জুড়েই ছিলো এমবাপ্পে-নেইমাররা। মনোযোগ চ্যুতির খেসারতও অবশ্য দিয়েছে রিয়াল, দ্বিতীয়ার্ধে দু গোল হজম করে। তা অবশ্য ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। প্রথমার্ধেই ৪ গোল করা রিয়াল ম্যাচ শেষ করেছে দ্বিতীয়ার্ধে আরো একটি গোল করে। পিএসজি ম্যাচটা আসলে কতটা মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে রিয়ালকে তা বোঝা যায় কার্ভাহালের বয়ানেও। তিনি বলেছেন বাস্তবিক অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র সুযোগ মৌসুমটা খালি হাতে শেষ না করার।

রিয়ালের জন্য সবচেয়ে স্বস্তির খবর রোনালদোর স্বরুপে ফেরা। মৌসুমের শুরু থেকেই নিজেকে হারায়ে খুজছিলেন তিনি। ইনজুরি, তার দরুন অফফর্ম মিলিয়ে বত্রিশের রোনালদোকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলেন সমালোচকরা। কিন্তু তেত্রিশে পা দেয়া রোনলাদো হ্যাট্রিক করে জানিয়ে দিলেন তিনি এমন এক গওহর যার দ্যুতি এত সহজেই ম্লান হবার না। বরং যে রোনালদোকে বার্নাব্যুতে দেখা গেল তা পিএসজির ডিফেন্ডারদের শান্তির ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাবে এটা নিশ্চিত।

রিয়ালের জয়ের খবর জেনেই মাঠে নেমেছিলো বার্সা। লিগ দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকা বার্সেলোনা তেমন কোন পরীক্ষা নিরীক্ষার পথে হাটে নি এ ম্যাচে। উচলে চেলসির বিপক্ষে কঠিন ম্যাচ থাকলেও সেটি ভালভার্দের ভ্রু কুচকানোর জন্য যথেষ্ট না। কারণ, চেলসি নিজেই এবার অস্থির এক সময় পার করছে। রিয়ালের জন্য যেখানে পিএসজি ম্যাচ ডু অর ডাই, সেখানে বার্সা নামবে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। তাই, দুটো ম্যাচ হোচট খেলেও এটি খুব একটা বড় অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হবার মত না।

গেটাফের বিপক্ষে পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামলেও গেটাফের রক্ষণ আর নিজেদের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের ব্যার্থতায় মৌসুমে প্রথমবারের মত ক্যাম্প ন্যুতে গোলের দেখা পেল না বার্সা। এটা বলে অবশ্য গেটাফের আক্রমণভাগের নৈপুণ্যও কমে যাচ্ছে না। বরং বার্সার রক্ষণের বেশ ভালো একটি পরীক্ষাই নিয়েছে তারা। ভালভার্দের উড়ে চলা বার্সাকে আটকানোর একটি কৌশল কিন্তু দেখা গিয়েছে এ ম্যাচে। শরীর নির্ভর ফুটবল, সাথে আক্রমণাত্বক ডিফেন্স; এ দুইয়ের যোগ ফলে বারবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো বার্সার স্বাভাবিক ছন্দ।

রিয়াল সোসিয়াদের বিপক্ষেই পিএসজি ম্যাচের জন্য নিজেদের ঝালাই করে নিলেও বার্সার হাতে আরো একটি ম্যাচ আছে চেলসি মহারণের আগে। এ ম্যাচ দেখেই তাই এতটা খুশি হবার সুযোগ নেই। কারণ, নিজেদের ভুল শুধরে পরের ম্যাচেই কক্ষপথে ফিরার ভালো সুযোগ রয়েছে কাতালানদের পক্ষে। চলতি মৌসুমে ভালভার্দের অধিনে বার্সা যেমন খেলছে তাতে এটুকু ভুল যে তারা শুধরে নেবে না, এমনটা ভাবার মানুষ বোধয় খুব কমই আছেন।