শুভ জন্মদিন ড্যাশিংম্যান আতহার আলী খান

শুভ জন্মদিন ড্যাশিংম্যান আতহার আলী খান

২০০৩ সালে ওই মুলতান টেস্টের ঘটনা। অলক কাপালির একটা ক্যাচ নিয়ে মিথ্যা দাবি করছিলেন িপাকিস্তানের উইকেটকিপার রশদ লতিফ। ধারাভাষ্য কক্ষে বসে থাকা ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে বলে ওঠেন, এটি অন্যায়। পাশে বসে থাকা রমিজ রাজা অবজ্ঞাভরে উত্তর দিয়েছিলেন, টিপিক্যাল বাংলাদেশি স্টাইল!

অন্য কেউ হলে হয়তো চুপ করে যেতেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি যে দেশের নামে কোনাে কটু কথা শুনতে রাজি নন! এক মুহূর্ত দেরি না করে রমিজ-কে পাল্টা জবাব দিলেন, ‘অ্যান্ড লতিফ ডিড হোয়াট ইজ টিপিক্যাল পাকিস্তানি স্টাইল।’ কী সাহস নিয়ে জবাবটি দিয়েছিলেন সেদিন ভাবুন একবার!

এমন অনেক অভিজ্ঞতা তার ঝুলিতে। তিনি আর কেউ নন, আতহার আলী খান- ‘দি ভয়েজ অব ক্রিকেট বাংলাদেশ’। ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ সালে মাঝের ২০ বছরেও ওই কণ্ঠস্বর বদলায়নি, বরং পরিণত হয়েছে দিনকে দিন। ক্রিকেটে বাংলাদেশের পথচলা অনেক দিনের হলেও জয়ের সঙ্গে নিত্য সখ্য খুব বেশি দিনের নয়। আতহার আলী কমেন্ট্রি বক্সে বসে ওই সব চাক্ষুষ করেছেন, দেখেছেন উত্থান-পতন! শুরুর দিকে হয়তো পরাজয়ে চুপসে যেতেন, কে জানে কণ্ঠস্বরে বজ্রের শক্তি আহরণ করতেন কি না! ১৯৬২ সালের ১০ ফৈব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্ম নেন ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার ৫৬ বছর বয়সী ওই ড্যাশিংম্যান!

সাকিব ও মুশফিকের সঙ্গে সেলফি নিচ্ছেন আতহার আলী খান

বাংলাদেশের জন্য মাইক্রোফোন হাতে লড়ার আগে লড়েছিলেন ব্যাট হাতেও। ১৯ ওয়ানডে-তে করেছিলেন ৫৩২ রান। ছোট্ট ক্যারিয়ারে গড়পরতা সংগ্রহ। তাকে খেলোয়াড় হিসেবে খুব একটা মনে কেউ না রাখলেও ক্রিকেটে বাংলার স্মৃতির একটি পাতায় অমর ও অদ্বিতীয় তিনি! প্রথম ম্যান অফ দি ম্যাচের কীর্তি!

১৯৯০ সালের শেষ দিন কলকাতার ইডেন গার্ডেনস-এ এশিয়া কাপের খেলায় মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। নির্ধারিত ৪৫ ওভারে শ্রীলংকা তুলছিল ২৪৯ রান। জবাবে নেমে একের পর এক উইকটে হারাচ্ছে বাংলাদশে। কিন্তু আতহার খেলেন ৯৫ বলে ৭৮ রানের দারুণ এক ইনিংস! তবুও ওই ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। অথচ বুক চিতানো সাহসিকতার পুরস্কার পাওয়া আটকেনি আতহারের।

আতহার আলী খান, আপনি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ‘অ্যান্ড দ্যাটস অ্যা ব্রিলিয়ান্ট শট’- আপনার বলা কথাগুলোর মতোই আপনি ব্রিলিয়ান্ট। মাঠের সবুজ ঘাস, ধারাভাষ্য কক্ষের চেয়ার।

হ্যাপি ফিফটি সিক্সথ বার্থডে আতহার…।