ভারতের বিজেপিশাসিত হরিয়ানা রাজ্যে শুক্রবার জুমার নামাজ সেরে ফেরার পথে দুই কাশ্মীরি ছাত্রের ওপর চড়াও হয় প্রায় ১৫ জনের একটি দল। তাদের বেধড়ক মারধর করা হয়। তাদের বাইক আছড়ে ফেলে ভেঙে দেয়া হয় দু’জনের হেলমেটও। ওই দু’জনই হরিয়ানা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের ছাত্র। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও।
ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার মহেন্দ্রগড়ে। ২৩ বছরের আফতাব আহমেদ ও ২২ বছর বয়সী আমজাদ আলী স্নাতকোত্তরের ছাত্র। তাদের বাড়ি কাশ্মীরে। পড়াশোনার জন্য মহেন্দ্রগড়ে থাকেন তারা। শুক্রবারের সাপ্তাহিক জুমার নামাজ শেষ করে সবে নিজেদের গন্তব্যে রওনা হয়েছিলেন ওই দুই কাশ্মীরি ছাত্র। তখনই তাদের পথ আটকায় প্রায় ১৫ জনের একটি দল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই দু’জনকে তারা মারধর করে। তাদের মাথা, হাত ও পায়ে গুরুতর জখম হয়। বাজারের মধ্যে ওই ঘটনা ঘটলেও হামলাকারীদের আটকাতে কেউ এগিয়ে আসেননি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
মহেন্দ্রগড়ের পুলিশ সুপার কমলদীপ গয়াল জানান, তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতােমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আক্রান্ত দুই ছাত্র চিকিৎসাধীন। কেন হামলা করা হয়েছে এ বিষয়ে পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি। কাশ্মীরের বাসিন্দা বলেই তাদের হামলা হয়েছে- এমন মনে করার কোনাে কারণ নেই বলে জানান তিনি।
হামলার শিকার আফতাব বলেন, শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা নামাজ সেরে মোটরসাইকেলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে রওনা হই। কিছুটা যাওয়ার পরই আমাদের পথ আটকিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। বাজারের মধ্যেই লাঠি ও ইট দিয়ে মারধর করা হয়। ভেঙে দেয়া হয় আমাদের দু’জনের হেলমেটও। তবে কেন মারধর করা হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি তারা। হামলাকারীদের চেনেন না বলেও জানান তারা।
ওই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর-কে ট্যাগ করে টুইটও করেন। ঘটনাটির দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টুইটে ট্যাগ করে জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, এই ঘটনা ভয়াবহ। লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদা যে ঘোষণা করেছেন ওই ঘটনা সেটির বিরুদ্ধেই যাচ্ছে।