বাংলাদেশ-শ্রীলংকা রকেট টেস্ট সিরিজ। প্রথম টেস্ট, পঞ্চম দিন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম।
• প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন মুমিনুল হক।
• ইতিহাসের ৬৭তম ব্যাটম্যান হিসেবে ই কীর্তি গড়লেন তিনি।
• জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রতিবারই পঞ্চাশকে একশ’তে রূপ দিলেন মুমিনুল।
• ৯৪; টেস্টে লিটন দাসের সর্বোচ্চ ইনিংস।
প্রথম সেশন
গতকাল দিনের শেষ সেশনে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা। টেস্টের প্রথম দুই দিন চালকের আসনে থাকা বাংলাদেশের জন্য যেটি ছিল কল্পনাতীত এবং লংকানদের জন্য অবিশ্বাস্য এক সুযোগ। চতুর্থ ইনিংসে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে প্রতিপক্ষের হাতে ম্যাচ তুলে দেয়ার রাওয়াইয়্যাত বাংলাদেশের বেশ পুরনো। তাই অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন আশা জাগানিয়া একটি টেস্টের হতাশাজনক সমাপ্তির। কিন্তু হতাশ করেননি মুমিনুল-লিটন। দেখে-শুনে খেলতে থাকেন লংকান বোলারদের। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে নিজের ঘরের মাঠে পরিণত করা মুমিনুল বেশ সহজেই তুলে নেন নিজের অর্ধশতক। অন্যপাশে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রথম ইনিংসে দৃষ্টিকটূভাবে আউট হওয়া লিটন। কোনো উইকেট না হারিয়ে প্রথম সেশনে ১০৬ রান তােলে বাংলাদেশ। লংকানদেন হতাশা উপহার দিয়ে হাসিমুখেই মাঠ ছাড়েন মুমিনুল-লিটন। মুমিনুল অপেক্ষায় ছিলেন একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির কীর্তির সামনে- ৭০ রানে। আর লিটনের অপেক্ষা ছিল অর্ধশতকের। তিনি অপরাজিত ছিলেন ৪৭ রানে।
প্রথম সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, ১৮৭/৩; শ্রীলংকা ৭১৭/৯ ডি.
সেশন হিরো : মুমিনুল হক
দ্বিতীয় সেশন
কাঁধের ওপর চেপে বসা চাপের পাথরটি সরিয়ে এ সেশনে মাঠে নামেন মুমিনুল-লিটন। এর আগে যতবারই চট্টলায় ৫০ রান পেরিয়েছেন প্রতিবারই সেটিকে শতকে রূপ দিয়েছেন মুমিনুল। এর সামান্য ব্যত্যয় না ঘটিয়ে সান্দাকান-এর বলে কাভার পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে একই টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি গর্বের রেকর্ড গড়েন। ইতিহাসের মাত্র ৬৭তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওই কীর্তি গড়লেন তিনি- বাংলাদেশি হিসেবে প্রথম। শ্রীলংকাকে হতাশ করা মুমিনুল-লিটনের ১৮০ রানের জুটি ভেঙেন ডি সিলভা। করুনারত্নের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেন ১০৫ রান। খেলেছেন ১৭৪ বল, চার মাত্র ৫টি, ছয় ২টি। মুমিনুলের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন বার্থডে বয় মাহমুদুল্লাহ। মাহমুল্লাহ-লিটন জুটি অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেনি। নিজের প্রথম শতক থেকে মাত্র ৬ রান দূরে দাঁড়ানো হেরাথ-কে লিটন উড়িয়ে মারতে গিয়ে পরিণত হন পেরেরা-র অসাধারণ এক ক্যাচে। ১৮২ বলের অসাধারণ ওই ইনিংসটিতে ১১টি চার। পরবর্তী সময়টুকু মোসাদ্দেককে নিয়ে নির্বিঘ্নভাবেই পার করেছেন রিয়াদ।
দ্বিতীয় সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, ২৮১/৫; শ্রীলংকা ৭১৩/৯ ডি.
সেশন হিরো : মুমিনুল হক
তৃতীয় সেশন
সেশনের প্রথম বলটিতেই রিয়াদ ৪ মেরে শুরু করলে বেশ জমজমাট একটি লড়াই দেখার প্রত্যাশায় নড়েচড়ে বসেছিলেন সবাই। কিন্তু এখানেই শেষ। বাকিটা সময় রিয়াদ-মোসাদ্দেক মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকলে ড্র মেনে নিতে বাধ্য হন চান্দিমাল। ১০৬ বলে মাত্র ২৮ রানের জুটি গড়া রিয়াদ-মোসাদ্দেকের ধীশক্তির সামনে নতি স্বীকার করা ছাড়া অবশ্য বিকল্প ছিল না লংকানদের। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রিয়াদ আর মোসাদ্দেকের সংগ্রহ ছিল যথাক্রমে ২৮ ও ৮।
তৃতীয় সেশন শেষে স্কোর : বাংলাদেশ ৫১৩, ৩০৭/৫; শ্রীলংকা ৭১৭/৯ ডি.